কলকাতা, 22 জুন: ভোররাতে শহর কলকাতায় ফের অগ্নিকাণ্ড। শনিবার ভোট চারটে নাগাদ বিবাদী বাগ এলাকার গার্স্টিন প্লেসের এক বহুতলে আগুন লাগে। ক্রমেই তা ভয়াবহ আকার নেয় ৷ খবর পেয়ে ধাপে ধাপে দমকলের 7টি ইঞ্জিন আসে ঘটনাস্থলে। প্রায় চার ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন আংশিক নিয়ন্ত্রণে আসে। ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর নেই ৷ যদিও এই মুহূর্তে বেশ কিছু পকেট ফায়ারের আশঙ্কা করছেন দমকল কর্মীরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অগ্নিকাণ্ডের পর দমকলে খবর দেওয়া হলেও ইঞ্জিন আসতে অনেকটাই দেরি করে। বহুতলটির তৃতীয় তলে একটি কেমিক্যাল গোডাউন আছে। সেখান থেকে আগুন লাগতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই 20-25টি পরিবারকে সুরক্ষিত জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ।
এলাকার কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠক ওই বহুতলেই থাকেন বলে জানিয়েছেন। স্থানীয়দের উদ্যোগে পরিবারগুলিকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করেন তিনি। কাউন্সিলর বলেন, "ভোর সাড়ে তিনটে-চারটে নাগাদ আগুন লাগে। সকাল প্রায় সাড়ে সাতটা বেজে গেলেও আগুন নিমন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। তিন ঘণ্টার বেশি হয়ে গেলেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বহুতলটির কাছাকাছিই রয়েছে রাইটার্স বিল্ডিং, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, রাজভবন ও হাইকোর্ট। তারপরেও দমকল এত দেরিতে কেন আসল জানি না। বাধ্য হয়ে মেয়রকে ফোন করি। কিন্তু তিনি ফোন তোলেননি।"
স্থানীয়দের বক্তব্য, গার্স্টিন প্লেসের ওই বাড়িটি প্রায় 100 বছরের পুরনো। পুরনো এই বাড়িতে খুব বেশি মানুষের বাস ছিল না। তবে এই অগ্নিকাণ্ডের ফলে যে কোনও মুহূর্তে বাড়ির একটি অংশ ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় দমকলের কর্মীদের আগুন নেভাতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। আগুন নেভাতে ব্যবহৃত হয় ল্যাডার-ও ৷ স্থানীয়দের আরও বক্তব্য, পুরনো বাড়িটিতে রাসায়নিক গুদাম থাকায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় এলাকা। স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয়রা ।
এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু আসতেই তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা ৷ তাঁদের অভিযোগ, যে বিল্ডিংয়ে আগুন লেগেছিল সেখানে তাদের অফিস রয়েছে ৷ মন্ত্রীকে ভিতরে যেতে দেওয়া হচ্ছে যখন তাহলে তাদেরকে কেন দেওয়া হচ্ছে না । তাদের আরও অভিযোগ, বেশ কয়েকবছর ধরেই কেমিক্যাল কারখানা এখানে রয়েছে ৷ তারপরও কোনওরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি । যেখানে আগুন লেগেছে সেখানে কোনও অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থাও ছিল না ৷ বিষয়টি নিয়ে দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু বলেন,"কেমিক্যাল রাখা হয়েছিল কিনা সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে তারপরেই সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে । যদি কেমিক্যাল থাকে সেক্ষেত্রে শাস্তি দেওয়া হবে ৷"