কলকাতা, 21 সেপ্টেম্বর: হাতে আর বাকি মাত্র ক'টা দিন ৷ তার পরেই বাঙালির সবচেয়ে বড় পার্বণ, দুর্গাপুজো ৷ প্রতিবারের মতো এই বছরেও দুর্গাপুজোর সময় যাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করত রেলের পক্ষ থেকে একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে ৷
আরজি কর-কান্ডের পরে মানুষের মধ্যে উৎসবের মেজাজ না-থাকলেও দুর্গাপুজো বঙ্গজীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। তাই যাত্রীদের, বিশেষ করে মহিলা যাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর রেল ৷ এছাড়াও এই সময় লোকাল ট্রেনগুলোতে খুব ভিড় হয়। তাই, পুজোর দিনগুলোতে যাত্রী নিরাপত্তা আঁটসাঁট এবং যে কোন আপদকালীন পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলা করতে ডিআরএম দীপক নিগম রেল আধিকারিকদের সজাগ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
যাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে একাধিক পদক্ষেপ:
পুজোর দিনগুলিতে অর্থাৎ 9 থেকে 12 অক্টোবর পর্যন্ত শিয়ালদা ডিভিশনের সবকটি গ্যালপিং ট্রেন সমস্ত স্টেশনে থামবে ৷ ট্রেনগুলি যাতে নির্দিষ্ট সময়ে যাতায়াত করে, সেই দিকে বিশেষ নজর থাকবে ৷ পুজোর দিনগুলিতে সবকটি স্টেশনে 24x7 পানীয় জল পাওয়া যাবে।
বিভিন্ন স্টেশনের রেল ট্র্যাকের 10 থেকে 20 মিটারের মধ্যে কমবেশি 50টি পুজো প্যান্ডেল রয়েছে ৷ তাই এই সব প্যান্ডেলগুলিতে ঠাকুর দর্শনে ভিড় হবে ৷ ফলে ট্রেনের পরিষেবার ব্যাঘাত ঘটার সম্ভাবনা থেকে যায় ৷ তাই যাতে কোনরকম অপ্রীতিকর ঘটনা না-ঘটে, তাই স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এই জায়গাগুলোতে আরপিএফ মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷
এছাড়াও শিয়ালদা, কলকাতা ও দমদম জংশনের মতো ব্যস্ত স্টেশনগুলিতে অতিরিক্ত 'May I Help you' বুথ খোলা হবে। দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে এই বুথে বিভিন্ন হেল্পলাইন নম্বর দেওয়া থাকবে ৷ পুলিশ স্টেশন, হাসপাতাল এবং ফায়ার ব্রিগেড-সহ গুরুত্বপূর্ণ ফোন নম্বরগুলির বুথে রাখা থাকবে ৷
অন্যদিকে বারাসত, খড়দা, বালিগঞ্জ, ব্যারাকপুর, বনগাঁ, সোনারপুর, বারুইপুর, রানাঘাট, বহরমপুর ইত্যাদি জায়গার ব্যস্ত লেভেল ক্রসিং গেটে স্পেশাল আরপিএফ মোতায়ন করা হবে। এই ধরনের 25টি ঝুঁকিপূর্ণ লেভেল ক্রসিং গেট চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়ন করা হবে ৷ প্রতিটি লেভেল ক্রসিং গেটে অন্তত একজন ব্যক্তি মোতায়ন করতে স্থানীয় প্রশাসনের থেকে স্বেচ্ছাসেবকদেরও মোতায়েন করা হবে।
এছাড়াও শিয়ালদা স্টেশনে দিনের ব্যস্ত সময় অর্থাৎ পুজোর দিন সন্ধ্যা 6টা থেকে ভোর 5টা পর্যন্ত ট্রলি মুভমেন্ট নিয়ন্ত্রণ করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলিতে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে ৷ পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে ৷ নির্মাণ সামগ্রীগুলিকে এমনভাবে রাখতে হবে, যাতে যাত্রীরা নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে ৷
অতিরিক্ত 5টি টিকিট বুকিং কাউন্টার (শিয়ালদা মেনে 4টি ও শিয়ালদা দক্ষিণে 1টি) পুজোর দিনগুলিতে সকাল এবং সন্ধ্যায় খোলা রাখা হবে। সমস্ত স্টেশনে পর্যাপ্ত সংখ্যায় অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র রাখা হবে ৷ শিয়ালদহ, বিধাননগর, দমদম, নৈহাটি, বালিগঞ্জ, সোনারপুর, কলকাতা, কাঁচরাপাড়া, ব্যারাকপুর, মাঝেরহাট, কৃষ্ণনগর-সহ আরো বেশ কয়েকটি স্টেশনে ট্রেন ইন্ডিকেশন বোর্ড ও প্যাসেঞ্জার অ্যাড্রেস ব্যবস্থার উপর বিশেষ নজর দেওয়া হবে।
যাত্রী ভিড় কম করতে মেল/এক্সপ্রেস ট্রেনে আরও সাধারণ কোচ লাগানো হবে ৷ পুজোর দিনগুলিতে GRP'র সঙ্গে সমন্বয় রেখেই কাজ করবে RPF ৷ মহিলা, শিশু এবং প্রবীণ নাগরিকদের নিরাপত্তার উপর বিশেষ নজর দেওয়া হবে। সমস্ত দূরপাল্লার ট্রেনের জন্য আরপিএফ এসকর্ট থাকবে। শিয়ালদা, দমদম, নৈহাটি, বারাসত-সহ গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলিতে মেডিক্যাল বুথ করা হবে। এছাড়াও পুজোর দিনগুলিতে চক্ররেলের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করা হবে।