দুর্গাপুর, 24 সেপ্টেম্বর: মুখোশের আড়ালে তাঁদের মুখ দেখা হয় না কারও, জানা হয় না তাঁদের মনের কথাও । তাঁদেরও ইচ্ছা করে পুজোর আনন্দে মিশে যেতে ৷ কিন্তু তা পারে না, তাই মা আসার আগেই তাঁরা পুজোতে মেতে ওঠেন ৷ যেন দেবীর 'অকালবোধন'! উচ্ছ্বাসে মেতেছেন অন্ডালের ছৌ-শিল্পীরা এবং সাধারণ মানুষ ।
মঙ্গলবার সপ্তমীর সকালে মহিলা ঢাকিদের বাদ্যিতে পুকুর থেকে কলাবউ স্নান করিয়ে আনা হয় । তারপরেই শুরু হল দেবী যোগমায়ার পুজো । তবে কোনও ব্রাহ্মণ নয়, পুজো করেন শূদ্ররাই । এনিয়ে বাড়তি উৎসাহ অন্ডালের উখড়া পাঠকপাড়ায় । শুক্রবার পর্যন্ত চলবে শিল্পীদের উমা আরাধনা ৷
প্রতিবছর দুর্গাপুজোর সময় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে রুজি-রুটির তাগিদে ছৌ-শিল্পীরা আনন্দ উপহার দেন। কিন্তু তাঁরা উৎসবে সামিল হতে পারেন না । তবে তাঁদেরও দেবী দুর্গার আরাধনা করার ইচ্ছে হয় । তাই ছৌ-শিল্পীরা দুর্গাপুজোর আগেই অকাল দেবী বন্দনার আয়োজন করেন । চার দিন ধরে চলে পুজোপাঠ । শুধু ছৌ-শিল্পীরাই নন, এই পুজোয় সামিল হন এলাকার সমস্ত শ্রেণির মানুষ । মহিলা ঢাকিদের ঢাকের তালে চলে ছৌ-নাচ-সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান।
উদ্যোক্তা অর্চিষ্মান পাল বলেন, "আমাদেরও দুর্গাপুজোয় আনন্দ করতে ইচ্ছা করে । কিন্তু পেশার তাগিদে মানুষকেই আনন্দ দিতে হয় । নিজেরা আনন্দ করতে পারি না । তাই আমরা দুর্গাপুজোর আগের অষ্টমীতে দেবী যোগমায়ার পুজোর আয়োজন করি । দুর্গাপুজোর মতোই সমস্ত কিছু করা হয় । পুজোয় কোনও ব্রাহ্মণ পুজো করেন না ৷ পুজো করি আমিই । 7 বছর ধরে চলে আসছে এই পুজো । শুধু আমরাই নই, এই পুজোয় অংশ নেন জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলেই। এভাবেই আমরা আনন্দ উপভোগ করি ।"