সুভাষগ্রাম/বৈদ্যবাটি, 6 সেপ্টেম্বর: আরজি কর হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতি মামলায় সুভাষগ্রাম ও বৈদ্যবাটিতে ইডি-র তল্লাশি অভিযান ৷ আজ সকাল 6টা নাগাদ দক্ষিণ 24 পরগনা ও হুগলি, এই দুই জেলায় অভিযান চালিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা ৷ সুভাষগ্রামে কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর প্রসূন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে হানা দেয় ইডি ৷ অন্যদিকে, আজ দক্ষিণ কলকাতায় একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাতেও হানা দেয় ইডি ৷
প্রায় একই সময়ে হুগলির বৈদ্যবাটিতে এক ওষুধ সংস্থার কর্মী কুণাল রায়ের বাড়িতেও তল্লাশি চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ৷ ইডি সূত্রে খবর, প্রসূনের মতো এই কুণাল রায়ও সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ ৷ সম্প্রতি সিবিআইয়ের তল্লাশিতে সন্দীপ ঘোষের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া দুর্নীতি সংক্রান্ত নথি থেকে ওষুধ সংস্থার কলকাতা অফিসের কর্মী কুণাল রায়ের নাম জানা যায় ৷ তার পরেই আজ ইডি এই মামলার তদন্তে নেমে কুণাল রায়ের বৈদ্যবাটির বাড়িতে তল্লাশি শুরু করেছে ৷ এদিন চন্দননগরের পাদ্রিপাড়ায় সন্দীপ ঘোষের শ্বশুর রামকৃষ্ণ দাসের বাড়িতেও যায় ইডি আধিকারিকদের একটি দল ৷ তবে, সেখানে রামকৃষ্ণ দাস এবং তাঁর পরিবার এই মুহূর্তে থাকেন না ৷
ইডি সূত্রে খবর, সন্দীপ ঘোষের বাড়ি থেকে যে সমস্ত নথি সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন বিভাগের গোয়েন্দারা বাজেয়াপ্ত করেছেন, সেখানে হাসপাতালের মেডিক্যাল বর্জ্যের পাশাপাশি ওষুধ দুর্নীতির একটা যোগ পাওয়া গিয়েছে ৷ তদন্তকারীরা মনে করছেন, ওষুধ সংস্থার কর্মী কুণাল সেই ষড়যন্ত্রের অন্যতম অংশীদার ৷ ইতিমধ্যে সন্দীপ ঘোষ ঘনিষ্ঠ ওষুধের দোকানের মালিক সুমন হাজরাকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই ৷ সন্দীপ ছাড়াও এই সুমন হাজরা এবং কুণাল রায়ের মধ্যে কোনও যোগ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷
বৈদ্যবাটির নার্সারি রোডের কাজীপাড়ায় বাড়ি কলকাতায় ওষুধ সংস্থায় কর্মরত কুণাল রায়ের ৷ এলাকায় নিপাট ভদ্রলোক হিসেবে পরিচিত কুণালের বাড়িতে সাতসকালে তিনটি গাড়িতে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে ইডির 5-6 জন আধিকারিক হানা দেন ৷ পুরো বাড়িটি বাইরে থেকে ঘিরে ফেলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা ৷ প্রথমটায় কিছুই বুঝে উঠতে পারেননি স্থানীয়রা ৷ জানা গিয়েছে, এই এলাকার দীর্ঘদিনের বাসিন্দা কুণাল রায়, স্থানীয় ক্লাবের সভাপতি পদেও রয়েছেন ৷
তবে, কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর প্রসূন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের দুর্নীতির যোগ কোথায় ? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ৷ প্রসঙ্গত, সন্দীপ ঘোষ আরজি করের অধ্যক্ষ পদে ইস্তফা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে স্বাস্থ্যভবন তাঁকে এই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজেই নিয়োগ করে ৷ ফলে আরজি কর ছাড়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সন্দীপের ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর হওয়া কাকতালীয় নয় বলেই মনে করছে ইডি ৷ তবে, পুরো বিষয়টি এই মুহূর্তে তদন্তসাপেক্ষ ৷
উল্লেখ্য, হাওড়ার সাঁকরাইলে চিকিৎসার সরঞ্জাম সরবরাহ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত বিপ্লব সিংয়ের বাড়িতেও ইডি তল্লাশি চাল্লাচ্ছে ৷ এই বিপ্লব ঘনিষ্ঠ কৌশিক কোলে নামে আরেক ব্যক্তির বাড়িতেও গিয়েছে ইডি ৷ উল্লেখ্য, সন্দীপ ঘোষের পাশাপাশি আরজি কর দুর্নীতি-কাণ্ডে বিপ্লব সিং এবং সমুন হাজরাও 8 দিনের সিবিআই হেফাজতে রয়েছেন ৷