কলকাতা, 13 সেপ্টেম্বর: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের ইতিমধ্যেই পলিগ্রাফ টেস্ট করা হয়েছে ৷ তার পর তাঁর নারকো অ্যানালিসিস টেস্ট করাতে চেয়েছিল সিবিআই ৷ কিন্তু নারাজ সঞ্জয়৷ ফলে শুক্রবার শিয়ালদা আদালত সঞ্জয়ের নারকো টেস্ট নিয়ে সিবিআইয়ের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে ৷ তাই প্রশ্ন উঠেছে, কেন রাজি হলেন না সঞ্জয় ? তাহলে কি তিনি কিছু লুকোতে চাইছেন ? নাকি এর নেপথ্যে অন্য় কোনও কারণ রয়েছে ৷
উল্লেখ্য়, পলিগ্রাফ বা নারকোর মতো পরীক্ষা করাতে গেলে অভিযুক্তের সম্মতির প্রয়োজন হয় ৷ আদালতে দাঁড়িয়ে বিচারকের সামনেই সম্মতি দিতে হয় ৷ পলিগ্রাফ টেস্ট করানোর জন্য একই প্রক্রিয়া মেনে আদালতে পেশ করা হয় সঞ্জয় রায়কে ৷ সেই সময় তিনি সম্মতি দিয়েছিলেন ৷ ফলে টেস্ট হয়েছিল৷ প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে সঞ্জয়ের পলিগ্রাফ টেস্ট করিয়ে আসে সিবিআই ৷
সিবিআই সূত্রে খবর, সেই টেস্টের পরও সঞ্জয়ের বয়ানে বেশ কিছু অসঙ্গতি থেকে গিয়েছে ৷ সেই কারণেই সঞ্জয়ের নারকো অ্যানালিসিস টেস্ট করাতে চেয়েছিল সিবিআই ৷ তাই শিয়ালদা আদালতে তারা আবেদন করে ৷ তার পর শুক্রবার সঞ্জয় রায়কে পেশ করা হয় আদালতে ৷
সূত্রের খবর, আদালতে নারকো টেস্টের জন্য সম্মতি দেননি সঞ্জয় ৷ তাঁকে বিচারক জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘আপনার নারকো পরীক্ষার জন্য সিবিআই আরজি জানিয়েছে । আপনি কি নারকো পরীক্ষার জন্য রাজি আছেন ?’’ উত্তরে সঞ্জয় রায় বিচারককে জানান যে তিনি নারকো পরীক্ষা করাবেন না । এরপরেই সিবিআইয়ের তরফে নারকো পরীক্ষার ওই আরজি বাতিল করে দেয় শিয়ালদা আদালত ।
ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের মতে, নারকো পরীক্ষার মাধ্যমে এক ব্যক্তির সচেতন মনকে অচেতন করে তাঁর মনের জটিল খবরাখবর নেওয়া সম্ভব । এই পরীক্ষা করার জন্য বিভিন্ন সরকারি নিয়মকানুন মেনে তদন্তকারীদের সঙ্গে একজন প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসককে নিয়ে যেতে হয় এই পরীক্ষার জন্য । যে ব্যক্তির নারকো পরীক্ষা করা হবে, তাঁর শরীরে সাতটি বিশেষ ওষুধ ইনজেকশনের মাধ্যমে ইনজেক্ট করা হয় । এরপরই সেই ব্যক্তি আধা-অচেতনস্তরে পৌঁছে যান ৷ সেই সময় তাঁকে যেকোনও প্রশ্ন করলে সঠিক উত্তর দিতে বাধ্য সেই ব্যক্তি ।
এর আগেও নারকো পরীক্ষার মাধ্যমে সফল হয়েছে সিবিআই । এক্ষেত্রেও সেই সম্ভাবনা ছিল ৷ কিন্তু সঞ্জয় রাজি না-হওয়ায় সেই সম্ভাবনা আপাতত বন্ধ হয়ে গেল সিবিআইয়ের জন্য ৷ এখন দেখার তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হয় !