কলকাতা, 13 সেপ্টেম্বর: প্রশাসনের তরফে বারবার জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন রাজনৈতিক তরজা ৷ একাধিকবার বলা হয়েছে, রাজনৈতিক অভিসন্ধি রয়েছে জুনিয়র চিকিৎসকদের। এমনকি বৃহস্পতিবার নবান্নের মুখ্যমন্ত্রীর গলাতেও একই কথা শোনা গিয়েছে বলে অভিযোগ ৷ যার পরেই কার্যত হতাশ জুনিয়র চিকিৎসকেরা।
কেন সরাসরি সম্প্রচার চাইছেন জুনিয়ার চিকিৎসকরা, সেই নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন ৷ জুনিয়র চিকিৎসক দেবাশিস হালদার বলেন, "আমরা মুখ্যমন্ত্রীর মত অত বড় রাজনৈতিক ব্যক্তি নই। সেই কারণেই ভয় লাগছিল। যদি আমাদের কোনওভাবে চাপ দেওয়া হয়, তখন কী হবে ? সেই কারণেই আমরা বারবার সরাসরি সম্প্রচারের কথা বলেছি ৷ তাহলে একটি স্বচ্ছতা থাকে ।"
মঙ্গল, বুধবারের পর বৃহস্পতিতেও ভেস্তে গিয়েছে জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বৈঠক ৷ লাইভ স্ট্রিমিং নিয়ে টানাপোড়েনের জেরে বৃহস্পতিবার নবান্নে গিয়েও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে বৈঠক করেননি জুনিয়র চিকিৎসকরা ৷ কারণ লাইভ স্ট্রিমিং ছাড়া বৈঠকে যোগ দেবেন না বলে জানিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা ৷ মুখ্যমন্ত্রীও জানান, বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন হওয়ায় লাইভ স্ট্রিমিং সম্ভব নয় ৷ প্রায় ঘণ্টা দু'য়েকের টানাপোড়েনের পর ভেস্তে যায় বৈঠক ৷
মঙ্গলবার থেকে স্বাস্থ্যভবনের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। 5 দফা দাবি নিয়ে চলছে অবস্থান বিক্ষোভ। এর মাঝে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে একটি মেইল করেছিলেন সাক্ষাৎ করার জন্য। প্রশাসন ও জুনিয়র চিকিৎসকদের মধ্যে একাধিক ইমেল দেওয়া-নেওয়ার পর অবশেষে বৃহস্পতিবার নবান্নে যান জুনিয়র চিকিৎসকেরা। তাঁদের দাবি মেনে সেখানে 30 জনকে ঢোকার অনুমতি দিলেও বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচারের অনুমতি দেয়া হয়নি নবান্ন থেকে। যার ফলে প্রায় তিন ঘণ্টা নবান্নের বাইরেই বসে থাকেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। তারপরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জুনিয়র চিকিৎসকদের এই আন্দোলন প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে।
নবান্নে বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পর ফের স্বাস্থ্যভবনের সামনে অবস্থানে ফিরে আসেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। ফিরে এসে হতাশ প্রকাশ করেন তাঁরা ৷ আগামিদিনে তাঁদের আন্দোলনের পদক্ষেপ কী হবে, তা নিয়েও আলোচনা করেন ৷ জুনিয়র চিকিৎসক দেবাশিস হালদার বলেন, "আমাদের আশা ছিল আজকের বৈঠককে নিয়ে। আমরা সবাই জানতাম আজকে বৈঠকটা হবে। আমরা যদি জানতাম বৈঠকটা হবে না তাহলে এতদূর যেতামই না। আমরা আশা করেছিলাম আমাদের নিরাপত্তা ও রোগীর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হবে। কিন্তু কিছুই হয়নি ৷ আমরা হতাশ। আমাদের এই আন্দোলন স্বাস্থ্যভবনের সামনে চলবে ।"