পেট্রাপোল, 20 জুলাই: ছাত্র আন্দোলনে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে পড়শি বাংলাদেশে । তারই প্রভাব পড়ল ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যে । উত্তর 24 পরগনার পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বন্ধ রফতানি ৷ ধীর গতিতে চলছে আমদানি ৷ প্রায় বন্ধের মুখে যাত্রী পারাপারও । শনিবার সকাল থেকে আর পাঁচটা দিনের থেকে এমনই ভিন্ন ছবি ধরা পড়েছে এই স্থল বন্দরে । আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা ।
পেট্রাপোল বন্দর সূত্রে খবর, বাংলাদেশে অশান্তির জেরে সে দেশে বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা । ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে কার্যত পেট্রাপোল বন্দরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন । অন্যদিকে অশান্তির কারণে গাড়ি পাঠানোও ঝুঁকিপূর্ণ । তাই অনান্য দিনের তুলনায় এ দিন পেট্রাপোলের ছবি সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিল । যাত্রী টার্মিনালে যাত্রীর সংখ্যা ছিল হাতে গোনা । লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল পণ্যবাহী গাড়ি । জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ সীমান্ত পারাপার করেননি ৷
বাংলাদেশ থেকে আগত এক ভারতীয় জানান, বাংলাদেশের অবস্থা এতটাই খারাপ যে সেখানে গাড়ি চলছে না । খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বেরোচ্ছেন না । তাঁর ভিসা শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে তাঁকে দেশে ফিরতে হয়েছে । গাড়ি না পেয়ে বাইকে করে তিনি বেনাপোল সীমান্তে পৌঁছেছেন ।
অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে আসা মানুষেরা জানাচ্ছেন, তাঁরা কেউ ভারতে এসেছিলেন ঘোরার জন্য, কেউ বা চিকিৎসার জন্য । ভারতে আসার পর অশান্ত হয়েছে বাংলাদেশ । পরিবারের সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ করতে পারছেন না । দেশের কী অবস্থা, তাও তাঁরা বুঝে উঠতে পারছেন না । পেট্রাপোল সীমান্তে এসে জানতে পেরেছেন বাংলাদেশে কারফিউ জারি হয়েছে । সীমান্ত পার করার পর কী করে তাঁরা ঘরে ফিরবেন, তা নিয়ে উৎকণ্ঠায় রয়েছেন বাংলাদেশের ওই নাগরিকরা ।
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, "প্রতিদিন পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে তিনশো থেকে সাড়ে তিনশো পণ্যবাহী গাড়ি যাতায়াত করে । কিন্তু বাংলাদেশের অশান্তির কারণে আজ সকালে 30 থেকে 35টি গাড়ি বাংলাদেশে গিয়েছে । তারপরে, বন্ধ হয়ে গিয়েছে রফতানি । ধীরগতিতে চলছে আমদানি । যাত্রী পারাপারও অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক কম । এভাবে চলতে থাকলে আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে ।"
কার্তিক চক্রবর্তী আরও জানান, তাঁদের কাছে নির্দেশ এসেছে ব্যবসা বন্ধ রাখার ৷ পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত ব্যবসা বন্ধ থাকবে । কিন্তু কবে থেকে ফের ব্যবসা চালু হতে পারে, তা সুনির্দিষ্ট করে তাঁরা বলতে পারছেন না ।
যাত্রী পারাপার কমে যাওয়া এবং রফতানি বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন পেট্রাপোল বন্দরের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা । গাড়ির চালকেরা জানিয়েছেন, সকাল থেকে পেট্রাপোল বন্দরে যাত্রী সংখ্যা অনেকটাই কম । ফলে ভাড়া না পেয়ে পেট্রাপোল বন্দরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তাঁরা । এভাবে চলতে থাকলে তাঁদের সংসার চালানোই দায় হয়ে পড়বে । আর্থিক সংকটের আশঙ্কা করছেন ছোট ব্যবসায়ীরাও ।