কলকাতা, 12 এপ্রিল: মুর্শিদাবাদ জেলায় এবার বাম-কংগ্রেস সমঝোতা হওয়ায় লড়াই ত্রিমুখী। জেলার কমবেশি 40 শতাংশ ভোটার পরিযায়ী শ্রমিক। সেই পরিযায়ী শ্রমিককেই এবার হাতিয়ার করে মুর্শিদাবাদ আসনে ভোট জিততে তৎপর সিপিএম রাজ্য সম্পাদক ও এই কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ সেলিম। ঈদের আবহে ঘরে না ফেরা প্রিয়জনকে নিয়ে মন খারাপের ছায়া দেখা গিয়েছে জেলার অনেক বাড়িতেই। সেই আবেগ ত্বরান্বিত করেই এবার একটি বহুল প্রচারিত সংবাদপত্রের মুর্শিদাবাদ সংস্করণে বিজ্ঞাপন দিল সিপিএম। বিজ্ঞাপনে ছোটদের হস্তাক্ষর লেখা আছে, "উৎসবে বাবার বাড়ি আসা হয় না ।" এর পরে লেখা, "অন্য রাজ্য নয়, কাজ হবে এখানেই। নিজের শহর, নিজের গ্রামে। নিজের হক, নিজের দমে।"
এই বিজ্ঞাপন নির্দিষ্ট করে একটি সংস্করণে ছাপানোর মধ্যে দিয়েই স্পষ্ট, পরিযায়ী শ্রমিকের সমস্যার সঙ্গে জড়িত পরিবারের আবেগকে ভোট প্রচারে তুলে ধরতে চাইছে সিপিএম। সূত্রের খবর, গোটা জেলায় কমবেশি 57-58 লাখ ভোটার। আর সেখানে প্রায় 20 লাখের বেশি পরিযায়ী শ্রমিক। মুর্শিদাবাদ আসনে কমবেশি 7-8 লাখ ভোটার পরিযায়ী। করোনার সময় বোঝা গিয়েছিল, ভিন রাজ্যে ঠিক কত মানুষ পরিযায়ী শ্রমিকের কাজে গিয়েছেন। এই সমস্ত শ্রমিকদের সবাই পর্যাপ্ত সরকারি সাহায্য পাননি বলে অভিযোগ। আর এই অভিযোগকে ঘিরেই ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। তবে সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটু তাদের পাশে দাঁড়ায়। তাঁদের ঘরে ফেরানো থেকে শুরু করে পরিবারের পাশে দাঁড়াতেও কমবেশি উদ্যোগ নিয়েছিল সিটু। সেই ঘটনা প্রচারে তোলা হচ্ছে।
মুর্শিদাবাদে খুশির ঈদেও পড়েছে বিষাদের ছায়া। ভিন রাজ্যে পেটের তাগিদে যাওয়া শ্রমিকদের একটা বড় অংশই ফিরতে পারেননি। উৎসবের দিনও তাঁদের কেটেছে প্রতিদিনের মতো হাড়ভাঙা খাটুনি দিয়েই। সেই আবেগ ধরতে তৎপর সিপিএম। এই প্রসঙ্গে মুর্শিদাবাদের সিপিএম সম্পাদক জমির মোল্লা বলেন, "জেলায় কৃষির হাল খারাপ। শিল্প নেই। নেই কল-কারখানাও। ফলে পেট চালাতে কাজের তাগিদ নিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে ছেলেমেয়েকে ভিন রাজ্যে যেতে হচ্ছে। আমরা কৃষির হাল ফিরিয়ে শিল্প গড়ে তুলব। ঘরের ছেলেকে ভিন রাজ্যে যেতে হবে না। গুজরাট, দিল্লি, মহারাষ্ট্র বা দক্ষিণ ভারতের কোনও রাজ্য নয়, মুর্শিদাবাদ জেলাই হবে তাঁদের কর্মস্থল।"
আরও পড়ুন: