বসিরহাট, 28 জুন: অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে মৃত্যু হল খাদিম-কর্তা অপহরণ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বন্দির । মৃতের নাম মিজানুর রহমান সর্দার । সূত্রের খবর, প্রায় সাড়ে 11 বছর ধরে সে সাজা খাটছিল প্রেসিডেন্সি জেলে । কয়েকদিনের মধ্যে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল তাঁর । কিন্তু তার আগেই বৃহস্পতিবার জেলের ভিতরে অসুস্থ হয়ে পড়েন মিজানুর রহমান । সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার ন্যাশানাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে । সেখানেই রাতে মৃত্যু হয় খাদিম-কর্তা অপহরণ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বন্দি মিজানুর রহমানের ।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, খাদিম-কর্তা অপহরণ মামলায় দ্বিতীয় পর্যায়ে যে শুনানি শুরু হয়েছিল তাতে বসিরহাটের মিজানুর রহমান ছাড়াও ছিল আরও কয়েকজন । এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল প্রত্যেকেই । সেই থেকে প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি ছিলেন মিজানুর রহমান সর্দার । কিন্তু কয়েক দিন পরই জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল তাঁর । তার আগে সাজাপ্রাপ্ত এই বন্দির রহস্য মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেল চত্বরে । শুধুই কী অসুস্থ? নাকি এর পিছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে স্পষ্ট হবে। এদিকে, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চেয়ে জেল কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু করেছে নিহত মিজানুরের পরিবার ।
2001 সালের 25 জুলাই তিলজলা থানা এলাকার সি এন রায় রোড থেকে অপহরণ করা হয় খাদিম-কর্তা পার্থ রায় বর্মণকে ৷ অপহরণের সময় দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে আহতও হয় সে । ব্য়বসায়ী অপহরণের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে তৎকালীন রাজ্য রাজনৈতিক মহল ৷ এরপর বহু চর্চিত এই অপহরণ মামলার তদন্তভার যায় সিআইডি-এর হাতে । তদন্তে নেমে অপহরণ-কাণ্ডের পিছনে আন্তর্জাতিক অপরাধচক্রের হদিস পান সিআইডি আধিকারিকরা । মূল চক্রী হিসেবে আফতাব আনসারি-সহ আরও চারজনকে গ্রেফতার করা হয় ।
মামলার প্রথম পর্যায়ের রায়ে আফতাব-সহ পাঁচ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে । পরে ধরা পড়ে আরও কয়েক জন । সেই তালিকাতে ছিল মিজানুর । 2009 সালে মামলার দ্বিতীয় পর্যায়ে শুনানি শুরু হয় । দীর্ঘদিন ধরে বিচারপ্রক্রিয়া চলার পরে তাঁদের দোষী সাব্যস্ত করে আদালত । এরই মধ্যে জেলে অসুস্থ হয়ে সাজাপ্রাপ্ত বন্দির মৃত্যুর ঘটনায় অস্বস্তিতে জেল কর্তৃপক্ষ ।