কলকাতা, 9 জুলাই: অস্ত্রোপচারের পরও চোখের দৃষ্টি ফিরে না পাওয়ায় কাঠগড়ায় গার্ডেনরিচের চোখের হাসপাতাল ৷ প্রায় 20 জন এই ঘটনায় ভুক্তভোগী ৷ নতুন করে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের আরআইও বিভাগে তাঁদের চিকিৎসা হলেও কাটল না বিপত্তি ৷ এখনও তাঁরা পুরোপুরি দেখতে পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ ৷ হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, আংশিকভাবে দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবেন তাঁরা ৷ এদিকে মঙ্গলবার পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, এখনও চোখে দেখতে পাচ্ছেন না রোগীরা ৷
মেটিয়াবুরুজের বাসিন্দা আব্দুল রহিমের দাদা আব্দুল রহমান ভর্তি হয়েছিলেন গার্ডেনরিচের চোখের হাসপাতালে ৷ তাঁর বাম চোখে দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণভাবে চলে যায় ৷ তারপর তাঁকে নিয়ে আসা হয়েছিল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের আরআইও বিভাগে ৷ যদিও সেখানে চোখের কোনওরকম উন্নতি হয়নি বলে অভিযোগ রোগীর ভাই আব্দুল রহিমের।
তিনি বলেন, "অস্ত্রোপচারের পর দাদাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে হাসপাতাল থেকে। আমাদের বলা হচ্ছে যা করার তাঁরা করে দিয়েছেন, আর কিছু করার নেই। কিন্তু আমার দাদা এখনও চোখে দেখতে পাচ্ছেন না ৷ আমরা গরিব মানুষ ৷ আমাদের পক্ষে বেসরকারি হাসপাতালে যাওয়া সম্ভব নয় ৷ ফলে সরকার বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসার খরচ বহন করুক ৷ নয়তো এই হাসপাতালেই স্পেশালভাবে আমাদের রোগীর চিকিৎসা করা হোক ৷ যদি না পারে আইনের পথে হাঁটতে হবে ৷"
অপরদিকে মহম্মদ রফিক মণ্ডলের ছেলে ইয়াসিন মণ্ডলের অভিযোগ, তাঁর বাবার চোখ ঠিক হয়নি উপরন্তু ওষুধ কিনতে গিয়ে 3 হাজার 400 টাকা খরচ হয়েছে ৷ তিনি বলেন, "সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা বিনামূল্যে পাওয়া যায় ৷ কিন্তু আমার বাবার অস্ত্রোপচার চলাকালীন আমায় ডেকে বলা হয়েছে একটা ওষুধ কেনার জন্য ৷ যেটা আমি বাইরে থেকে 3 হাজার 400 টাকা দিয়ে কিনে নিয়ে আসি ৷ এরপরেও আমার বাবার চোখ ঠিক হয়নি ।"
তিনি আরও বলেন, "আজ আবারও বলা হয়েছিল একটি ইনজেকশন দেওয়ার কথা। কিন্তু আমার বাবার অ্যাজমা রয়েছে ৷ অন্যদিকে একাধিক ইনজেকশন দিয়েও বাবার চোখ ঠিক হচ্ছে না। তাই আমি ছাড়িয়ে নিয়ে এসেছি হাসপাতাল থেকে ৷ কোনও দলের নেতা-মন্ত্রী এই সময় আমাদের পাশে এসে দাঁড়াননি, ফলে আমরা সরকারের কাছ থেকে আর কিছুই আশা করতে পারছি না ৷"
এই বিষয় নিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, "বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করতে গেলেও সমস্যা দেখা যায় ৷ কিন্তু কেন এটা হল, তার তদন্ত আমরা করছি ৷ সবাই যাতে দৃষ্টি ফিরে পান, তার চেষ্টা করছি। কিন্তু কেন টাকা লাগল, সেটা জানি না। এই বিষয় আমরা খোঁজ নেব ৷"