মালদা, 4 এপ্রিল: শহর জুড়ে পোস্টার ৷ তাতে ইংরেজবাজারের বিজেপি বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরীর ছবি ৷ উপরে লেখা, 'সন্ধান চাই' ৷ ছবির মধ্যে 'মিসিং' ছাপও দেওয়া ৷ এই পোস্টার ঘিরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তোলপাড় মালদা শহর ৷ লোকসভা নির্বাচনে দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী করেছে শ্রীরূপাকে ৷ রাজনৈতিক মহল বলছে, নির্বাচনী রাজনীতিরই শিকার ইংরেজবাজারের বিধায়ক ৷ এ নিয়ে খোদ শ্রীরূপা সংবাদমাধ্যমকে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি না হলেও দলের তরফে সরাসরি দায়ী করা হয়েছে তৃণমূলকে ৷ যদিও ঘাসফুল শিবিরের দাবি, এই ঘটনা বিজেপির দলীয় কোন্দলের উদাহরণ ৷
সকালে প্রথম এই পোস্টারের দেখা মেলে মালদা শহরের কেন্দ্রস্থল, ফোয়ারা মোড় এবং সংলগ্ন এলাকায় ৷ পরে দেখা যায়, শুধু ওই এলাকা নয়, শহরের বিভিন্ন এলাকাতেই সাঁটা রয়েছে এই পোস্টার ৷ এদিনই মালদা নির্বাচনী সভা করতে আসেন শুভেন্দু অধিকারী ৷ জেলায় তাঁর পা পড়ার আগে এমন পোস্টারে শুধু রাজনৈতিক মহল নয়, চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ৷
গোটা বিষয়টি নিয়ে 'স্পিকটি নট' শ্রীরূপা ৷ তাঁর সাফ কথা, এ নিয়ে তিনি একটি শব্দও বলবেন না ৷ তবে বিজেপির দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পার্থসারথি ঘোষ ইটিভি ভারতকে বলেন, "কারা এই কাজ করেছে তা খুব স্বাভাবিকভাবেই বোঝা যাচ্ছে ৷ এটা রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের অপপ্রচার ৷ এর আগেও তারা এই ধরনের পোস্টার সেঁটেছিল ৷ কারণ, এবারের নির্বাচনে মানুষের কাছে যাওয়া এবং ভোট চাওয়ার মুখ তাদের নেই ৷ এই রাজ্য সরকারের আমলে একের পর এক প্রচুর দুর্নীতি প্রকাশ পেয়েছে ৷ তৃণমূল শাসিত রাজ্য সরকার রাজ্যের সামগ্রিক উন্নয়ন করতে ব্যর্থ ৷"
তাঁর কথায়, "শুধু ভারত নয়, গোটা বিশ্ব নরেন্দ্র মোদির প্রশংসায় পঞ্চমুখ ৷ নরেন্দ্র মোদিকে তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী করতে, তাঁর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকার গড়ার জন্য মানুষ উন্মুখ হয়ে আছে ৷ এই অবস্থায় ওরা কোনও বিষয় নিয়েই মানুষের কাছে যেতে পারছে না ৷ ওদের দেখে আমার করুণা হচ্ছে ৷ গত 2 মার্চ দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী হিসাবে শ্রীরূপাদির নাম ঘোষিত হয়েছে ৷ তারপর থেকে তিনি গোটা মালদা ঘুরে বেড়াচ্ছেন ৷ বুধবার পারলালপুরে আগুন লেগেছিল ৷ সেখানে গিয়ে তিনি ত্রাণও দিয়ে এসেছেন ৷ এরপর এই ধরনের অপপ্রচার করে কোনও লাভ হবে না ৷ মানুষের মধ্যে কোনও প্রভাব পড়বে না ৷ আমরা এ নিয়ে একদমই উদ্বিগ্ন নই ৷ কারণ, এর মধ্যে কোনও সত্যতা নেই ৷ এই ধরনের অপপ্রচার করে ওরা নিজেরাই নিজেদের পরিচয় দিচ্ছে ৷"
পার্থর অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র আশিস কুণ্ডু বলেন, "কেউ কোনও অভিযোগ করলে তার সপক্ষে প্রমাণ দিতে হবে ৷ আসলে শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরীকে খুঁজে পাচ্ছে না বলে বিজেপির কর্মীরাই তাঁর প্রচারে নামতে চাইছেন না ৷ নিজেদের অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আনতে তাঁরা নিজেরাই পোস্টার ছাপিয়ে বিভিন্ন জায়গায় সেঁটে দিয়েছেন ৷ আমার মনে হয়, এর সঠিক তদন্ত হওয়া উচিত ৷ তবে এটা ঠিক, শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী গত পাঁচ বছর ধরে নিখোঁজই ছিলেন ৷ তাঁকে করোনার সময় পাওয়া যায়নি ৷ মানুষের বিপদে কিংবা আনন্দেও তাঁকে আমরা পাই না ৷ পাঁচ বছর পর ভোটে দাঁড়াবেন বলে আবার এসেছেন ৷ গোটা দক্ষিণ মালদার মানুষ তাঁকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। এটা কিন্তু বাস্তব ৷ মানুষ বলছে, পাঁচ বছর আগে তিনি ভোট চাইতে এসেছিলেন, পাঁচ বছর পর নাটক করতে ফের মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যাচ্ছেন ৷"
আরও পড়ুন: