সোদপুর, 24 সেপ্টেম্বর: আরজি কর-কাণ্ডে তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে প্রথম থেকে ৷ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সোমবার সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দেন পানিহাটির তৃণমূল বিধায়ক নির্মল ঘোষ ৷ এবার নির্যাতিতার পরিবারের বিরুদ্ধেই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন এই তৃণমূল নেতা ৷
নির্মলের অভিযোগ, দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের জন্য নির্যাতিতার মা-বাবা কেউ একবারও বলেননি ! তাঁর কথায়, "সেদিন যদি নির্যাতিতার বাবা বলতেন তাঁর মেয়ের দেহ সংরক্ষণ করতে চান । দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করতে চান । তাহলে রেখে দিতাম । তখন তো এসব কথা একবারের জন্যও উনি বলেননি ।"
তৃণমূল বিধায়কের কথায়, "ঘটনার পরের দিন থেকে এই সমস্ত কথা যাঁদের দিয়ে উনি বলাচ্ছেন, আন্দোলনের রাশ এখন আর তাঁদের হাতে নেই ৷ রাশ এখন সাধারণ মানুষের হাতে ৷ আর তাঁরা চাইছেন ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার দোষীদের শাস্তি ৷"
নির্যাতিতার পরিবার কী কারও কথা শুনে এসব করছেন ? এই ঘটনার পিছনে রাজনীতির লোকেরা রয়েছেন ? এর জবাবে বিধায়ক নির্মল ঘোষ বলেন, "আমি এসব নিয়ে বলতে চাই না । ওরা যেটা ভালো বুঝছেন, সেটাই করছেন । এটুকু বলতে চাই, আমার বিরুদ্ধে যত অভিযোগই উঠুক, আমি আমার সুবিচারের দাবি থেকে সরছি না । সকলে সরে গেলেও আমি আমার দাবিতে অনড় থাকব । প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে হাতজোড় করে সুবিচার চাইব ।"
ডাকা না সত্ত্বেও নিজে থেকেই নির্যাতিতা চিকিৎসক তরুণীর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বলে অভিযোগ তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে । সেই অভিযোগের ব্যাখা দিতে গিয়ে নির্মল ঘোষ বলেন, "আমি কর্তব্য পালন করেছি মাত্র । সেই দিন ঘটনাটি জানার পর হাসপাতালে যাওয়ার পর মৃতদেহের সঙ্গে ওদের বাড়ি ছুটে গিয়েছি । আবার ওর বাবা-মা এবং পরিবারের লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে পানিহাটি শ্মশানে গিয়েছি ।"
সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, "শ্মশানে শুধু আমি একা ছিলাম না । বহু সাধারণ মানুষ, কাউন্সিলর, এমনকী পুলিশের লোকও ছিল । 'ফ্রি' পরিষেবা আমি সাধারণত দিয়ে থাকি না । ওটা দেওয়া কাউন্সিলরের কাজ । কাউন্সিলর কী করেছেন, না করেছেন, তার তো তথ্যপ্রমাণ রয়েছে ।"
উল্লেখ্য, 9 অগস্টের রাতে পানিহাটি শ্মশানে নির্যাতিতার দেহ সৎকারের সময় বিধায়ক নির্মল ঘোষের সক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে ৷ অভিযোগ করেন খোদ নির্যাতিতার পরিবারের লোকজন ৷ সোমবার বিকেলেও নির্যাতিতার দেহের ভিআইপি 'ট্রিটমেন্ট' নিয়ে মুখ খুলেছিলেন তাঁর বাবা ।
সোমবার রাতে নির্মলের বাড়িতে দেখা করতে যান ব্যারাকপুরের তৃণমূল সাংসদ পার্থ ভৌমিক এবং জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম ৷ পানিহাটির বিধায়কের পাশে দাঁড়িয়ে পার্থ ভৌমিক বলেন, "কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে এলাকার বিধায়ক হিসাবে নির্মল ঘোষের সেখানে যাওয়াটা সামাজিক কর্তব্য । সামাজিক কর্তব্য পালন করার জন্য যদি সিবিআই ডাকে, তাহলে তার জন্য দলের সব বিধায়ক সিবিআই-এর মুখোমুখি হতে রাজি । সিবিআই নির্মল ঘোষকে কেন ডেকেছে, সেটা সকলেই বুঝতে পারছে ।"