শিলিগুড়ি, 17 অক্টোবর: হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে আশ্চর্যজনকভাবে নিমেষে উধাও হয়ে গেল সদ্যোজাতের দেহ! ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শহরজুড়ে। এদিকে ঘটনায় ফের একবার স্বাস্থ্য দফতরের বড়সড় গাফিলতির ছবি উঠে এল শিলিগুড়িতে। শুধু তাই নয়, আশ্চর্যজনকভাবে ঘটনার সময় বন্ধ ছিল সিসিটিভি ক্যামেরা! অদ্ভুত হলেও বৃহস্পতিবার বিকেলে এমন ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে।
বিকেলে মৃত ওই সদ্যোজাতের পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান। আরও একবার প্রকট হল শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের নিরাপত্তার গাফিলতির ছবি। তবে ঘটনায় অন্তর্বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য আধিকারিক। পাশাপাশি তদন্তে নেমেছে শিলিগুড়ি থানার পুলিশও। হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সকালে শিলিগুড়ি পুরনিগমের 4 নম্বর ওয়ার্ডের গোয়ালাপট্টির বাসিন্দা গর্ভবতী মহিলা রিয়া গুপ্তাকে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসক পরীক্ষা করে জানান, গর্ভেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। পরবর্তী সময়ে মৃত পুত্র সন্তানের দেহ মায়ের শরীর থেকে বের করা হয়। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, 4 ঘণ্টা পরে অথবা বৃহস্পতিবার সকালে তারা শিশুটির দেহ নিয়ে যেতে পারবে। সেইমতো পরিবার এদিন সকালে শিশুটির নিতে যায়। কিন্তু জানানো হয় সদ্যোজাতের দেহ নাকি খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না। তন্নতন্ন করে খোঁজ শুরু হয় সদ্যোজাতের দেহর। শিশুটির দেহ নেওয়ার জন্য দীর্ঘক্ষণ ধরে হাসপাতাল চত্বরে অপেক্ষা করেন পরিবারের সদস্যরা।
সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও তাদের হাতে শিশুটির দেহ তুলে দিতে পারে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর পরবর্তীতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে শিশুটির পরিবারের সদস্যদের জানানো হয় সেই সদ্যোজাত শিশুটির মৃতদেহ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপরই উত্তেজনা ছড়ায় হাসপাতাল চত্বরে। ঘটনার পরেই মৃত শিশুটির পরিবারের লোকেরা হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে। এদিন বিকেল নাগাদ মৃত সদ্যোজাতের মাকে হাসপাতাল থেকে ডিসচার্জ করে দেওয়া হয়।
কিন্তু পরিবারের বাকি সদস্যরা হাসপাতালেই জড়ো হয়ে ক্ষোভে ফুসতে থাকেন। মৃত সদ্যোজাতের কাকা মহম্মদ এহসান বলেন, "এটা কী ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বুঝতে পারছি না ! আমরা নিজের চোখে মৃত শিশুটিকে দেখলাম। নিমেষে ওই শিশুটির দেহ গায়েব হয়ে গেল। আমাদের শিশুর দেহ দিতে হবে।"
হাসপাতলের ভারপ্রাপ্ত সুপার অমিত দত্ত বলেন, "ঘটনাটি কীভাবে ঘটল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেইসময় দায়িত্ব থাকা প্রত্যেকের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হবে। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ঘটনার সময় সিসি ক্যামেরার সুইচও বন্ধ ছিল। কেন সেটা বন্ধ ছিল তা খতিয়ে দেখা হবে। বায়োমেডিক্যাল ওয়েস্টে চলে গিয়েছে কি না সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।"