ETV Bharat / state

গ্যারেজে গনি খানের মার্সিডিস বেঞ্জ, ভোটের আগে নস্টালজিক ভাইপো ইশা - Lok Sabha Election 2024

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Apr 22, 2024, 9:23 PM IST

Ghani Khan Choudhury's Car: লোকসভা নির্বাচনের সময় মার্সিডিস বেঞ্জ করে এলাকায় ঘুরে বেড়াতেন বরকত গনি খান ৷ তিনি আর নেই ৷ তবে কোতওয়ালি ভবনের গ্যারেজে রয়েছে তাঁর গাড়ি ৷ জ্যেঠুর সেই মার্সিডিস বেঞ্জ নিয়ে নস্টালজিয়ায় ভাসলেন ভাইপো তথা কংগ্রেস প্রার্থী ইশা খান চৌধুরী ৷

Ghani Khan Choudhury Car
Ghani Khan Choudhury Car
গনি খানের গাড়ি নিয়ে ভোটের আগে নস্টালজিয়ায় মজে ভাইপো ইশা

মালদা, 22 এপ্রিল: 1980 থেকে 2004 সাল ৷ আটটি লোকসভা নির্বাচনে অজেয় ছিলেন প্রয়াত এবিএ গনি খান চৌধুরী ৷ তার আগে 1957 থেকে 1972 সাল পর্যন্ত পাঁচ দফায় বিধায়কও ছিলেন তিনি ৷ এখনও রাজনৈতিক মহলে শোনা যায়, ভোটে জিতে জিতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন গনি খান ৷ তাই শেষের দিকে ভোটের দিন তাঁর সাধের মার্সিডিস বেঞ্জকে বেশিক্ষণ রাস্তায় দেখা যেত না ৷ সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ভোট দিতেন ৷ গাড়ি নিয়ে এদিক ওদিক ঘুরতেন ৷ গাড়ির জানালার কাচ নামিয়ে ডেকে নিতেন মানুষজনকে ৷ ভোটের কোনও কথা নয়, কে কেমন আছে জানতে চাইতেন ৷ বেলা 12টার মধ্যে কোতওয়ালি ভবনে ফিরে এসে মধ্যাহ্নভোজ ৷ তারপর সটান দিবানিদ্রা ৷

Ghani Khan Choudhury
গ্যারেজে বরকত গনি খানের মার্সিডিস বেঞ্জ

বরকত গনি খান চৌধুরী আজ নেই ৷ কিন্তু প্রতি ভোটের আগেই জেগে ওঠেন তিনি ৷ মোদি থেকে মমতা, রাহুল থেকে বিমান, সবার মুখেই উঠে আসে তাঁর নাম ৷ তাঁর অপ্রতিরোধ্য যাত্রার একমাত্র সঙ্গী, তাঁর সেই মার্সিডিস বেঞ্জ আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে খান চৌধুরী পরিবারের গ্যারাজে ৷ অনেক ঘটনার সাক্ষী হয়ে ৷ চব্বিশের লোকসভা ভোটের মুখে সেই গাড়ি দেখলে অনেকেই নস্টালজিয়ায় ভেসে যান ৷

1982 থেকে 84 ৷ মাত্র দু'বছরের জন্য রেলমন্ত্রী হয়েছিলেন বরকত সাহেব ৷ কিন্তু এই দু'বছর তিনি যে কাজ করে গিয়েছেন, তার জন্য আজও তাঁকে মনে রেখেছে বাংলা ৷ সেই সময় এই রাজ্যের জন্য একের পর এক রেলের উন্নয়ন করে গিয়েছেন ৷ একের পর এক নতুন ট্রেন চালু করেছেন ৷ প্রচুর মানুষকে চাকরি দিয়েছেন ৷ সেই সময় দিল্লির ক্ষমতার অলিন্দে থাকা লোকজন তাঁর গায়ে প্রাদেশিকতার স্টিকার সেঁটে দিয়েছিল ৷ প্রতিবাদ না করে তিনি বলেছিলেন, মালদা তথা বাংলার মানুষের জন্যই তিনি মন্ত্রী হতে পেরেছেন ৷ তাই মালদার মানুষকে, বাংলার মানুষকে এর প্রতিদান দেওয়া তাঁর কর্তব্য, তাঁর ধর্ম ৷

Ghani Khan Choudhury
কোতওয়ালি ভবন

2006 সালে প্রয়াত হয়েছেন গনি খান ৷ তাঁর মৃত্যুর পর ছোট ভাই আবু হাসেম খান চৌধুরী তাঁর রেখে যাওয়া সাংসদের চেয়ার সামলেছেন ৷ অসুস্থতার জন্য এবার তিনি ভোটের ময়দানে নেই ৷ সেই জায়গায় কংগ্রেস প্রার্থী করেছে গনি খানের ভ্রাতুষ্পুত্র ইশা খান চৌধুরীকে ৷ ইশার ইচ্ছে, যে গাড়ির সামনের সিটে বসে শুধু জানালার কাচ নামিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলতেন প্রয়াত বরকত সাহেব, পার্টস পাওয়া গেলে তিনি জ্যেঠুর সেই মার্সিডিস বেঞ্জকে আবার রাস্তায় নামাতে চান ৷

ইটিভি ভারতকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ইশা বলেন, "জ্যেঠু আমাদের রাজনীতির পথ দেখিয়েছেন ৷ রাজনৈতিক শিক্ষা দিয়েছেন ৷ প্রতিদিনের রাজনৈতিক দিন যাপনে আমরা তাঁকে মনে করি ৷ তাঁর দেওয়া শিক্ষাকে মেনে চলি ৷ জ্যেঠুর মার্সিডিস বেঞ্চ অনেক পুরোনো মডেলের ৷ আশি সালের মডেল ৷ এটা ঠিক, মালদার মানুষ আজও সেই গাড়িকে মনে রেখেছে ৷ আমাকে অনেকে সে কথা বলেছেন ৷ জানিয়েছেন, এই গাড়ি করেই আপনার জ্যেঠু গ্রামে আসতেন ৷ অনেক সময় গাড়ি থেকে নামতেনও না ৷ জানালার কাচ খুলে জিজ্ঞেস করতেন, গ্রামের সবাই ঠিক আছে তো? তোমরা সবাই ঠিক আছ? তাতেই মানুষ খুশি হতো ৷"

তাঁর কথায়, "জেঠুর সঙ্গে তাঁর গাড়ির ইমেজের একটা লিংক আপ আছে ৷ এখনও ৷ তাই এখনও গাড়িটার একটা সেন্টিমেন্টাল ভ্যালু আছে ৷ কিন্তু 44 বছরের পুরোনো এই গাড়ির পার্টস এখন পাওয়া যায় কি না সেটা জানি না ৷ তবে মাঝেমধ্যে মনে হয়, যদি গাড়িটাকে ঠিক করে ফের রাস্তায় নামাতে পারতাম...তাতে আমার সঙ্গে জেলার মানুষও খুশি হতো ৷ বরকত গনি খান চৌধুরীর স্মৃতি আরও জীবন্ত হতো ৷"

আরও পড়ুন:

  1. মনোনয়ন পেশের আগে মৃত্যুবার্ষিকীতে গনি খান চৌধুরীকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন ঈশার, অনুপস্থিত বামেরা
  2. ছেলেকে জেতাতে আইএসএফকে প্রার্থী না-দেওয়ার আর্জি জানিয়ে চিঠি ডালুর
  3. গণি খানকে নিয়ে ফিরহাদের মন্তব্যের পালটা দিলেন ভাইপো ঈশা

গনি খানের গাড়ি নিয়ে ভোটের আগে নস্টালজিয়ায় মজে ভাইপো ইশা

মালদা, 22 এপ্রিল: 1980 থেকে 2004 সাল ৷ আটটি লোকসভা নির্বাচনে অজেয় ছিলেন প্রয়াত এবিএ গনি খান চৌধুরী ৷ তার আগে 1957 থেকে 1972 সাল পর্যন্ত পাঁচ দফায় বিধায়কও ছিলেন তিনি ৷ এখনও রাজনৈতিক মহলে শোনা যায়, ভোটে জিতে জিতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন গনি খান ৷ তাই শেষের দিকে ভোটের দিন তাঁর সাধের মার্সিডিস বেঞ্জকে বেশিক্ষণ রাস্তায় দেখা যেত না ৷ সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ভোট দিতেন ৷ গাড়ি নিয়ে এদিক ওদিক ঘুরতেন ৷ গাড়ির জানালার কাচ নামিয়ে ডেকে নিতেন মানুষজনকে ৷ ভোটের কোনও কথা নয়, কে কেমন আছে জানতে চাইতেন ৷ বেলা 12টার মধ্যে কোতওয়ালি ভবনে ফিরে এসে মধ্যাহ্নভোজ ৷ তারপর সটান দিবানিদ্রা ৷

Ghani Khan Choudhury
গ্যারেজে বরকত গনি খানের মার্সিডিস বেঞ্জ

বরকত গনি খান চৌধুরী আজ নেই ৷ কিন্তু প্রতি ভোটের আগেই জেগে ওঠেন তিনি ৷ মোদি থেকে মমতা, রাহুল থেকে বিমান, সবার মুখেই উঠে আসে তাঁর নাম ৷ তাঁর অপ্রতিরোধ্য যাত্রার একমাত্র সঙ্গী, তাঁর সেই মার্সিডিস বেঞ্জ আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে খান চৌধুরী পরিবারের গ্যারাজে ৷ অনেক ঘটনার সাক্ষী হয়ে ৷ চব্বিশের লোকসভা ভোটের মুখে সেই গাড়ি দেখলে অনেকেই নস্টালজিয়ায় ভেসে যান ৷

1982 থেকে 84 ৷ মাত্র দু'বছরের জন্য রেলমন্ত্রী হয়েছিলেন বরকত সাহেব ৷ কিন্তু এই দু'বছর তিনি যে কাজ করে গিয়েছেন, তার জন্য আজও তাঁকে মনে রেখেছে বাংলা ৷ সেই সময় এই রাজ্যের জন্য একের পর এক রেলের উন্নয়ন করে গিয়েছেন ৷ একের পর এক নতুন ট্রেন চালু করেছেন ৷ প্রচুর মানুষকে চাকরি দিয়েছেন ৷ সেই সময় দিল্লির ক্ষমতার অলিন্দে থাকা লোকজন তাঁর গায়ে প্রাদেশিকতার স্টিকার সেঁটে দিয়েছিল ৷ প্রতিবাদ না করে তিনি বলেছিলেন, মালদা তথা বাংলার মানুষের জন্যই তিনি মন্ত্রী হতে পেরেছেন ৷ তাই মালদার মানুষকে, বাংলার মানুষকে এর প্রতিদান দেওয়া তাঁর কর্তব্য, তাঁর ধর্ম ৷

Ghani Khan Choudhury
কোতওয়ালি ভবন

2006 সালে প্রয়াত হয়েছেন গনি খান ৷ তাঁর মৃত্যুর পর ছোট ভাই আবু হাসেম খান চৌধুরী তাঁর রেখে যাওয়া সাংসদের চেয়ার সামলেছেন ৷ অসুস্থতার জন্য এবার তিনি ভোটের ময়দানে নেই ৷ সেই জায়গায় কংগ্রেস প্রার্থী করেছে গনি খানের ভ্রাতুষ্পুত্র ইশা খান চৌধুরীকে ৷ ইশার ইচ্ছে, যে গাড়ির সামনের সিটে বসে শুধু জানালার কাচ নামিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলতেন প্রয়াত বরকত সাহেব, পার্টস পাওয়া গেলে তিনি জ্যেঠুর সেই মার্সিডিস বেঞ্জকে আবার রাস্তায় নামাতে চান ৷

ইটিভি ভারতকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ইশা বলেন, "জ্যেঠু আমাদের রাজনীতির পথ দেখিয়েছেন ৷ রাজনৈতিক শিক্ষা দিয়েছেন ৷ প্রতিদিনের রাজনৈতিক দিন যাপনে আমরা তাঁকে মনে করি ৷ তাঁর দেওয়া শিক্ষাকে মেনে চলি ৷ জ্যেঠুর মার্সিডিস বেঞ্চ অনেক পুরোনো মডেলের ৷ আশি সালের মডেল ৷ এটা ঠিক, মালদার মানুষ আজও সেই গাড়িকে মনে রেখেছে ৷ আমাকে অনেকে সে কথা বলেছেন ৷ জানিয়েছেন, এই গাড়ি করেই আপনার জ্যেঠু গ্রামে আসতেন ৷ অনেক সময় গাড়ি থেকে নামতেনও না ৷ জানালার কাচ খুলে জিজ্ঞেস করতেন, গ্রামের সবাই ঠিক আছে তো? তোমরা সবাই ঠিক আছ? তাতেই মানুষ খুশি হতো ৷"

তাঁর কথায়, "জেঠুর সঙ্গে তাঁর গাড়ির ইমেজের একটা লিংক আপ আছে ৷ এখনও ৷ তাই এখনও গাড়িটার একটা সেন্টিমেন্টাল ভ্যালু আছে ৷ কিন্তু 44 বছরের পুরোনো এই গাড়ির পার্টস এখন পাওয়া যায় কি না সেটা জানি না ৷ তবে মাঝেমধ্যে মনে হয়, যদি গাড়িটাকে ঠিক করে ফের রাস্তায় নামাতে পারতাম...তাতে আমার সঙ্গে জেলার মানুষও খুশি হতো ৷ বরকত গনি খান চৌধুরীর স্মৃতি আরও জীবন্ত হতো ৷"

আরও পড়ুন:

  1. মনোনয়ন পেশের আগে মৃত্যুবার্ষিকীতে গনি খান চৌধুরীকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন ঈশার, অনুপস্থিত বামেরা
  2. ছেলেকে জেতাতে আইএসএফকে প্রার্থী না-দেওয়ার আর্জি জানিয়ে চিঠি ডালুর
  3. গণি খানকে নিয়ে ফিরহাদের মন্তব্যের পালটা দিলেন ভাইপো ঈশা
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.