কলকাতা, 27 ডিসেম্বর: আরজি কর হাসপাতালের নরকীয় হত্যাকাণ্ডের ময়নাতদন্তে মানা হয়নি নিয়ম । দিল্লি এইমস-এর রিপোর্টে এবার এমনই তথ্য উঠে এল ৷ ইতিমধ্যেই, সিবিআই-এর কাছে পৌঁছে গিয়েছে সেই রিপোর্ট।
ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ আদর্শ কুমারের নেতৃত্বে 11 জন সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল 'মাল্টি ইনস্টিটিউশনাল মেডিক্যাল বোর্ড' একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছেন । 8 পাতার ওই রিপোর্টে রয়েছে 9 টি উল্লেখযোগ্য পয়েন্ট । ময়নাতদন্তের ভিডিয়োগ্রাফি-সহ একাধিক তথ্য খতিয়ে দেখে নতুন রিপোর্ট তৈরি করেছে বিশেষ এই দল । রিপোর্টে বলা হয়েছে, ময়নাতদন্ত করার সময় নিয়ম বহির্ভূত একাধিক কাজ হয়েছে ।
নয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, শ্বাসরোধ করেই খুন করা হয় আরজি করের তরুণী চিকিৎসককে । তাঁর মৃত্যু হয়েছিল 8 অগস্ট রাত 12টা থেকে ভোর 6টার মধ্যে । তরুণী চিকিৎসকের সঙ্গে ধর্ষণেরও প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে ৷ তাঁর হাইমেন পর্দা ছেঁড়া ছিল বলে উল্লেখ রয়েছে রিপোর্টে ৷ সেই সঙ্গে, তরুণী চিকিৎসকের সারা শরীরে কামড়ের দাগের সঙ্গে লালার নমুনা পাওয়া গিয়েছে । সেই নমুনার সঙ্গে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের লালা সম্পূর্ণ মিলে গিয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে বিশেষজ্ঞদের এই রিপোর্টে ৷
তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় একাধিক ব্যক্তির যুক্ত থাকার অনুমান বাতিল করেছে নয়া এই রিপোর্ট ৷ রিপোর্ট অনুযায়ী, নৃশংস এই ঘটনা একজনের পক্ষেও ঘটানো সম্ভব । তবে তাঁকে ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে । তাঁর শরীরের সমস্ত আঘাতের চিহ্ন খুনের আগে । সেই সঙ্গে, তাঁর যোনিতে ব্যাপক পরিমাণে বল প্রয়োগ করারও প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে । তবে এই বল প্রয়োগ কোনও পুরুষাঙ্গ কিংবা অন্য কোনও ভোতা জিনিসেরও হতে পারে বলে উল্লেখ রয়েছে রিপোর্টে ।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ময়নাতদন্তের সময় বহু মানুষ ঘরে উপস্থিত ছিলেন। এমনকী, অনেকেই তাদের ব্যক্তিগত ফোনে ভিডিয়ো এবং ছবি তুলেছেন। ময়নাতদন্তের ভিডিয়োগ্রাফি থেকে এই সমস্ত তথ্য পাওয়া গিয়েছে । যদিও তরুণী চিকিৎসকের শরীরে কোনও বীর্য পাওয়া যায়নি । তাহলে ঠিক কী হয়েছিল ওই তরুণী চিকিৎসকের সঙ্গে ? এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের রিপোর্টে বেশকিছু সম্ভাবনার কথা তুলে ধরা হয়েছে । পুরুষাঙ্গের বদলে অন্য কোনও অঙ্গ শরীরে প্রবেশ করানো হলে এই ধরনের সম্ভাবনা থাকে ।
আবার, ভোতা কোনও জিনিস ওই তরুণী চিকিৎসকের শরীরে প্রবেশ করানো হলেও এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে । সেই সঙ্গে, ধর্ষণের সময় কনড্রোম ব্যবহার করা হলেও এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানিয়েছে রিপোর্ট ৷ সবশেষে বলা হয়েছে, ওই তরুণী চিকিৎসকের চোখে চশমা এবং দাঁতে ব্রেস লাগানো ছিল।