মেদিনীপুর, 3 অগস্ট: যত্রতত্র খোলা তার ছড়িয়ে রয়েছে ৷ এর বলি হচ্ছে সাধারণ মানুষ ৷ এরপরেও কি ঘুম ভাঙছে প্রশাসনের ? মেদিনীপুর শহরের রিংরোড জুড়ে খোলা তারের রমরমা, যা নিয়ে সরব জেলা-শহরবাসীও ৷ শুক্রবার হাওড়ার মালি পাঁচঘড়ায় খোলা তারে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে প্রাণ গিয়েছে এক পড়ুয়ার ৷ প্রশ্ন উঠছে, কবে সচেতন হবে প্রশাসন ? খোলা তারের সেই ছবি ফুটে উঠল ইটিভি ভারতের ক্যামেরায় ৷
ভরা বর্ষায় বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে ৷ মেদিনীপুর শহরের রিংরোড থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাস্তায় যে বাতিস্তম্ভগুলি রয়েছে, সেখান থেকে বিপজ্জনকভাবেই বেরিয়ে রয়েছে খোলা তার ৷ সেই তার ঢেকে দেওয়ার কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি প্রশাসনের তরফে ৷ এবিষয়ে মেদিনীপুর পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খানের বক্তব্য, "আমরা আগে থেকে সাবধানতা হিসাবে ত্রিফলার লাইটের বাতিস্তম্ভগুলির সমস্ত তার ডিসকানেক্ট করে দিয়েছি এবং বাকিগুলিরও কাজ চলছে ৷"
মেদিনীপুর শহরে রিং রোড বলতে বটতলা চক গোলকুয়া, কেরানিতলা, পঞ্চুরচক এলআইসি, কালেক্টরি এমনকী স্টেশন রোড সংলগ্ন এলাকাগুলিতেও এইভাবে প্রশাসনের উদাসীনতায় বাতিস্তম্ভ থেকে বেরিয়ে এসেছে খোলা তার ৷ সেই খোলা তারের মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করছে মেদিনীপুর শহরের মানুষজন, সাইকেল, গাড়ি ৷
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে মেদিনীপুর কলেজ স্কোয়ারে মোড়ে একটি খাবার দোকানে খোলা তারে শট-সার্কিটের জেরে মৃত্যু হয়েছিল এক দোকানদারের, আহত হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন দোকানদার ৷ সেই ঘটনায় চটজলদি পুরসভা সমস্ত হকারের দোকানদারদের ইলেকট্রিক লাইন কেটে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিল ৷ তারপর ফের স্বাভাবিক হয়ে দোকানের লাইনগুলি ৷
এবিষয়ে স্থানীয় সুকুমার মাঝি, অভিলাষ সিং রাজপুতরা বলেন, "কলকাতার মতন ঘটনায়ও হুঁশ ফিরছে না পুরসভার ৷ কিছুদিন আগে মেদিনীপুরের কলেজ স্ট্রিটের সামনে এক দোকানদারের বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছিল ৷ তারপরও চুপ রয়েছে পুরসভা ও প্রশাসন ৷ আমরা চাই এবিষয়ে নজর দিক এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিক মেদিনীপুর পুরসভা ও প্রশাসনের আধিকারিকরা ৷"
এ বিষয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি মেদিনীপুর পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খানের ৷ এদিন তিনি বলেন, "বৃষ্টি পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা বাতিস্তম্ভগুলির লাইন কেটে দিয়েছি ৷ তার সমস্ত লাইন ডিসকানেক্ট করে দিয়েছি ৷ কলকাতার ঘটনার পর আমরা আরও নজর রাখছি এই বাতিস্তম্ভগুলির উপর ৷"
তিনি আরও বলেন, "শহরের এরকম অনেক বাতিস্তম্ভ খোলা অবস্থায় আছে ৷ আমরা কর্মী পাঠিয়ে পাঠিয়ে সেগুলির লাইন ঠিক করছি এবং ডিস্টার্ব লাইনগুলি ডিসকানেক্ট করে দিচ্ছি ৷" তবে জট পাকানো কেবল লাইন নিয়ে তিনি বলেন, "আমরাই তো টিভি দেখি, কেবল লাইন দেখি, আমরাও এর জন্য অনেকাংশে দায়ী ৷ পুরসভা একা সব করতে পারবে না ৷ তবে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মালিক পক্ষকে অবশ্যই জানাব ৷"