কামারহাটি, 3 ফেব্রুয়ারি: হাত-পা বাঁধা অবস্থায় নিখোঁজ বালকের দেহ উদ্ধার ঘিরে শনিবার বিকেলে উত্তপ্ত হয়ে উঠল উত্তর 24 পরগনার কামারহাটি। ঘটনায় খুনের অভিযোগ সামনে এনেছে নাবালকের পরিবার ৷ একইসঙ্গে পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে এদিন খড়দার আলপাইন ডেয়ারি মোড়ে বিটি রোড অবরোধ করে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখায় উত্তেজিত জনতা। চলে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধও। যারা এই শিশুটিকে খুন করেছে তাদেরকে 24 ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারির দাবি জানিয়ে চলে বিক্ষোভ ৷
মৃত নাবালকের বাড়ি পানিহাটি পৌরসভা এলাকায়। তার বাবা পেশায় রিকশা চালক। সূত্রের খবর, 30 জানুয়ারি বাড়ি থেকে বেরিয়ে তাঁর ছেলে রহস্যজনভাবে নিখোঁজ হয়ে যায়। পরিবারের তরফে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করা হলেও কোনও হদিশ মেলেনি তার। শেষে পুলিশের দ্বারস্থ হন পরিবারের সদস্যরা। খড়দা থানায় দায়ের হয় অভিযোগও। তবে, অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। তারই মধ্যে শনিবার বিকেলে স্থানীয় একটি পরিত্যক্ত কারখানার ভিতরে জলাশয়ের মধ্যে পড়ে থাকতে দেখা যায় নিখোঁজ নাবালককে।
তাঁর হাত-পা বাঁধা ছিল। মুখে গোঁজা ছিল কাপড়ও। সেই অবস্থায় বছর আটের বালকের দেহ উদ্ধার হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় লোকজন ৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে তড়িঘড়ি পৌঁছয় খড়দা থানার পুলিশ। পুলিশকে দেখেই আরও উত্তেজিত হয়ে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। শুরু হয় উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়। শেষমেশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নামানো হয় ব়্যাফ, কমব্যাট ফোর্স। ক্ষুদ্ধ জনতাকে একপ্রকার জোর করেই সরিয়ে দেওয়া হয় জনবহুল বিটি রোড থেকে। তবে তাতেও ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি নিহত বালকের পরিবারের সদস্যদের। জানা গিয়েছে, গত পাঁচদিন ধরে বছর আটের ওই নাবালক নিখোঁজ ছিল ৷
স্থানীয়দের একটাই দাবি, ওই আট বছরের ওই নাবালকের খুনের পিছনে যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। নইলে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তাঁরা ৷ সন্ধ্যায় ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের পরিবারকে আশ্বস্ত করলে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়। এদিকে শিশুটি কীভাবে নিখোঁজ হল, কেনই বা তার দেহ পুকুরে এল, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে, এই বিষয়ে ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া বলেন, "যেখানে ওই বালকের দেহ পাওয়া গিয়েছে, সেখানে সচরাচর কেউ যায় না। কেন ওই বালককে এভাবে নৃশংসভাবে খুন করা হল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। ঘটনায় যুক্ত কাউকেই রেয়াত করা হবে না।"
আরও পড়ুন: