বসিরহাট, 2 মার্চ: বিজেপি ও সিপিএমের পর এবার ডিওয়াইএফআই । সন্দেশখালিকাণ্ডের প্রতিবাদে বসিরহাট এসপি অফিস অভিযানকে ঘিরে শনিবার রণক্ষেত্রের চেহারা নিল সংগ্রামপুর । পুলিশের সঙ্গে ডিওয়াইএফআই কর্মীদের বচসা থেকে ধস্তাধস্তি কিছুই বাদ গেল না । পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে পুলিশকে একসময় লাঠিচার্জ পর্যন্ত করতে হয় । শেষমেশ এসপি অফিসে ঢুকতে না পেরে পুলিশ সুপারের দফতরের ঠিক সামনের রাস্তায় কর্মী সমর্থকদের নিয়ে বসে পড়েন ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় । শুরু হয় অবস্থান-বিক্ষোভ, যা এখনও চলছে বলে জানা গিয়েছে । সিপিএমের যুব সংগঠনের এই আন্দোলনের জেরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে বসিরহাট-তেঁতুলিয়া রোড ।
আন্দোলনকারীদের স্পষ্ট দাবি, শান্তিপূর্ণভাবে এ দিন তাঁরা মিছিল করে বসিরহাট এসপি অফিসে ডেপুটেশন দিতে যাচ্ছিলেন । কিন্তু এসপি অফিসে ঢোকার আগেই কোনও কারণ ছাড়াই পুলিশ তাঁদের মিছিল আটকায় । পুলিশ রূঢ় ব্যবহার করেন নেতা-কর্মীদের সঙ্গে । এ নিয়েই বচসা বাঁধলে পুলিশ পরিকল্পনা করে লাঠি চালায় ডিওয়াইএফআই কর্মীদের ওপর বলে অভিযোগ । তারই প্রতিবাদে অবস্থান-বিক্ষোভে বসেছেন আন্দোলনকারীরা ।
এ দিনের উত্তপ্ত পরিস্থিতির জন্য পুলিশের ভূমিকাকেই দায়ী করেছেন ডিওয়াইএফআই নেতৃত্ব । যদিও এখনও অবধি এ বিষয়ে পুলিশের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি ।
গত 24 ফেব্রুয়ারি পুলিশের নজর এড়িয়ে 144 ধারা জারির মধ্যেই সন্দেশখালি পৌঁছে যান ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় । সঙ্গে ছিলেন সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য পলাশ দাস-সহ যুব সংগঠনের আরও কয়েকজন নেতৃত্ব । প্রথমদিকে তাঁরা সুষ্ঠুভাবে সন্দেশখালির উপদ্রুত কয়েকটি এলাকায় যেতে পারলেও মাঝেরপাড়ায় এসে পুলিশের বাঁধার মুখে পড়তে হয় মীনাক্ষীদের । এ নিয়ে বচসাও বাধে সেসময় । শেষ পর্যন্ত পুলিশের বাঁধার মুখে পড়ে সেখান থেকে ফিরে আসেন ডিওয়াইএফআই নেতৃত্ব ।
তবে পুলিশি সক্রিয়তা এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সেদিনই বসিরহাট এসপি অফিসে এসে অভিযোগপত্র জমা দেন সিপিএমের যুব নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় । পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তিনদিনের সময়সীমা বেঁধে দেন তিনি । এই সময়সীমার মধ্যে কোনও পুলিশকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না তা জানতেই মীনাক্ষীর নেতৃত্বে শনিবার বসিরহাট এসপি অফিস অভিযানে সামিল হয়েছিলেন ডিওয়াইএফআইয়ের কর্মী,সমর্থকরা ।
এ দিন বিকেলে বসিরহাট টাউনহল ময়দান থেকে মিছিল করে সংগ্রামপুরে এসপি অফিসের সামনে এসে জড়ো হন তাঁরা । সেই সময় নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেঙে সিপিএমের যুব সংগঠনের কর্মী সমর্থকরা এসপি অফিসের দিকে এগোনোর চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ । তখন পুলিশ তাঁদের বাঁধা দিলে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় । পরে অবশ্য পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয় । এদিকে, অবস্থান-বিক্ষোভের পর মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ডিওয়াইএফআইয়ের পাঁচ সদস্যের এক প্রতিনিধিদল পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি তুলে দেন তাঁর হাতে ।
অন্যদিকে, ডেপুটেশন দিয়ে এসপি অফিস থেকে বাইরে বেরিয়ে সন্দেশখালিতে তাঁকে আটকানোর প্রসঙ্গ তুলে ধরে শাহজাহান, শিবু, উত্তম এবং তাঁর সহযোগীদের নারী নির্যাতন, জমি জবরদখল ও লুঠতরাজের বিরুদ্ধে সরব হন সিপিএমের যুব নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় । এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তিনি ।
আরও পড়ুন: