দার্জিলিং, 1 জানুয়ারি: পুরনোকে বিদায় ও ইংরেজি নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে শৈলরানিতে হাজির প্রচুর পর্যটক ৷ কিন্তু বছরের শেষ দিনেও দার্জিলিঙে মসৃণভাবে গড়াল না টয়ট্রেনের চাকা ৷ চলতে চলতে আচমকা থমকে গেল টয়ট্রেন। ৷ ব্যাহত পরিষেবা ৷ ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় পর্যটনমহলে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে দার্জিলিং হিমালয়ান রেল কর্তৃপক্ষর ভূমিকা নিয়ে। ভরা মরশুমে টয়ট্রেন আচমকা থমকে যাওয়ায় ঘটনায় কর্তৃপক্ষের গাফিলতি দেখছেন পর্যটকরা ৷
যদিও পর্যটনের ভরা মরশুমে যাত্রী পরিষেবা ব্যাঘাত ঘটায় দুঃখপ্রকাশ করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। যাত্রীদের টিকিটের টাকা ফেরত দিয়ে দিতে বাধ্য হয় ডিএইচআর ৷ জানা গিয়েছে, প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার সকালে দু’টি কামরায় 38 জন পর্যটককে নিয়ে শিলিগুড়ির এনজেপি রেল স্টেশন থেকে দার্জিলিঙের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় একটি টয়ট্রেন। এনজেপি স্টেশন ছেড়ে শিলিগুড়ি জংশন পেরিয়ে পাহাড়ের ঢালে রোহিনীর কাছে বিকট শব্দে থেমে যায় টয়ট্রেনের চাকা। বিকল হয়ে যায় টয়ট্রেনের ইঞ্জিন। আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে যাত্রীদের মধ্যে। ট্রেন থেকে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন পর্যটকেরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।
টয়ট্রেন এভাবে মাঝপথে ইঞ্জিনের গোলযোগ বা অন্য কোনও দুর্ঘটনা হলে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার বিকল্প ব্যবস্থা রেল কর্তৃপক্ষই করে দেয়। কিন্তু এক্ষেত্রে যাত্রীদের বিক্ষোভের কারণে সেই ব্যবস্থা করে দেয়নি দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তখন পর্যটকদের টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া হয়। মাঝপথ থেকেই ব্যক্তিগত ব্যয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেন যাত্রীরা।
এবিষয়ে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের ডিরেক্টর প্রিয়াংশু বলেন, ‘‘ডিজেল ইঞ্জিন দু'টি বগিতে অন্তত 38 জন যাত্রী নিয়ে দার্জিলিঙের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল টয়ট্রেন। কিন্তু ইঞ্জিনের কম্প্রেসার মেশিন বিকল হওয়ায় ইঞ্জিনটি বন্ধ হয়ে যায়। যাত্রীরা বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের বিকল্প ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা বলা হলেও তাঁরা টাকা ফেরতের আর্জি জানান। সেই মোতাবেক সকলের টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। পরে ইঞ্জিনটিকে তিনধারিয়া ওয়ার্কশপে নিয়ে যাওয়া হয়।"
গত বছরও ধসের কারণে টানা তিন মাস বন্ধ ছিল দার্জিলিং টয়ট্রেন পরিষেবা। চার মাস পর গত 17 নভেম্বর সব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে প্রায় আবার যাত্রা শুরু করে টয়ট্রেন। কিন্তু ওইদিনই ফের ইঞ্জিন বিকলের ফলে পাহাড়ি পথে থমকে যায় ‘খেলনা গাড়ি'। এই বিষয়ে হিমালয়ান হসপিটালিটি ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, "টয়ট্রেন দার্জিলিংয়ে বেড়াতে আসা পর্যটকদের একটি গুরুত্বপূর্ণ আকর্ষণ। বারবার এই পরিষেবা ব্যাহত হলে পর্যটকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পরে। আমরা চাই, এই পরিষেবা সুষ্ঠভাবে চালানোর ব্যবস্থা করুক রেল কর্তৃপক্ষ।"