হাওড়া, 3 নভেম্বর: ছুটির দিনে পরিবারের সঙ্গে মিলেনিয়াম পার্কে ঘুরতে গিয়েছিলেন শেফালি কর (55) ৷ কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হল না ৷ সন্ধ্যায় জেটি থেকে নামতে গিয়ে ঘটল বিপদ ৷ হাওড়ায় পৌঁছে লঞ্চ থেকে নামার সময় লঞ্চ এবং জেটির মাঝখানের ফাঁকা অংশে পড়ে মুহূর্তে গঙ্গায় তলিয়ে গেলেন শেফালী দেবী ৷ রাত পর্যন্ত তাঁর কোনও খোঁজ মেলেনি।
এই বিপদের সময় পুলিশ প্রশাসনের তরফে কোনও সহযোগিতা পাওয়া যায়নি বলেও অভিযোগ করেছেন তাঁর স্বামী ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, হাওড়ার সাঁতরগাছিতে শেফালী করের বাড়ি ৷ রবিবার ভাইফোঁটায় পরিবারের সঙ্গে মিলেনিয়াম পার্কে বেড়াতে গিয়েছিলেন ৷ তাঁর সঙ্গে ছিলেন মেয়ে-জামাই ও স্বামী ৷ শেষমেশ বাড়ি ফেরা হল না ৷
পরিবার সূত্রে খবর, মিলেনিয়াম পার্ক দেখার পর ফেয়ারলি ঘাট থেকে হাওড়া ফেরিঘাটে আসছিলেন লঞ্চে চড়ে ৷ এরপর সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ লঞ্চ থেকে জেটিতে নামতে গিয়ে লঞ্চ এবং জেটির মাঝখানের ফাঁকা অংশে পড়ে গিয়ে গঙ্গায় তলিয়ে যান ৷ শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত তাঁর খোঁজ মেলেনি ৷
স্বামী নিমাই চন্দ্র কর বলেন, "লঞ্চে আমার সঙ্গে নাতি ছিল ৷ তাকে নিয়ে আমি পেরিয়ে গিয়েছি ৷ আর ওখানে তখন গ্যাপ হয়ে গিয়েছিল ৷ সেই সময় নামতে গিয়ে শেফালি মাঝখানে পড়ে যায় ৷ আওয়াজ পেয়ে পিছনে তাকিয়ে দেখি ও জলে চলে গিয়েছে ৷ আর কিছু দেখতেই পেলাম না ৷ তখন আমরা সবাই চিৎকার করছি ৷ আমার মেয়ে বলছে, মা পড়ে গিয়েছে, বাঁচাও বাঁচাও ৷ কিন্তু কেউ জলে নামল না ৷ আমি বললাম,মানুষটা ভেসে চলে গেল, কেউ সাহায্য কর ! কিন্তু কেউ কিছুই করল না ৷"
অন্যদিকে, চোখের সামনে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় কার্যত ভেঙে পড়েছে শেফালি করের পরিবার ৷ দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় গোলাবাড়ি থানার পুলিশ ৷ এরপর গঙ্গায় নামানো হয় ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ এবং রিভার ট্রাফিক পুলিশের কর্মীদের ৷ তাদের নেতৃত্বে চলছে তল্লাশি শুরু করেছে। ঘটনার খবর পেয়ে মহিলার আত্মীয়-পরিজনরাও লঞ্চ ঘাটে এসেছেন।