কলকাতা, 19 অক্টোবর: পূর্ব রেলের হাওড়া ও শিয়ালদা শাখা মিলিয়ে প্রতিদিন প্রায় লক্ষ লক্ষ মানুষ যাতায়াত করেন । তাই ঠিক সময়ে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর রেল কর্তৃপক্ষ ৷ ট্রেন চালক থেকে গার্ড এবং রেলের সকল কর্মীদের 30 সেকেন্ডের মধ্যে ট্রেন ছাড়ার কথা বলে একটি বিজ্ঞপ্তি রেলের নাম করে সম্প্রতি বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। টাইম টেবিল অনুযায়ী, ট্রেন ছাড়ার ক্ষেত্রে নিয়মানুবর্তিতা আনতেই নাকি এই ঘোষণা করা হয়েছে ৷ তবে প্রত্যেক স্টেশনে 30 সেকেন্ড ট্রেন থামা নিয়ে নিত্যযাত্রীদের মধ্যে চরম বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে ৷ যদিও এই বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি কাটাতে মুখ খুলেছেন পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র ৷
ট্রেনের যাত্রীদের উদ্দেশ্যে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক জানান, শিয়ালদা ডিভিশনে ট্রেনে ওঠা-নামার ক্ষেত্রে সময়ের কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না ৷ এ ক্ষেত্রে আগের সময়ই বলবৎ থাকবে ।
বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, প্রথম থেকেই প্রতি স্টেশনে ট্রেনের স্টপেজ টাইম 30 সেকেন্ড ৷ কিন্তু, বিভিন্ন কারণে নির্দিষ্ট সময়ের বেশ কিছুটা পরে ছাড়ে ট্রেন । স্টপেজ টাইম 40 থেকে 50 সেকেন্ড পর্যন্ত বিলম্বিত হয়ে যায় । জংশন স্টেশন ও ব্যস্ত স্টেশনগুলির ক্ষেত্রে এই সময় গিয়ে দাঁড়ায় 1 মিনিটের কাছাকাছি । এর ফলে দেরি করে গন্তব্যে পৌঁছায় ট্রেন । দীর্ঘদিন ধরেই যাত্রীদের মধ্যে ট্রেন লেট হওয়া নিয়ে ক্ষোভ ছিল । একাধিকবার এই নিয়ে যাত্রীদের তরফে অভিযোগও জানানো হয় ৷
বহুদিন ধরে সময়ে না ছাড়ার বিষয়টি একটি অভ্যেসে পরিণত হয়েছে রেলের চালকদের ৷ ফলে রেলের সার্বিক পরিষেবার মানের উপর বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে । এক দিকে, অমৃত ভারত প্রকল্পে উন্নত থেকে উন্নততর ভাবে সেজে উঠছে স্টেশন ও ট্রেন ৷ অন্যদিকে, সময়ানুবর্তিতার এহেন ঢিলেমি থাকাটা কোনও কাজের কথা নয় । তবে একই সঙ্গে মাথায় রাখা হয় যাত্রী নিরাপত্তার দিকটাও ।
শুক্রবার থেকে রেলের নাম করে একটি বিজ্ঞপ্তি ছড়িয়ে পড়তে থাকে বিভিন্ন মাধ্যমে ৷ সেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে আসার পর এই বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয় ৷ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, প্রতি স্টেশন থেকে 30 সেকেন্ডের মাথায় ট্রেন ছাড়তে হবে ৷ আবার, 'provided all conditions for departure are met' অর্থাৎ, সময়ের মধ্যে ট্রেন ছাড়ার ক্ষেত্রে যাত্রী নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে বলে বলা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে । যাত্রীদের ট্রেন থেকে ওঠা-নামা সম্পূর্ণ হলে তবেই গার্ড ট্রেন ছাড়ার সংকেত দিতে পারবেন ৷ যাত্রীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে প্রতিটি স্টেশনে অতিরিক্ত আরপিএফ ও কমার্শিয়াল কর্মীদের মোতায়েন করা হবে । সেই কারণে সাম্প্রতিক সময়ে স্টেশনগুলিকেও সাজানো হয়েছে ৷
তবে এই বিজ্ঞপ্তিটিকে সম্পূর্ণ অসত্য বলে ঘোষণা করেন পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র ৷ তিনি জানান, শিয়ালদা ডিভিশনে ট্রেনে ওঠা-নামার ক্ষেত্রে আগের সময়ই বলবৎ থাকবে । সময় কোনও পরিবর্তন আনা হয়নি । প্রসঙ্গত, পূর্ব রেলের পক্ষ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সাধারণত শিয়ালদা স্টেশনে প্রতিদিন 12 থেকে 15 লক্ষের কাছাকাছি যাত্রী ট্রেনে যাতায়াত করেন ৷ সম্প্রতি ট্রেনগুলির বগি 9 থেকে বেড়ে 12 হওয়ায় যাত্রী সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে ৷