কলকাতা, 5 মার্চ: 'নয়নের দৃষ্টি হতে ঘুচবে কালো, যেখানে পড়বে সেথায় দেখবে আলো...' ৷ লোকসভা নির্বাচনের আগে 'বাংলাকে বাংলা করে তুলতে' নতুন শপথবাক্য পাঠ সদ্য অবসর নেওয়া বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ৷ আগুনের পরশমণিকে প্রাণে ছুঁয়ে বাংলায় দুর্নীতি মুক্ত আলোক শিখা জ্বালানোর বার্তা দিলেন প্রাক্তন বিচারপতি ৷ কবিগুরুর গানকে পাথেয় করেই শুরু করলেন জীবনের রাজনৈতিক অধ্যায় ৷
রবিবার আচমকাই বিচারপতি পদ থেকে ইস্তাফার কথা ঘোষণা করেছিলেন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ জানিয়েছিলেন, মঙ্গলবার দেবেন সব প্রশ্নের উত্তর ৷ সেই মতো রেখেছেন কথা ৷ সাংবাদিকদের প্রতিটা প্রশ্নের উত্তর, নিজের রাজনৈতিক পথ চলার কথা ঘোষণা করেন প্রাক্তন বিচারপতি ৷ সাংবাদিক বৈঠকের পর অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখা যায় তাঁর বাড়ির ব্যালকনিতে ৷ সেখানে তিনি সাংবাদিক বন্ধুদের উদ্দেশ্যে বলেন, গান গাওয়ার কথা ৷ এরপরেই সকলের সঙ্গে তিনিও গলা মেলান আগুনের পরশমণি গানে ৷
গান শেষে তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, "বাংলাকে বাংলা করে তুলতে হবে, ক্রিমিনালদের হাতে দেওয়া যাবে না ৷" শুধু তাই নয়, খুব শীঘ্রই নির্যাতিতা নারী ও গ্রামবাসীদের সঙ্গে দেখা করতে সন্দেশখালি যাবেন বলে জানান সদ্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ৷ তবে কবে যাবেন তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তিনি জানান, আরও অনেকে আছেন, তাঁদের সঙ্গেই সন্দেশখালির উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন ৷ এর সঙ্গে তিনি বলেন, "শাহজাহানকে পুলিশ অ্যারেস্ট করতে চায়নি। আমাদের কলকাতা বা বেঙ্গল পুলিশ অত্যন্ত দক্ষ। কিন্তু তাঁদের কাজ করতে দেওয়া হয় না। রাজনীতিবিদরা তাঁদের হাত বেঁধে রাখে।" এইদিন প্রাক্তন বিচারপতির মতে সন্দেশখালিতে সিবিআই তদন্ত হওয়াই উচিত ।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিচারপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে নিজের বিজেপিতে যোগদানের জল্পনাকে সত্যি করেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তারপরেই নিজের বাড়িতে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন তিনি। সেখানে নারী দিবস উপলক্ষ্যে সন্দেশখালির মহিলাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, "আমি নারীদের বলব, যারা আপনাদের সম্মান হনন করেন সেই তৃণমূল দুষ্কৃতীদের বাড়ি বা পার্টি অফিসের সামনে লাঠি-ঝাঁটা নিয়ে বিক্ষোভ করুন।"
এমনকি তিনি জানান, সন্দেশখালির মতো ঘটনা বহু জেলায়, বহু গ্রামে রয়েছে ৷ বীরভূম জেলায় যদি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়ন করতে না দেওয়া হয় তাহলে নাকি, ভোট হতেই দেওয়া যাবে না। পাশাপাশি তিনি জনসাধারণের উদ্দেশ্য বার্তা দিয়ে বলেছেন, "শিড়দাঁড়া সোজা রাখুন ৷ বিবেকের কথা শুনুন ৷ না বলতে শিখুন ৷ দেখবেন, যাঁরা দুষ্কৃতী তাঁরা ভয় পাচ্ছেন ৷" তাই শেষে রবি ঠাকুরের কবিতা ধরে বলা যায়, "চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির...নিজ হস্তে নির্দয় আঘাত করি, পিতঃ, ভারতেরে সেই স্বর্গে করো জাগরিত।"
আরও পড়ুন
1. তালপাতার সেপাই! ডায়মন্ডহারবারে দাঁড়ালে লক্ষ ভোটে হারাব; অভিষেককে কটাক্ষ অভিজিতের
2. তৃণমূলের অপমানজনক মন্তব্যই বিজেপিতে যাওয়ার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে: অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
3. 'কেন্দ্রের কাছে ভিক্ষার জন্য হাত পাতবো না'; ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে বিস্ফোরক মুখ্যমন্ত্রী