কলকাতা, 7 জুন: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া প্রসন্ন রায়ের ব্যাঙ্ক অ্য়াকাউন্টে 6 বছরে জমা হয়েছে 72 কোটি টাকা ৷ এই 72 কোটি টাকা কীভাবে ব্যাঙ্ক অ্য়াকাউন্টে এসে পৌঁছল তার হিসাব এবার খুঁজে বেড়াচ্ছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের গোয়েন্দারা ৷ শুক্রবার কলকাতার নগরদায়রা আদালতে ইডি'র তরফে জানানো হয়েছে, ছয় বছরে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে যে 72 কোটি টাকা এসেছে, তা চাকরি বিক্রির টাকা অথবা মুনাফা ৷ অন্যদিকে, প্রসন্ন রায়ের আইনজীবীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এই কয়েক কোটি টাকা চাকরি বিক্রির মুনাফা নয় ৷ বরং এই টাকা একাধিক ব্যবসার টাকা বলে দাবি করা হয়েছে ৷
তবে কীভাবে প্রসন্নর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে 72 কোটি টাকা এল, তা নিয়ে ইতিমধ্যে নানা মহলে নানা প্রশ্ন উঠেছে ৷ এদিন কলকাতার নগরদায়রা আদালতে এই বিষয়ে ইডি'র তরফ থেকে রিপোর্ট জমা দেওয়া হয় ৷ রিপোর্টে স্পষ্টভাবে ইডির তরফে উল্লেখ করা হয় ব্যাঙ্কে ওই 72 কোটি টাকা মূলত নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ৷
এতে প্রসন্ন রায়ের আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা বলেন, "72 কোটি টাকা থাকলে তাতে ক্ষতি কী ?" এরপরে আদালতের তরফ থেকে জানতে চাওয়া হয়, কীভাবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা মনে করছেন যে ওই 72 কোটি টাকা নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ? যার পালটা জানানো হয়, প্রত্যেক চাকরি প্রার্থীর কাছ থেকে দেড় লক্ষ টাকা করে তোলা হয়েছিল ৷ এর প্রেক্ষিতে আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা আদালতে আবেদন করেন যে, প্রসন্নের অ্যাকাউন্টে জমা পড়া টাকা যদি চাকরি বিক্রির হয়, তা হলে কত জনের কাছ থেকে সেই টাকা নেওয়া হয়েছিল, তা বিস্তারিতভাবে আদালতে জানাতে হবে ইডিকে ৷
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা নিউটাউনের বাসিন্দা প্রসন্ন রায়কে গ্রেফতার করেছিল। জানা গিয়েছে, এই প্রসন্ন রায় মূলত বিভিন্ন জেলা এবং শহরতলীতে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একজন এজেন্ট হিসেবে কাজ করত। প্রসন্ন রায়ের নামে একাধিক নকল বা ভুয়ো সংস্থার হদিশও পেয়েছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা। এই প্রসন্ন রায়কে গ্রেফতারের পর শান্তিপ্রসাদ সিনহার নাম জানতে পারেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা ৷ পরে এসএসসির প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহাকেও গ্রেফতার করা হয়। ধীরে ধীরে এই প্রসন্ন রায়ের আরও কীর্তিকলাপ সামনে আসতে থাকে ৷ জানা গিয়েছে, একদা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল প্রসন্ন রায়ের ৷ পরে দীর্ঘ দিন হেফাজতে থাকার পর অবশেষে শান্তিপ্রসাদ সিনহা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন এবং পরবর্তী সময় বেশ কিছু শর্তে জামিন পান।