বাদুড়িয়া, 26 নভেম্বর: মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই তৎপর প্রশাসন । 400 বিঘা জবরদখল হওয়া খাস জমি উদ্ধার করল ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর । উত্তর 24 পরগনার বাদুড়িয়ার ঘটনা । উদ্ধার হওয়া জমিতে ভূমি রাজস্ব দফতর এবং বাদুড়িয়া পুরসভার পক্ষ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে সাইনবোর্ড ৷ তাতে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে,'বিনা অনুমতিতে ওই সরকারি খাস জমি কেউ ব্যবহার করলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।'
ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাদুড়িয়া পুরসভার 16 নম্বর ওয়ার্ডে ইছামতী নদীর তীরে গত কয়েকবছর ধরে পরপর বেশ কয়েকটি ইটভাটা গড়ে উঠেছে । অভিযোগ, ইটভাটা কর্তৃপক্ষ সরকারি খাস জমি জবরদখল করে বেআইনিভাবে সেখান থেকে মাটি কাটছে । নদী থেকে বেআইনিভাবে বালিও তোলা হচ্ছে । ওই সরকারি জমির ওপর দিয়ে নদী থেকে খাল কেটে পলি ঢোকানোর চেষ্টা করছে ৷ তাতে নদীর স্বাভাবিক জলপ্রবাহ ধাক্কা খাচ্ছে । পাশাপাশি নদীপাড়ের জমির গঠনও নষ্ট হচ্ছে ৷
বাদুড়িয়ার নাগরিক সমাজ বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদে সোচ্চার হন । তাঁরা রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরে এনিয়ে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন । সেই অভিযোগ পৌঁছেছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরেও । সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী জবরদখল হওয়া সেই সরকারি খাস জমি পুনরুদ্ধার করার জন্য ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরকে নির্দেশ দেন । তারপরই বাদুড়িয়ার ভূমি রাজস্ব দফতর বিষয়টি নিয়ে কথা বলে পুর প্রশাসনের সঙ্গে । শুরু হয় অভিযান ।
নদী পাড়ের পাঁচটি ইটভাটা কর্তৃপক্ষকে ডেকে পাঠানো হয় । তাদের হাতে থাকা সরকারি জমি ছেড়ে দেওয়ার জন্য নোটিশও ধরিয়ে দেওয়া হয় । কিন্তু ইটভাটা মালিকরা কৌশলে সরকারের উপর প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেন । যদিও, ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিকরা মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের কথা সাফ জানিয়ে দেন ইটভাটা মালিকদের । শেষে, ইছামতীর নদীর পাড়ে জবরদখল হওয়া সরকারের ওই 400 বিঘা খাস জমি পুনরুদ্ধার করা হয় ।ঠিক হয়েছে, উদ্ধার হওয়া ওই জমিতে পুরসভার সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের প্রকল্প হবে । সেই মতো ওই জমির উপর পুরসভার পক্ষ থেকে সাইনবোর্ড বসিয়ে দেওয়া হয়েছে ।
এই বিষয়ে বাদুড়িয়ার ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিক বিজন গায়েন বলেন,"বেআইনিভাবে ইছামতী নদীপাড়ের জমি দখল করা হয়েছিল ।ওই জমি আমরা জবরদখল মুক্ত করেছি । সেখানে রাজ্য পুর দফতরের নতুন প্রোজেক্ট তৈরি হবে । প্রস্তাবিত প্রকল্প নিয়ে ওই জমির ওপর সাইনবোর্ড বসিয়ে দেওয়া হয়েছে ।"
এদিকে, ওই জমি যে সরকারের খাস জমি তা স্বীকার করে নিয়েছেন উদয় গায়েন নামে এক ইটভাটা মালিক । তিনি বলেন,"ইটভাটার সঙ্গে বহু শ্রমিকের রুটিরুজি জড়িত । সরকারি ওই জমি নিয়ে নেওয়ার ফলে দুটি ইটভাটা এখন বন্ধ হয়ে রয়েছে । সরকার যদি শ্রমিকদের কথা ভেবে ইটভাটা চালাতে দেয়, তাহলে সকলেই উপকৃত হয় । শ্রমিকরাও বাঁচবে ।"