বর্ধমান, 6 সেপ্টেম্বর: আরজি কর-কাণ্ডে মৃত নির্যাতিতার পরিবারকে টাকার প্রলোভন দেখানোর অভিযোগ উঠেছে কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে ৷ তবে, পালটা একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছিল কলকাতা পুলিশ ৷ যেখানে নির্যাতিতার বাবা-মা’কে বলতে শোনা যাচ্ছে, পুলিশ তাঁদের কোনও টাকার প্রলোভন দেয়নি ৷ এরপরেই সাংবাদিক বৈঠক করে নির্যাতিতার বাবা-মা অভিযোগ করেছেন, পুলিশ গত 11 অগস্ট রাতে তাঁদের বাড়িতে যায় ৷ সেখানে তাঁদের চাপ দিয়ে ভিডিয়োটি করেছিল ৷
এবার এ নিয়ে পুলিশ প্রশাসনকে নিশানা করলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার ডেপুটি সিএমওএইচ চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী ৷ কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে নিহত চিকিৎসক পড়ুয়ার বাবা-মা’র ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টার অভিযোগ তুলেছেন তিনি ৷ তিনি বলেন, "ভিডিয়ো প্রকাশ করে মৃতের মা-বাবাকে অপমান করার চেষ্টা চলছে ৷ কিন্তু, মৃতার মা-বাবা আজ জনসমক্ষে তাঁদের স্বরূপ উন্মোচন করে দিয়েছেন ৷ 9 অগস্ট ঘটনা ঘটার পরে, আমরা যখন 11 অগস্ট চিকিৎসকদের প্রতিনিধি দল নিয়ে ওঁদের বাড়িতে যাই, তখন মৃতার মা আমাদের বলেছিলেন ঘটনার কথা ৷ এক উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক, যাঁর কাঁধে দু’টো বা তিনটে স্টার ছিল ৷"
চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, "সেই সময় বাড়িতে মেয়েটির দেহ শায়িত ছিল ৷ সেই সময় তাঁর মাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে পুলিশ বড় অংকের টাকা অফার করেছিল ৷ যাতে কোনও অভিযোগ না জানিয়ে বিষয়টি মিটমাট হয়ে যায় ৷ তখন মেয়েটির বাবা বলেছিলেন, আপনার কাঁধে যে স্টারগুলি আছে, সেগুলি অর্জন করতে আপনাকে পরিশ্রম করতে হয়েছে ৷ তেমন আমার মেয়েকেও তাঁর নিজের জায়গায় পৌঁছতে সেই রকম পরিশ্রম করতে হয়েছে ৷ ফলে আজকে আমার মৃতা কন্যাকে এইভাবে অপমান করবেন না ৷"
তাঁর কথা অনুযায়ী, "মৃতার পরিবারের কাছ থেকে এ বিষয়ে জানতে পেরে, সংবাদ মাধ্যমের সামনে এসে সেই কথা বলেছিলাম ৷ তার কিছুক্ষণ পরেই ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে গিয়ে কলকাতা পুলিশ, তাঁদের চাপ দিয়ে ভিডিয়ো বানায় ৷ বলা হয় এটা মিথ্যে কথা, আমরা সেই রকম কথা বলিনি ৷ সেটা যে বলানো হয়েছে, সেটাও আমরা জানতাম ৷ কিন্তু, আমরা সেটা নিয়ে কোনও মন্তব্য করিনি ৷ কারণ, সেই সময় সদ্য সন্তান হারানো পিতা-মাতার মানসিক চাপ আমরা বাড়াতে চাইনি ৷"
তিনি বলেন, "কিন্তু, আমরা জানতাম সত্যি একসময় দিনের আলোয় বেরিয়ে আসবে ৷ গতকাল মৃতার মা পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন, ওই উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিককে প্রথমে তিনি চিনতে পারেননি ৷ পরে একাধিকবার দেখা হওয়ায় বলে দিয়েছেন ডিসি নর্থ এই কাজ করেছেন ৷ অনেকেই আজ সেই ভিডিয়ো স্যোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন ৷ কিন্তু, তাঁরা জানেন না, এই ভিডিয়ো পোস্ট করে আর মানুষকে ভুল পথে চালিত করতে পারবেন না ৷ মানুষ ওই পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে বিচার চাইছে ৷ আমরাও চিকিৎসক সংগঠন প্রথমদিন থেকে যে সব প্রশ্ন করেছিলাম, আজ তা মানুষের দাবিতে পরিণত হয়েছে ৷ তাঁরা আমাদের কথাকে বিশ্বাস করেন ৷ তাই তাঁদের সাধারণ মানুষের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত ৷ তাঁরা যে চাপ দিয়ে এইভাবে ভিডিয়ো বানিয়েছেন, সেই ভুল স্বীকার করে নিলে হয়তো, তাঁদের কিছুটা হলেও ক্ষমা করবে ৷"