কলকাতা, 19 অগস্ট: চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে নদিয়ার কল্যাণী শহরে সিপিএম রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত ছিল। কিন্তু, আরজি কর কাণ্ডের জেরে এই বর্ধিত অধিবেশন আপাতত স্থগিত রাখল সিপিআইএম। 23-25 অগস্টের পরবর্তীতে কত তারিখে বা কবে কোথায় এই অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে সে বিষয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলেই আলিমুদ্দিন সূত্রে খবর।
সোমবার সিপিএম রাজ্য কমিটির এক নেতা ইটিভি ভারতকে বলেন, "বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশন। পরবর্তী কত তারিখে বা কোথায় এই অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি।" তবে এই বর্ধিত অধিবেশন না হলেও আগামী 22 তারিখ কলকাতায় আসছেন সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সিতারাম ইয়েচুরি। কারণ, নেতাজি ইন্ডোরে ওইদিন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্মরণসভার আয়োজন করতে চলেছে সিপিএম পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি।
এ বিষয়ে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, "বর্তমান যা পরিস্থিতি তাতে আমরা ঘরে ঢুকে থাকতে পারিনা। মানুষ রাস্তায় আছেন। তাঁরা আক্রান্ত হচ্ছেন, সমস্যার জর্জরিত হচ্ছেন। তাঁদের পাশে থাকাটাই এখন আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।"
সূত্রের খবর, এই বর্ধিত অধিবেশন অনুষ্ঠিত না হওয়ায় বুথ স্তরে শক্তি বৃদ্ধি করতে এরিয়া কমিটির বর্তমান ব্যবস্থার ঘটিয়ে লোকাল কমিটি ও জোনাল কমিটি ফিরিয়ে আনার বিষয়টিও আপাতত স্থগিত রাখছে সিপিআইএম। বর্তমানে বঙ্গ সিপিএমে শাখা ও জেলা কমিটির মাঝে এরিয়া কমিটি আছে। কিন্তু, 2017 সালের আগে শাখা ও জেলা কমিটির মাঝে এলসি বা লোকাল কমিটি এবং জেড সি বা একাধিক লোকাল কমিটি নিয়ে জোনাল কমিটি ছিল।
এদিকে, আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদীদের উপর কোথাও লাঠি পেটা, কোথাও বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুশিয়ারি আবার কাউকে কাউকে লালবাজারে তলব করা হচ্ছে । মিছিল ঠেকাতে গ্রেফতারিও চলছে । সম্প্রতি, আরজি কর হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় নামা সাধারণ মানুষকে ঠেকাতে এমন নানা ভূমিকায় দেখা গিয়েছে পুলিশকে । পুলিশ, প্রশাসনের এই ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এবার জোড়া মিছিলের ডাক দিল বাম, কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি।
এদিন ট্রেড ইউনিয়নগুলির পক্ষে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন থেকে সিআইটিইউ সম্পাদক অনাদি কুমার সাহু জানালেন, "প্রতিবাদ দমাতে পুলিশি বাড়বাড়ন্ত এবং ধর্ষণ-খুনের বিচার চেয়ে কাল রাজপথের দখল নেবেন শ্রমজীবী মানুষ। ধর্মতলার লেনিন মূর্তির পাদদেশ থেকে মিছিল যাবে কলেজে স্ট্রিট। আরেকটি মিছিল হবে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে আরজি কর। দুটি মিছিলেই শ্রমজীবী মানুষ পা মেলাবেন।"
এদিন, সিটু ছাড়াও ছিল এআইটিইউসি, এআইসিসিটিইউ, এআইইউটিইউসি, টিইউসিসি, এইচএমএস, ইউটিইউসি, আইএনটিইউসি নেতৃত্ব। এদিন সমস্ত ট্রেড ইউনিয়ের পক্ষ থেকে তীব্র ভাষায় পুলিশি ভূমিকার সমালোচনা করেন ৷ পুলিশ তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন। আগামীকাল বিকাল 5টা নাগাদ লেনিন মূর্তির সামনে থেকে যে মিছিল বের হবে তাতে থাকবেন কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি। তাতে সাধারণ মানুষ সামিল হতে পারেন বলে জানান উদ্যোক্তারা। অন্যদিকে মেডিক্যাল কলেজ থেকে আর জি করের উদ্দেশ্যে যে মিছিল যাবে, তার নেতৃত্ব দেবে 12ই জুলাই কমিটি।