ETV Bharat / state

রাজ্যের ড্রাইভিং ট্রেনিং স্কুলগুলিতে পরিবহণ দফতরের নজরদারি, বৈধ কেন্দ্রগুলিকে পাবে আইডি - Driving Training Schools

WB Transport Department New Rules: এবার রাজ্য সরকারের আতচ কাঁচের তলায় ড্রাইভিং ট্রেনিং স্কুলগুলি ৷ দালাল চক্র দমনে কড়া নজরদারি চালাবে পরিবহণ দফতর ৷ সমস্ত বৈধ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিকে দেওয়া হবে আইডি নম্বর ৷

Driving training schools
ড্রাইভিং ট্রেনিং স্কুলগুলিতে কড়া নজরদারি পরিবহণ দফতরের (নিজস্ব ছবি)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jun 30, 2024, 2:30 PM IST

কলকাতা, 30 জুন: এবার রাজ্যের মোটর ট্রেনিং স্কুল বা গাড়ির প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নিল রাজ্য পরিবহণ দফতর । শুধু তাই নয়, আগাছার মতো গজিয়ে ওঠা এবং অসাধু দালাল চক্র দমনে এবার থেকে সবকটি বৈধ ট্রেনিং স্কুলগুলিকে দেওয়া হবে একটি করে আইডি নম্বর ।

যদিও রাজ্যের পরিবহণ ব্যবস্থাকে 'স্মার্ট' ও স্বচ্ছ করে তুলতে এর আগে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে পরিবহণ দফতর । রিজনাল ট্রান্সপোর্ট অফিস (আরটিও) এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট অফিস (এআরটিও)-র কাজকে অনলাইনে করার পাশাপাশি সিমুলেটর ব্যবস্থায় গাড়ির পরীক্ষা নেওয়া সবকিছুতেই প্রযুক্তির ব্যবহার করা হচ্ছে এখন । তাই এবার রাজ্যে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকা গাড়ির প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিকে সঙ্গবদ্ধ করে এক ছাতের তলায় আনতে চাইছে পরিবহণ দফতর ৷

এবার থেকে ন্যাশনাল ইনফরমেটিক্স সেন্টারের বা এনআইসি'র সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ডিজিটাল মাধ্যমে সবকটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে তালিকাভুক্ত করা হবে । এতদিন পর্যন্ত যারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নিতে যেতেন তাঁদের তথ্য সেই কেন্দ্রেই একটি রেজিস্টারে বা সেই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নিজস্ব কম্পিউটারে রাখা থাকত । তাই সেই তথ্য নষ্ট হয়ে বা হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যেতে । তাই এবার থেকে এই তথ্যকে ডিজিটাল আকারে এনআইসি'র সার্ভারে সংরক্ষণ করা হবে । পরে যদি কখনও সেই তথ্যের প্রয়োজন পড়ে সেগুলি যাতে খুব সহজেই পাওয়া যায় তাই এই নয়া পদক্ষেপ ।

বর্তমান সময়ে ওলিতে গলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়েছে গাড়ির প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ৷ যেগুলি অনেক ক্ষেত্রে অবৈধ । আর সেইসব কেন্দ্রগুলিতে অনভিজ্ঞ ও অপটু চালকরা প্রশিক্ষণ দিতে গিয়ে অনেক সময় দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন । এছাড়াও এইসব জায়গায় প্রশিক্ষণ দিয়ে লার্নার লাইসেন্স তৈরি করার সময় দালালদের সাহায্যে কোনও বৈধ স্কুলের সঙ্গে নাম যুক্ত করিয়ে তাঁদের পরীক্ষা দেওয়ানো হচ্ছে । এই ক্ষেত্রে সেই বৈধ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মালিক বিষয়টি সম্বন্ধে কিছুই জানতে পারছেন না । পরে খোঁজ নিতে গেলে দেখা যাচ্ছে যে, বৈধ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সঙ্গে নাম লিখিয়ে অনেকেই ড্রাইভিং পরীক্ষা দিয়েছেন যারা আদপে সেই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ট্রেনিংই নেননি ।

অনেক ক্ষেত্রে আবার দেখা গিয়েছে যে, দালাল চক্রের সাহায্যে টাকার বিনিময় গাড়ি চালাতে যানেন না বা কথাও কোনো প্রশিক্ষণই নেননি, তেমন ব্যক্তিদেরও লাইসেন্স বের করে দিচ্ছে অসাধু লোকজন । তাই অনেক সময় গাড়ির প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলির উপরে পরিবহণ দফতরের নজরদারি আছে কি না তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন । তাই এবার নড়েচড়ে বসেছে পরিবহণ দফতর । বৈধ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিকে আইডি দেওয়ার পাশাপাশি তারা কতজনকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, কবে কবে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, কে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, এই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য এনআইসি'র ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হবে ।

ক্যালকাটা মোটর ট্রেনিং স্কুল অনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অসীম বসু বলেন, "দালাল চক্রকে দমন করার ক্ষেত্রে এটা একটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ । আমাদের প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো রয়েছে ৷ আমরা রাজ্যে সরকার অনুমোদিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হওয়া সত্ত্বেও অবৈধ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং কিছু দালাল চক্র টাকার বিনিময়ে লাইসেন্স করিয়ে দিচ্ছে । এর ফলে আমাদের ব্যবসা মার খাচ্ছে । বরং বিভিন্ন আইনি জটিলতায় আমাদের ব্যবসা জেরবার হচ্ছে । আর যারা আর টিওর বাইরে টেবিল চেয়ার পেতে বসে যাচ্ছে তারাই মুনাফা করে নিচ্ছে ।"

পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিক জানান, অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে যে ব্যক্তিগত গাড়িতেই ড্রাইভিং ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে । কিন্তু এটা একেবারেই নিয়মের পরিপন্থী । কারণ নিয়ম মতো ফর্ম 5 ও ফর্ম 14 এর প্রয়োজন পড়ে । কিন্তু এতদিন পর্যন্ত এইসব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো সব তথ্য নিজেদের কাছে নথিভুক্ত করে রাখত । তবে এখন থেকে এই সবই হবে এইআইসি'র মাধ্যমে ।

উল্লেখ্য, সারা রাজ্যে বৈধ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সংখ্যা হল 500টির কাছাকাছি রয়েছে । তাই এই নতুন নিয়ম এবার লাগু হবে সবার ক্ষেত্রে । সম্প্রতি কারিগরি ভবনে সমস্ত বৈধ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিকে নিয়ে পরিবহণ দফতরের একটি বৈঠক হয় ৷ যেখানে এই নিয়ম কার্যকরী করা নিয়ে আলোচনা হয় । তারপরেও এই নিয়ম চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ৷

কলকাতা, 30 জুন: এবার রাজ্যের মোটর ট্রেনিং স্কুল বা গাড়ির প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নিল রাজ্য পরিবহণ দফতর । শুধু তাই নয়, আগাছার মতো গজিয়ে ওঠা এবং অসাধু দালাল চক্র দমনে এবার থেকে সবকটি বৈধ ট্রেনিং স্কুলগুলিকে দেওয়া হবে একটি করে আইডি নম্বর ।

যদিও রাজ্যের পরিবহণ ব্যবস্থাকে 'স্মার্ট' ও স্বচ্ছ করে তুলতে এর আগে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে পরিবহণ দফতর । রিজনাল ট্রান্সপোর্ট অফিস (আরটিও) এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট অফিস (এআরটিও)-র কাজকে অনলাইনে করার পাশাপাশি সিমুলেটর ব্যবস্থায় গাড়ির পরীক্ষা নেওয়া সবকিছুতেই প্রযুক্তির ব্যবহার করা হচ্ছে এখন । তাই এবার রাজ্যে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকা গাড়ির প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিকে সঙ্গবদ্ধ করে এক ছাতের তলায় আনতে চাইছে পরিবহণ দফতর ৷

এবার থেকে ন্যাশনাল ইনফরমেটিক্স সেন্টারের বা এনআইসি'র সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ডিজিটাল মাধ্যমে সবকটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে তালিকাভুক্ত করা হবে । এতদিন পর্যন্ত যারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নিতে যেতেন তাঁদের তথ্য সেই কেন্দ্রেই একটি রেজিস্টারে বা সেই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নিজস্ব কম্পিউটারে রাখা থাকত । তাই সেই তথ্য নষ্ট হয়ে বা হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যেতে । তাই এবার থেকে এই তথ্যকে ডিজিটাল আকারে এনআইসি'র সার্ভারে সংরক্ষণ করা হবে । পরে যদি কখনও সেই তথ্যের প্রয়োজন পড়ে সেগুলি যাতে খুব সহজেই পাওয়া যায় তাই এই নয়া পদক্ষেপ ।

বর্তমান সময়ে ওলিতে গলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়েছে গাড়ির প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ৷ যেগুলি অনেক ক্ষেত্রে অবৈধ । আর সেইসব কেন্দ্রগুলিতে অনভিজ্ঞ ও অপটু চালকরা প্রশিক্ষণ দিতে গিয়ে অনেক সময় দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন । এছাড়াও এইসব জায়গায় প্রশিক্ষণ দিয়ে লার্নার লাইসেন্স তৈরি করার সময় দালালদের সাহায্যে কোনও বৈধ স্কুলের সঙ্গে নাম যুক্ত করিয়ে তাঁদের পরীক্ষা দেওয়ানো হচ্ছে । এই ক্ষেত্রে সেই বৈধ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মালিক বিষয়টি সম্বন্ধে কিছুই জানতে পারছেন না । পরে খোঁজ নিতে গেলে দেখা যাচ্ছে যে, বৈধ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সঙ্গে নাম লিখিয়ে অনেকেই ড্রাইভিং পরীক্ষা দিয়েছেন যারা আদপে সেই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ট্রেনিংই নেননি ।

অনেক ক্ষেত্রে আবার দেখা গিয়েছে যে, দালাল চক্রের সাহায্যে টাকার বিনিময় গাড়ি চালাতে যানেন না বা কথাও কোনো প্রশিক্ষণই নেননি, তেমন ব্যক্তিদেরও লাইসেন্স বের করে দিচ্ছে অসাধু লোকজন । তাই অনেক সময় গাড়ির প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলির উপরে পরিবহণ দফতরের নজরদারি আছে কি না তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন । তাই এবার নড়েচড়ে বসেছে পরিবহণ দফতর । বৈধ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিকে আইডি দেওয়ার পাশাপাশি তারা কতজনকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, কবে কবে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, কে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, এই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য এনআইসি'র ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হবে ।

ক্যালকাটা মোটর ট্রেনিং স্কুল অনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অসীম বসু বলেন, "দালাল চক্রকে দমন করার ক্ষেত্রে এটা একটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ । আমাদের প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো রয়েছে ৷ আমরা রাজ্যে সরকার অনুমোদিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হওয়া সত্ত্বেও অবৈধ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং কিছু দালাল চক্র টাকার বিনিময়ে লাইসেন্স করিয়ে দিচ্ছে । এর ফলে আমাদের ব্যবসা মার খাচ্ছে । বরং বিভিন্ন আইনি জটিলতায় আমাদের ব্যবসা জেরবার হচ্ছে । আর যারা আর টিওর বাইরে টেবিল চেয়ার পেতে বসে যাচ্ছে তারাই মুনাফা করে নিচ্ছে ।"

পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিক জানান, অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে যে ব্যক্তিগত গাড়িতেই ড্রাইভিং ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে । কিন্তু এটা একেবারেই নিয়মের পরিপন্থী । কারণ নিয়ম মতো ফর্ম 5 ও ফর্ম 14 এর প্রয়োজন পড়ে । কিন্তু এতদিন পর্যন্ত এইসব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো সব তথ্য নিজেদের কাছে নথিভুক্ত করে রাখত । তবে এখন থেকে এই সবই হবে এইআইসি'র মাধ্যমে ।

উল্লেখ্য, সারা রাজ্যে বৈধ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সংখ্যা হল 500টির কাছাকাছি রয়েছে । তাই এই নতুন নিয়ম এবার লাগু হবে সবার ক্ষেত্রে । সম্প্রতি কারিগরি ভবনে সমস্ত বৈধ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিকে নিয়ে পরিবহণ দফতরের একটি বৈঠক হয় ৷ যেখানে এই নিয়ম কার্যকরী করা নিয়ে আলোচনা হয় । তারপরেও এই নিয়ম চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.