হুগলি, 9 নভেম্বর: সম্প্রতি 'দানা' ঘূর্ণিঝড়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে রাজ্যজুড়ে ৷ পাশাপাশি অতিবৃষ্টি বা বন্যা তো রয়েছে ৷ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ফসলে যে ক্ষতি হয়, সেই বিমার টাকা দেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছে জোরকদমে ৷ শুক্রবার হুগলিতে কৃষি দফতরের উদ্যোগে রিভিউ মিটিং হয় জেলা পরিষদে। উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ৷
চলতি বছরে হুগলিতে দুর্যোগের কারণে প্রায় দু'লক্ষ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷ কৃষকরা যাতে শস্য বিমার সমস্ত সুবিধা পায়, তার জন্য তৎপর সরকার ৷ কৃষিমন্ত্রী এদিন বলেন, "2019 সাল থেকে শস্যবিমা হচ্ছে ৷ এই প্রথম এমন মিটিং করা হল ৷ এবছর তিন বার আমাদের প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে পড়তে হয়েছে ৷ প্রথমে অতিবৃষ্টি, তারপর জল ছাড়া, তারপর 'দানা' ঘূর্ণিঝড়। যার জেরে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী চেয়েছেন, যাঁরা কৃষিকাজ করেন তাঁরা যেন বিমার টাকা পান। তাই আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। একমাত্র এই রাজ্যেই বিমার জন্য কোনও টাকা নেওয়া হয় না। সবটাই সরকার দেয়। এমনকি ভাগচাষি যাঁরা তাদেরও বিমার টাকা দেওয়া হয়।"
বিমা কীভাবে পাওয়া যাবে ? তার উত্তরে মন্ত্রী শোভনদেব বলেন, "বিমা পাওয়ার চারটি পর্যায় রয়েছে ৷ স্যাটেলাইট থেকে ছবি নেওয়া, সবশেষে সরকারি আধিকারিকরা জমিতে গিয়ে দেখবেন। তারপর ফসল উৎপাদন কতটা কম হল, সেটা দেখার পরই বিমার টাকা স্থির হবে। এই কাজগুলো চলছে। আরও একমাস এই পরিসংখ্যনের তথ্য সংগ্রহের সময় বাড়ানো হয়েছে। কোনও চাষি বাদ পড়ুক তা আমরা চাই না।"
হুগলিতে চাষের ক্ষয়ক্ষতি-
- জেলায় 43 হাজার 546 হেক্টর খারিফ ধান নষ্ট হয়েছে।
- সবজি নষ্ট হয়েছে 1 হাজার 575 হেক্টর।
- মোট ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক 1 লক্ষ 83 হাজার 470 জন।
- বিমা নিয়ে কোনও অভিযোগ যাতে না-থাকে তার জন্য স্যাটেলাইট ছবির পরও জমিতে নেমে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে সরেজমিন হবে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে হুগলি জেলাপরিষদ হলে কৃষি দফতরের উদ্যোগে রিভিউ মিটিংয়ে কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না, আরামবাগের সাংসদ মিতালী বাগ, সভাধিপতি রঞ্জন ধাড়া, জেলাশাসক মুক্তা আর্য, বিধায়ক-সহ জেলা ও ব্লক স্তরের কৃষি কর্মাধ্যক্ষবৃন্দ এবং অন্যান্যরা ৷