ক্যানিং, 24 মে: ভোটের মরশুমে ফের প্রাকৃতিক দুর্যোগের চোখ রাঙানি বাংলায়। ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। বাংলার আকাশে দুর্যোগের ঘনঘটা ৷ আতঙ্কিত দক্ষিণ 24 পরগনার উপকূল তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। এখনও উপকূল তীরবর্তী এলাকায় দগদগে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের স্মৃতি। আবারও ঘূর্ণিঝড়ের সামনে দাঁড়িয়ে সুন্দরবনের উপকূল তীরবর্তী এলাকা। প্রশাসনের তরফে জারি হয়েছে সতর্কতা ৷ মাইকের সাহায্যে চলছে প্রচার ৷
26 মে 2021-এ বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের জেরে তছনছ হয়ে গিয়েছিল সুন্দরবনের একাধিক উপকূল তীরবর্তী এলাকা। ঠিক তিন বছর পর একই দিনে সুন্দরবনের উপকূল তীরবর্তী এলাকায় আছড়ে পড়তে চলেছে রেমাল। ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কার মধ্যেই সম্ভব্য দুর্যোগের কথা মাথায় রেখে একাধিক জেলায় জারি করা হয়েছে ঝড়-বৃষ্টির কমলা সতর্কতা। উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলিতে ঝড়ের গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় 100 কিলোমিটার। কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চলেও ঝড়ের তাণ্ডব দেখা যেতে পারে। ঘণ্টায় 80 কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে শহরে। ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কায় একাধিক জেলায় অতি ভারি বৃষ্টির আশঙ্কাও রয়েছে। ইতিমধ্যেই সাগরে ঘনীভূত হয়েছে গভীর নিম্নচাপ।
আরও পড়ুন: শুক্রবার থেকে উত্তাল হবে সমুদ্র, বঙ্গ উপকূলে কতটা প্রভাব ফেলবে রেমাল ?
জানা যাচ্ছে, শনিবার এই গভীর নিম্নচাপ শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। এরপর উত্তর দিকে বাংলা ও বাংলাদেশের উপকূলের দিকে এগিয়ে আসবে। পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ ও বাংলাদেশের খেপুপাড়ার মধ্যবর্তী কোনও অঞ্চলে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। রবিবারই সুন্দরবনের উপকূল তীরবর্তী এলাকায় আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। ঘূর্ণিঝড় আসার আগে ইতিমধ্যেই আবহাওয়ার পরিবর্তন লক্ষ্য করা গিয়েছে সুন্দরবন উপকূল তীরবর্তী এলাকাগুলিতে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মৎস্যজীবীদের সতর্ক করার কাজ চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি যে সকল মৎস্যজীবীরা গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছেন তাঁদের অবিলম্বে বন্দরে ফিরে আসার নির্দেশ জারি করেছে জেলা মৎস্য দফতর। শনিবার রাজ্যের 8 আসনে ভোট। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ভোট রয়েছে ষষ্ঠদফায়। তার আগে থেকেই ঘূর্ণঝড় রেমালের প্রভাব পড়তে শুরু করবে রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে। সেদিক থেকে আগেভাগেই সতর্কতা জারি করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে।
ধীরে ধীরে সমুদ্রে শক্তি বাড়াচ্ছে রেমাল। শনিবার সকাল আটটা নাগাদ সেটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেবে বলে জানিয়েছে আববাওয়া দফতর। কিন্ত তার আগে যে গভীর ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হচ্ছে তার প্রভাব পড়তে শুরু করবে। ইতিমধ্যে দক্ষিণ 24 পরগনার মৌসুনি দ্বীপ-সহ বকখালি, কাকদ্বীপ, নামখানায় পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে জারি করা হয়েছে সতর্কতা। ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে ত্রাণ শিবিরগুলিও। সুন্দরবনের উপকূল তীরবর্তী এলাকায় নদী বাঁধগুলিতে শুরু হয়েছে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ। রেমাল মোকাবিলা ইতিমধ্যেই প্রস্তুতির কাজ শুরু করে দিয়েছে দক্ষিণ 24 পরগনা জেলা প্রশাসন।
আরও পড়ুন: ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গে হলুদ-কমলা সতর্কতা