কলকাতা, 8 সেপ্টেম্বর: আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক ছাত্রীর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য ৷ সিবিআই সূত্রে খবর, যেদিন তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়, তার ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগেই চারতলার সেমিনার হলে গায়ে রক্তমাখা অবস্থায় এক ব্যক্তিকে দেখেছিলেন এক নার্স ৷ তিনি দেখেন, ভোর চারটে নাগাদ সেই রক্ত ধুতে ও স্নান করতে হন্তদন্ত হয়ে ওই ব্যক্তি সেমিনার হলের শৌচালয়ে গিয়েছিলেন ৷ ঘটনার পরপরই যে শৌচালয় ভাঙা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছিল ৷
হাসপাতালের ওই নার্সের বয়ান রেকর্ড করেছেন সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিকরা ৷ ওই নার্স জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, গত মাসের 9 তারিখ, অর্থাৎ যেদিন চিকিৎসক ছাত্রীর দেহ উদ্ধার হয়েছিল, সেদিন ভোর চারটে নাগাদ আরজি কর হাসপাতালের চারতলার সেমিনার হলে হন্তদন্ত হয়ে গায়ে রক্তমাখা অবস্থায় ঢোকেন এক ব্যক্তি । সেখানে থাকা কর্তব্যরত নার্সকে তিনি নিজেকে সেই হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসক বলে পরিচয় দেন ৷ এরপর তড়িঘড়ি হাসপাতালের সেমিনার হলের চারতলার শৌচালয়ে ঢুকে তিনি নিজের গায়ে লেগে থাকা রক্ত পরিষ্কার করেন এবং স্নান করেন । এর পরে সেখান থেকে তিনি বেরিয়ে যায় ।
নার্সের দাবি, ঘটনার দিন আরজি কর হাসপাতালের চারতলার সেমিনার হলের শৌচালয়েই ভোররাতে স্নান করেছিলেন ওই ব্যক্তি । সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, ওই ব্যক্তি নিজেকে জুনিয়র চিকিৎসক বলে দাবি করে কর্তব্যরত নার্সকে বলেছিলেন, এক রোগীর চিকিৎসা করার সময় তাঁর গায়ে রক্ত লেগে গিয়েছে । সেজন্যই তিনি স্নান করেছেন । এখানেই রহস্যের গন্ধ পাচ্ছেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা ৷ এরকম কোনও রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে শুধু একজন জুনিয়র চিকিৎসক সাধারণত থাকেন না ৷ তাঁর সঙ্গে একজন সিনিয়র চিকিৎসক ও নার্সও থাকেন ৷ তবে সেদিন ওই ব্যক্তির সঙ্গে আর কারওকে দেখেননি নার্স ৷
সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, নার্স ওই ব্যক্তির নাম জিজ্ঞাসা করলে তিনি তাঁর নাম বলেননি । সেই ঘটনার মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই ওই মহিলা পড়ুয়া চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয় হাসপাতালের চারতলার সেমিনার হল থেকে । এরপরেই রহস্যজনক ভাবে হাসপাতালের চারতলার সেই সেমিনার হলের একাংশ ও সেই শৌচালয়ের দেওয়াল ভেঙে দেওয়া হয় । এই শৌচালয়েই সেদিন ওই ব্যক্তি তাঁর গায়ের রক্ত ধুয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন নার্স ৷ এখানেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা একটা বড় রহস্য দেখছেন । প্রয়োজনে ওই নার্সের সঙ্গে আবারও কথা বলবেন তদন্তকারীরা ।