বর্ধমান, 13 এপ্রিল: কাঁথি থেকে বেঙ্গালুরুর রামেশ্বরম ক্যাফে বিস্ফোরণকাণ্ডে অভিযুক্ত দুই জঙ্গি ধরা পড়েছে ৷ এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ শানালেন বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ । তিনি বলেন, "জঙ্গিরা এখানে গা-ঢাকা মোটেই দেয়নি, ওরা জানে এখানে কেউ গায়ে হাত দেবে না । শেখ শাহজাহান তো দু'মাস ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছিল । পুলিশ কি জানতো না? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানতেন শাহজাহান কোথায় আছে । কেন ধরেননি? ওরাই এই ধরনের লোককে আশ্রয় দিয়ে সাহায্য করছে ।"
অন্যান্য রাজ্যের প্রসঙ্গ টেনে বিজেপি নেতার সংযোজন, "সারা ভারতবর্ষের মণিপুর, পঞ্জাব, হুজি থেকে করে গ্যাংস্টার আলকায়দার জঙ্গিরা এখানে ধরা পড়েছে । মাসের পর মাস ঘুরে বেড়াচ্ছে । আর যখন উপর থেকে ডান্ডা দিয়েছে তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দু'ঘণ্টার মধ্যে জঙ্গিদের ধরে ফেললেন । অথচ তারা দু'মাস ধরে ঘুরছিল । তখন কী করছিলেন । এটা কি মামার বাড়ি পেয়েছে । জঙ্গিরা ঘুরে বেড়াবে আর আপনি তাদের খাওয়াবেন, পুষবেন, সুরক্ষা দেবেন ।"
শনিবার সকালে দিলীপ ঘোষ বর্ধমান শহরে লাকুড্ডি জলকল এলাকার একটি মাঠে প্রাতঃভ্রমণে যান । সেখান থেকে চা চক্রে যোগ দেন তিনি। চায়ে চুমুক দিতে দিতে বিজেপি প্রার্থী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন । তিনি আরও বলেন, 'বাংলা হচ্ছে জঙ্গিদের সেফ করিডর । আজ পর্যন্ত যত জঙ্গি সব এখানেই ধরা পড়েছে । কারণটা হল কোন ভয় নেই । এছাড়া এখান থেকে আধার কার্ড, রেশন কার্ড করে তারা বাংলাদেশ থেকে আসছে । এখানে এসে ট্রেনিং নিয়ে সারা ভারতবর্ষে ছড়িয়ে গিয়ে জঙ্গি কার্যকলাপ ঘটাচ্ছে ।"
তাঁর দাবি, "একসময় বাংলাদেশ সরকারও বলেছে যে পশ্চিমবঙ্গতে ট্রেনিং নিয়ে হুজি জঙ্গি সংগঠন ওখানে গিয়ে ঝামেলা করেছে । এখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ওখানে টাকা পয়সা পাঠানো হয়েছে । বারবার এই চোর সরকারের জন্য বাঙালিকে বদনাম হতে হচ্ছে । যে রাষ্ট্রবাদী বাঙালি, বিপ্লবী বাঙালি সে এখন রাষ্ট্রবিরোধী জঙ্গি বাঙালি, চোর বাঙালি হয়ে গিয়েছে ।"
একবছর পরে তৃণমূল সরকার থাকবে তো সেই প্রশ্ন তুলে দিলীপ ঘোষ বলেন, "উনি তো দিন রাত প্রশাসনকে ধমকে চমকে রেখে দিয়েছেন । এই অভ্যাসটা বন্ধ করুন । ওনার অনেক চুনোপুটি নেতাও রাস্তায় ধমকি দিচ্ছে । দু'মাসের কথা বলছেন একবছর পরে আপনি থাকবেন কি না, সেটা আগে ভাবুন ।" কেন্দ্রীয় এজেন্সি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার সরব হচ্ছেন । সেই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ,"আইন পাস করা হচ্ছে এজেন্সি যদি বাংলায় ঢোকে সরকারের অনুমতি নিতে হবে । এটা বাংলাদেশ নাকি পাকিস্তান যে অনুমতি নিতে হবে । এজেন্সি ঢুকলে তো সব চুরি বন্ধ হয়ে যাবে । চোরেরা জেলে চলে যাবে । উনি যতই চেষ্টা করুক পারবেন না । জেলে জেতেই হবে ।"
দিলীপ ঘোষ আরও বক্তব্য, "রাজ্যে পুলিশ প্রশাসনকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না ।" তাঁর মতে,"বাংলার পুলিশ নিরপেক্ষ ভূমিকা নেবে এটা ভাবাও ভুল । কিছু অফিসার আছেন যারা কোন কিছু পরোয়া করেন না । তাদের দায়িত্ব পালন করেন । সেই কারণে তাদেরকে কষ্ট ভোগ করতে হয় । গতবারও কয়েকজন অফিসারকে গ্যারেজ করা হয়েছিল । এবারেও কিছু লোককে করা হবে । যেখানে ওরা হেরে যাবে সেখানেই গ্যারেজ করবে । আসলে ওদের জেতানোর জন্য দায়িত্বটা পুলিশকে নিতে হবে । কারণ সঙ্গে পাবলিক নেই । পুলিশ তো তার কাজ করছে । তাহলে পুলিশকে দোষ দেন কেন । পুলিশকে ছেড়ে দেওয়া উচিত । না হলে অ্যান্টিসোশাল কার্যকলাপ আরো বেড়ে যাবে ।"
আরও পড়ুন: