বাঁকুড়া, 9 সেপ্টেম্বর: প্রায়শই লোকালয়ে ঢুকে পড়ে হাতি ৷ এবার বুনো হাতির লোকালয়ে প্রবেশ আটকাতে বিশেষ কৌশল নিল বন দফতর ৷ বাঁকুড়া উত্তর বন বিভাগের বেলিয়াতোড় ফরেস্ট রেঞ্জের উদ্যোগে লাগানো হল বিশেষ ঘাস ৷ উত্তরবঙ্গ থেকে আনা হয়েছে এই বিশেষ ঘাস ৷ মূলত জঙ্গল এলাকায় লাগানো হচ্ছে এই সমস্ত ঘাস ৷ সঙ্গে হাতিদের খাবার যোগ্য দেশি ফলের গাছ যেমন কলা, কাঁঠাল, পেয়ারা, পেঁপে ইত্যাদিও লাগানো হচ্ছে বেলিয়াতোড় রেঞ্জের জঙ্গলে । এতে খুশি সাধারণ মানুষ । হাতির হানা থেকে রক্ষা পাবেন বলে আশাবাদী তাঁরা ৷
ধনীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা গৌতম কারক বলেন, "বন দফতরের পক্ষ থেকে ঘাস ও ফলের গাছ লাগানো হচ্ছে ৷ এতে হাতি জঙ্গলের মধ্যেই খাবার পেয়ে যাবে আশা করছি । আমাদের গ্রামে হাতি আর আসবে না ।"
হাতির খাবারের জন্য জঙ্গলে বিভিন্ন গাছ লাগানোর উদ্যোগের বিষয়ে বেলিয়াতোড় রেঞ্জ অফিসার মহিবুল ইসলাম বলেন, "বেলিয়াতোড় ফরেস্ট রেঞ্জ এলাকায় 140 হেক্টর জমিতে ঘাস ও ফলের গাছ লাগানো হচ্ছে ৷ এই চাষে গ্রামবাসী ও হাতি উভয়ই লাভবান হবে ৷ হাতির খাবার যোগান দেওয়ার জন্য এই গাছগুলো লাগানো হচ্ছে ৷ যাতে হাতি খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে না চলে আসে ৷ তারা জঙ্গলেই থাকে ৷"
প্রসঙ্গত, বাঁকুড়ার উত্তর বনবিভাগ এলাকার বড়জোড়া রেঞ্জ ও বেলিয়াতোড় রেঞ্জ এলাকায় হাতির করিডোর করা হয় । বেলিয়াতোড় জঙ্গলঘেঁষা যে সমস্ত গ্রামগুলি রয়েছে সেগুলি হাতিপ্রবণ এলাকা । বিভিন্ন সময় দেখা যায়, জঙ্গলের মধ্যে খাবার না-পেয়ে হাতির দল লোকালয়ে ঢুকে পড়ে খাবারের সন্ধানে এবং তার ফলে মানুষের বহু ক্ষতি হয় ।
বাড়িতে তাণ্ডব চালানোর পাশাপাশি হাতির হানায় বহু মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে । কিন্তু কোনওভাবেই দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে দামাল হাতিদের অত্যাচার থেকে মুক্তি মেলেনি বড়জোড়া, বেলিয়াতোড়ের জঙ্গলঘেঁষা গ্রামের আটপৌরে জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত মানুষদের । এবার এই সাধারণ মানুষদের কথা ভেবে এবং বনের মধ্যেই হাতিদের খাবারের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বাঁকুড়া উত্তর বনবিভাগের বেলিয়াতোড় ফরেস্ট রেঞ্জের পক্ষ থেকে । তাই বনবিভাগের এই বিশেষ উদ্যোগ বুনো হাতিদের লোকালয়ে প্রবেশ আটকানোর ক্ষেত্রে কতটা সফল হয় সেটাই এখন দেখার ।