ব্যারাকপুর, 16 ডিসেম্বর: পাঁচ বছর আগের সাড়া জাগানো অমরনাথ তিওয়ারি খুনের মামলায় সোমবার ছয় দোষী সাব্যস্তকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল ব্যারাকপুর আদালত । এদিন ব্যারাকপুর আদালতের এডিজে থার্ড কোর্টের বিচারক অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায় দোষী সাব্যস্ত ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ৷
যাদের এদিন সাজা হল, তাদের নাম - শ্যামবিহারী যাদব, আমোদ চৌধুরী, অনিল যাদব, চন্দন যাদব, অমর চৌধুরী ও অমিত রায় । গত 11 ডিসেম্বর এই ছয় আসামিকে নৈহাটির অমরনাথ তিওয়ারি খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল । পাঁচ দিনের মাথায় তাদের সাজা ঘোষণা করলেন বিচারক ।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, খুনের ঘটনাটি ঘটে 2019 সালের 9 অক্টোবর । সেদিন উত্তর 24 পরগনার নৈহাটির হাজিনগর এলাকায় নিজের বাড়িতেই দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন অমরনাথ । আসলে সেদিন অমরনাথের বড় ছেলে আশু তিওয়ারিকে খুঁজতে বাড়িতে গিয়েছিল দুষ্কৃতী দলটি । অমরনাথের বড় ছেলেকে মারতে গিয়েছিল দুষ্কৃতীরা । কিন্তু মাঝখানে অমরনাথ দাঁড়িয়ে যান । তখন তাঁকেই গুলি করে খুন করে পালায় তারা ।
এরপর, নৈহাটি থানার পুলিশ দুষ্কৃতীদের প্রত্যেককেই গ্রেফতার করে একে একে । ধৃতদের বিরুদ্ধে খুন এবং অস্ত্র আইনে মামলা রুজু হয় । দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে খুনের মামলাটি চলে ব্যারাকপুর আদালতের এডিজে থার্ড কোর্টের এজলাসে । এই খুনের ঘটনায় মোট 14 জনের সাক্ষ্য হয়েছে । তারপর অভিযুক্ত এই ছ’জনকে দোষী সাব্যস্ত করে ব্যারাকপুর আদালত । সোমবার তাদের যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা হওয়ায় খুশি নিহত অমরনাথ তিওয়ারির পরিবার ।
মামলার সরকারি আইনজীবী সত্যব্রত দাস বলেন, "আশু অন্য একটি মামলার অভিযোগকারী হওয়ায় তাঁকে খুনের উদ্দেশ্য ছিল দুষ্কৃতী দলটির । আশুর বাড়িতে আক্রমণের আগে আরও এক জনকে খুন করে ওই ছ’জন । আশুর বাবা সেটি দেখে ফেলেন এবং বাড়ির দরজা বন্ধ করে দেন । কিন্তু দরজা ধাক্কা দিতে দিতে আশুকে বেরিয়ে আসতে বলে দলটি ।’’
সরকারি আইনজীবী আরও বলেন, ‘‘আশুকে না-পেয়ে শ্যামবিহারী রাগের চোটে গুলি চালিয়ে দেয় । গুলিটি অমরনাথের ডান দিকের গালের নীচের দিকে লেগে মাথার পিছনের দিক দিয়ে বেরিয়ে যায় । তখন অমরনাথের স্ত্রী রান্নাঘরে ছিলেন । আশু এবং তাঁর ভাই বাড়ির মধ্যে ছিলেন । অমরনাথকে গুলি করার পর ভয় এবং আতঙ্কে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন তাঁরা । পরে পুলিশ দেহ উদ্ধার করে এবং দ্রুততার সঙ্গে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করে ।"
সরকারি আইনজীবী আরও বলেন, "আশুকে নিয়ে গিয়ে তোলাবাজির গ্রুপে ভিড়িয়ে দিতে চেয়েছিল দলটি । কিন্তু অপরাধের দুনিয়া থেকে বেরিয়ে একটি কাপড়ের দোকানে কাজ করছিলেন আশু । সেই রোষে ওই আক্রমণ ও খুনের ঘটনা ।"