সন্দেশখালি, 24 ফেব্রুয়ারি: উত্তেজনা যেন কিছুতেই থামছে নান সন্দেশখালিতে। 144 ধারা জারি করেও গ্রামবাসীদের ক্ষোভ কিছুতেই বাগে আনা যাচ্ছে না। শনিবার আবারও নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল বেড়মজুরে। তৃণমূল নেতা অজিত মাইতিকে মারধরের পর এবার বেড়মজুরের হালদারপাড়ায় শাসকদলের নেতার পরিবারকে তাড়া করল ক্ষুদ্ধ গ্রামবাসীদের একাংশ। বিনয় সর্দার নামে শাহজাহান-ঘনিষ্ঠ ওই তৃণমূল নেতার পরিবারকে মারধরের চেষ্টাও করা হয় বলে অভিযোগ। কোনওক্রমে জনরোষ থেকে পালিয়ে বাঁচেন তৃণমূল নেতার পরিবারের সদস্যরা।
ক্ষুদ্ধ গ্রামবাসীদের অভিযোগ, "শাহজাহানের দোসর এই তৃণমূল নেতা জোর করে গরিব মানুষের জমি ও বাড়ি কেড়ে নিয়ে তা তুলে দিয়েছে সিরাজউদ্দিনের হাতে। প্রতিবাদ করলেই কপাল জুটত মারধর এবং হুমকি। শাসকদলের নেতা হওয়ার কারণে পুলিশও কোনও ব্যবস্থা নিত না। উলটে, শাহজাহানের দলবলের সঙ্গে মীমাংসা করে নেওয়ার পরামর্শ দিতেন তারা।" এতেই এদিন আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন গ্রামবাসীরা। সূত্রের খবর, কাটাপোল বাজারে পুলিশের খোলা সহায়তা কেন্দ্রে এদিন ওই তৃণমূল নেতার জমি দখল সংক্রান্ত অভিযোগ জানাতে যান কয়েকজন গ্রামবাসী। তখনই রাস্তার পাশে খোলা জায়গায় তৃণমূল নেতার বাবা ও ভাইকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তাঁরা।
তেড়ে গিয়ে বাড়ি ও জমি দখলের অভিযোগ করতে থাকেন ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। পালটা প্রতিবাদ করলে মারধরের চেষ্টা করা হয় নেতার পরিবারের সদস্যদের। সেখান থেকে পালিয়ে কোনওরকমে বাঁচেন তৃণমূল নেতা বিনয় সর্দারের পরিবারের সদস্যরা। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছন এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার। তাঁর নির্দেশ পুলিশ এই ঘটনায় দু'জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এদিকে, হালদারপাড়ার ঘটনার রেশ কাটতে না-কাটতে বেড়মজুরের মাঝেরপাড়া এবং পাত্রপাড়ায় শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারের দাবিতে ঝাঁটা, লাঠি নিয়ে পথে নামেন আদিবাসী মহিলারা।
কেন সন্দেশখালির 'ফেরার' তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান এবং তাঁর ভাই সিরাজউদ্দিনকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না, তা নিয়ে পুলিশের তর্কাতর্কি বাঁধিয়ে দেন মহিলারা। চলে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও। যা ঘিরে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় সেখানেও। এখনও শাহজাহান গ্রেফতার না-হওয়ায় কার্যত ক্ষোভে ফুঁসছেন গ্রামের মহিলারা ৷ শুধু গ্রেফতার করলেই চলবে না, পলাতক শাহজাহানের কড়া শাস্তির দাবিতেও এদিন সরব হয়েছেন আদিবাসী মহিলারা। অন্যদিকে, সন্দেশখালির পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে 144 ধারা করার পাশাপাশি পুলিশের তরফে গ্রামে গ্রামে রুটমার্চ চলছে ঠিকই। কিন্তু, তারপরেও জনরোষ সামাল দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে পুলিশ প্রশাসনকে।
আরও পড়ুন: