কলকাতা, 8 অগস্ট: থেমেছে লড়াই ৷ বৃহস্পতিবার সকালে জীবনাবসান হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ৷ বালিগঞ্জের বাড়িতেই তিনি দেহ রাখেন। সঙ্গে রেখে গেলেন একটি অধ্যায়। 2000 থেকে 2011 সাল পর্যন্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কর্মক্ষেত্র ছিল মহাকরণ। তারও আগে অন্য দফতরের মন্ত্রী হিসেবে এখান থেকেই যাবতীয় কাজ সামলাতেন ৷ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রয়াণের খবরে মহাকরণের চার পাশে স্বজন হারানোর বেদনা। গ্রাউন্ড জিরো ঘুরে দেখল ইটিভি ভারত ৷
এই ঘরের ভিতর আগেকার চেয়ার-টেবিল বা কম্পিউটার এবং সেই বুদ্ধদেববাবুর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন কিংবা ল্যান্ড ফোন আর কিছুই নেই।
বর্তমানে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ওই বিশেষ ঘরের বাইরে নীল রংয়ের পলিথিনে ঢাকা ৷ ভিতরে কাজ করছেন মিস্ত্রিরা। তখন, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য প্রথমে মহাকরণে এসেই লিফটে করে তিনি উঠে পড়তেন উপরে এবং সোজা করিডোর তিনি পায়ে হেঁটে ঢুকতেন নিজের ঘরে।
সেই সময় থাকা কলকাতা পুলিশের একাধিক কর্মী এখনও মহাকরণের নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলান ৷ ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে না-চাইলেও তাঁরা বলেন, "বুদ্ধবাবুর মহাকরণে ঢোকার একটা বিশেষ স্টাইল ছিল। সামনের সারিতে কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক সার্জেন্টরা থাকতেন ৷ ঠিক পিছনেই থাকত তাঁর সাদা রঙের অ্যাম্বাসাডর। সেই গাড়িতে করেই মহাকরণের একদম এন্ট্রি পয়েন্টে আসতেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী। পরনে থাকতো সাদা ধুতি-পাঞ্জাবি এবং মাথায় সাদা চুল। এসেই পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে সটান উঠে পড়তেন উপরে। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মহাকরণে ঢোকার পরপর দেখা মিলত রাজ্যের হেভিওয়েট তৎকালীন নেতাদের নেত্রী এবং আমলাদের।"
এই মহাকরণের ভিতর থেকেই রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য নিয়েছিলেন, একাধিক বড় সিদ্ধান্ত ৷ সরকার কীভাবে আরও ভালোভাবে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করবে তাও ঠিক হয়েছে এথান থেকেই। সেই সব আজ একেবারেই আবছা। নেই বুদ্ধদেববাবুর সেই ঘর ৷ নেই প্রেস কর্নার ৷ সেখানে দাঁড়িয়ে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতেন ৷ সাংবাদিকদের কড়া প্রশ্নের জবাব অতি অনায়াসে দিয়ে দিতেন। প্রয়াত হলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। রয়ে গেল রাজ্যের তৎকালীন প্রশাসনিক ভবন লাল বাড়ি বলে পরিচিত রাইটার্স বিল্ডিং মহাকরণ ৷