কলকাতা, 10 নভেম্বর: দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ৷ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাল চিকিৎসকদের সংগঠন ৷ এই নিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিকে চিঠিও দিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস।
শনিবার উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহর নাম করে দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে ঢুকে চিকিৎসকদের শাসানির অভিযোগ ওঠে স্থানীয় পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান ও তৃণমূলের ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে ৷ দিনহাটার ঘটনায় অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরসের সাধারণ সম্পাদক চিকিৎসক উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে ঘটনার প্রতিকার চেয়েছেন। রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রবল মানসিকচাপে কাজ করছেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে তাঁর লেখা চিঠিতে ।
চিঠিতে উৎপল লিখেছেন, "দিনহাটার মহকুমা হাসপাতালের ঘটনায় আমরা গভীরভাবে ব্যথিত এবং হতাশ । দায়িত্বশীল জনপ্রতিনিধি ও ক্ষমতাসীন মহলের প্রভাবশালী নেতারা প্রকাশ্যে ওই প্রতিষ্ঠানের সুপারের উপস্থিতিতে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের হুমকি দিচ্ছেন ।"
তিনি আরও লেখেন, "ওপিডি/ইমার্জেন্সিতে হাসপাতালের সেবা সংক্রান্ত বিষয়ে কারও কারও বিরক্তিকর উপলব্ধি থাকতে পারে । সে বিষয়ে স্থানীয় এবং জেলা স্বাস্থ্য প্রশাসনের কাছে সেগুলি অভিযোগ হিসাবে দায়ের করা যেতে পারে । কিন্তু এখানে তা হয়নি। পরিবর্তে, স্থানীয় রাজনীতিবিদরা প্রকাশ্যে সাধারণ মানুষকে উস্কানি দিচ্ছেন। যা খুবই লজ্জাজনক এবং ঘৃণাজনক । নির্লজ্জভাবে আইনকে নিজের হাতে তুলে নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে । এই ঘটনায় প্রমাণিত হচ্ছে স্বাস্থ্য-প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে । হাসপাতালে আর আইনের শাসন নেই ।"
চিঠিতে প্রতিকার চেয়ে চিকিৎসক সংগঠনের তরফে আরও বলা হয়, "এই ধরনের হুমকির ভয়ঙ্কর পরিবেশ গুরুত্ব দিয়ে বন্ধ করতে হবে । নিরাপদ এবং সুরক্ষিত কাজের পরিবেশের মধ্যে দিয়েই ডুবে যাওয়া সিস্টেমটাকে সম্পূর্ণ পতনের থেকে রক্ষা করা যাবে ৷"
উল্লেখ্য, শনিবার দিনহাটা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সাবির সাহা চৌধুরী এবং দিনহাটা শহর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি বিশু ধর আচমকা দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালের বহির্বিভাগে যান । সে সময় বহু রোগী লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, হাসপাতালের ওপিডি অর্থাৎ, বহির্বিভাগে চিকিৎসকরা রোগী দেখতে দেরিতে আসেন না ৷ এমনকী জরুরি বিভাগেও অব্যবস্থার অভিযোগ ওঠে ৷ তারপরেই, সোজা হাসপাতালে ঢুকে চিকিৎসকদের হুঁশিয়ারি দেন তৃণমূলের নেতারা ৷ দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালের সুপার রঞ্জিত মণ্ডলের উপস্থিতিতে ওই হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ।