সন্দেশখালি, 3 মার্চ: আদালতের অনুমতি নিয়ে অবশেষে রবিবার সন্দেশখালি পৌঁছল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম। এদিন সন্দেশখালি এবং ন্যাজাট থানা এলাকার মোট 11টি জায়গায় নতুন করে 144 ধারা জারি করেছে প্রশাসন। যা ঘিরে চলছে আবার জোর চর্চা। সন্দেশখালিতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে দিল্লি থেকে এদিন সকালেই দমদম বিমানবন্দরে এসে পৌঁছন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের ছয় সদস্য।
এরপর বেলা গড়াতেই টিমের সদস্যরা রওনা হন সন্দেশখালির দিকে। তার আগে ধামাখালি বাজারে তাঁদের অনুমতির কপি এবং বিভিন্ন কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেন কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিকরা। হাইকোর্টের শর্ত মেনে এদিন পুলিশের কাছে মুচলেকাও দিতে হয় ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের সদস্যদের। তারপরই যাওয়ার ছাড়পত্র মেলে বলে জানা গিয়েছে । সূত্রের খবর, এদিন ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের নেতৃত্বে রয়েছেন পটনা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি নরসিমা রেড্ডি।
প্রতিনিধি দলে চারজন পুরুষ ও দু'জন মহিলা রয়েছেন। মূলত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের ছয় সদস্য সন্দেশখালির উপদ্রুত মাঝেরপাড়া, নতুনপাড়া এবং নস্করপাড়া- এই তিনটি এলাকা পরিদর্শন করেন। কলকাতা হাইকোর্ট থেকে যে ছাড়পত্র মিলেছিল তাতেও ছিল এই তিনটি এলাকার নাম। এরপরই এদিন সন্দেশখালির ওই তিনটি উপদ্রুত এলাকায় গিয়ে সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের সদস্যরা। সাধারণ গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে কোথায়ও কোনও মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে কি না, সেই বিষয়টিও এদিন সরজমিনে চাক্ষুষ করে দেখেন তাঁরা।
সেখান থেকে উঠে আসা বিভিন্ন তথ্যও নথিভুক্ত করা হয়। ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের এক সদস্য বলেন, "সন্দেশখালির পরিস্থিতির গুরুত্ব বিচার করেই তাঁরা এখানে পরিদর্শনে এসেছেন।" এখান থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তা রিপোর্ট আকারে সংশ্লিষ্ট দফতরে জমা দেওয়ার কথা কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিদলের। এদিকে, ধামাখালি ঘাট থেকে প্রথমে একটি যাত্রীবাহী নৌকা ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের সদস্যদের জন্য বরাদ্দ করা হয় অভিযোগ। এনিয়ে সমালোচনা শুরু হতেই পরে অবশ্য পুলিশের তরফ থেকে একটি সুসজ্জিত লঞ্চ বরাদ্দ করা হয় তাঁদের জন্য।
তাতে চেপেই শেষে সন্দেশখালি যান কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ছয় সদস্য। অন্যদিকে, জাতীয় এসসি, জাতীয় এসটি, জাতীয় মহিলা এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মতো দিল্লির এই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের সদস্যরা পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসনের কোনও সুপারিশ করেন কি না, এখন সেটার দেখার। প্রসঙ্গত, এর আগে 25 ফেব্রুয়ারি সন্দেশখালি যাওয়ার অনেক আগেই ভোজেরহাটে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমকে আটকে দেয় পুলিশ। সেই সময় 144 ধারা জারির যুক্তি দেখিয়ে সেখান থেকে আর এগোতে দেওয়া হয়নি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যদের।
যদিও বাধা অতিক্রম করার চেষ্টা হলে পুলিশ 'প্রিভেনটিভ অ্যারেস্ট' করে লালবাজারে নিয়ে আসে প্রতিনিধিদলের সদস্যদের। পুলিশের এই অতিসক্রিয়তা নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম। আদালত থেকে অনুমতি মিলতেই রবিবার তাঁরা পৌঁছে গেলেন সন্দেশখালিতে। তবে, ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের সন্দেশখালি যাওয়ার দিনই মোট 11টি জায়গায় নতুন করে 144 ধারা জারি হওয়ায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন কিন্তু থেকেই গিয়েছে।
আরও পড়ুন: