ETV Bharat / state

যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরোধী, 'এক দেশ এক নির্বাচন' নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ মমতার

মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত শুধু অসাংবিধানিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরোধী । এর মাধ্যমে বিরোধীদের বুলডোজ করার চেষ্টা করা হচ্ছে ।

CM Mamata Banerjee
এক দেশ এক নির্বাচন বিল নিয়ে ফের কেন্দ্রকে আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রীর (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : 3 hours ago

Updated : 3 hours ago

কলকাতা, 12 ডিসেম্বর: এক দেশ এক নির্বাচন নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কড়া আক্রমণ শানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত বিলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে ৷ এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, "কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বিশেষজ্ঞ এবং বিরোধী নেতাদের দ্বারা উত্থাপিত প্রতিটি বৈধ উদ্বেগকে উপেক্ষা করেছে ।" তাঁর দাবি, "কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত শুধু অসাংবিধানিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরোধী । এর মাধ্যমে বিরোধীদের বুলডোজ করার চেষ্টা করা হচ্ছে ।"

এক দেশ এক নির্বাচন নিয়ে আগেই দলীয়ভাবে নিজের বিরোধিতার কথা জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এক দেশ এক নির্বাচন বিলে সিলমোহর দেওয়ার পরই তা নিয়ে কেন্দ্রের কঠোর সমালোচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী । গত এপ্রিল মাসে এই নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠিও দিয়েছিলেন তিনি ৷

সেই চিঠিতে এক দেশ এক নির্বাচন নিয়ে নিজের উদ্বেগের কথা জানিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো । সে সময় তিনি লিখেছিলেন, "এক দেশ এক নির্বাচন নীতি কার্যকর করা হলে দেশে আর কখনও ভোটই হবে না । কেউ ভোট দিয়ে নিজের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন না । তৈরি হবে স্বৈরাচারী সরকার ।"

এক দেশ এক নির্বাচন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন আরও বলেছেন, "এটা সাবধানে বিবেচনার মাধ্যমে করা সংস্কার নয় । এটা করা হয়েছে ভারতের গণতন্ত্র এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে দুর্বল করার লক্ষ্য নিয়ে । কর্তৃত্ববাদী মনোভাব থেকে ।"

এ দিন মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকার সংসদে এই বিল নিয়ে এলে কঠোরভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরা এর বিরোধিতা করবেন । তিনি এটাও স্পষ্ট করেছেন, বাংলা কখনওই দিল্লির স্বৈরাচারী সিদ্ধান্তের কাছে মাথা নোয়াবে না । তিনি বলছেন, এই লড়াই তিনি চালাবেন, ভারতের গণতন্ত্রকে স্বৈরতন্ত্রের হাত থেকে বাঁচানোর জন্যই ।

সোশাল মিডিয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্য থেকেই পরিষ্কার, এক দেশ এক নির্বাচনের নীতিকে এত সহজে মেনে নেবে না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এবং তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেস ।

একা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন, এই নিয়ে সরব হয়েছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও । সরব হয়েছেন বাম, কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারাও । এ দিন এনিয়ে বলতে গিয়ে বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমি আগেই অধ্যক্ষদের সম্মেলনে এর বিরোধিতা করে এসেছিলাম । অতীতে অধ্যক্ষদের সম্মেলনে এ ধরনের একটি এজেন্ডা পাশ করানোর চেষ্টা হয়েছিল । তখন এর বিরোধিতা করেছিলাম । তখনই বুঝেছিলাম দেশের সরকারের এ ধরনের একটা হিডেন এজেন্ডা রয়েছে ।"

এ দিকে, এক দেশ এক ভোটের বিরোধিতা করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারও । তিনি বলেন, "এক দেশ এক ভোট বিষয়টাই গণতান্ত্রিক কি না আগে দেখতে হবে । এমনটা হলে গোটা দেশে একটাই পার্লামেন্ট করতে হয় । সংবিধান প্রণেতা আমাদের দেশে আপার হাউস লোয়ার হাউজের যে কনসেপ্ট রেখে গিয়েছিলেন এই পদ্ধতি চালু হলে তা রাখার কোনও মানে নেই ।"

একইভাবে এর সমালোচনা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ । তিনি বলেন, "এক দেশ এক নির্বাচন নীতি ফেডারেল স্ট্রাকচারের পরিপন্থী । নানা ভাষা, নানা মত, নানা পরিধানের দেশ ভারতবর্ষ । বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য ৷" এক দেশ এক নির্বাচন চালু হলে তা কতটা রক্ষা করা যাবে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তিনি ।

একইভাবে সিপিএম নেতা রবীন দেব বলেন, "এটা আসলে আরএসএস-এর কর্মসূচি কার্যকর করার চেষ্টা হচ্ছে । নরেন্দ্র মোদি'র এই পদক্ষেপ তারই একটা অঙ্গ । এটা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না ।"

যদিও রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি খোলা মনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে । সেক্ষেত্রে বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেছেন, "এটা দীর্ঘদিন ধরেই তাদের ঘোষিত নীতি । এমনটা করা গেলে অর্থ ও সময় দুই বাঁচবে । উন্নয়নকে আরও ত্বরান্বিত করা যাবে ।"

কলকাতা, 12 ডিসেম্বর: এক দেশ এক নির্বাচন নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কড়া আক্রমণ শানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত বিলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে ৷ এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, "কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বিশেষজ্ঞ এবং বিরোধী নেতাদের দ্বারা উত্থাপিত প্রতিটি বৈধ উদ্বেগকে উপেক্ষা করেছে ।" তাঁর দাবি, "কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত শুধু অসাংবিধানিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরোধী । এর মাধ্যমে বিরোধীদের বুলডোজ করার চেষ্টা করা হচ্ছে ।"

এক দেশ এক নির্বাচন নিয়ে আগেই দলীয়ভাবে নিজের বিরোধিতার কথা জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এক দেশ এক নির্বাচন বিলে সিলমোহর দেওয়ার পরই তা নিয়ে কেন্দ্রের কঠোর সমালোচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী । গত এপ্রিল মাসে এই নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠিও দিয়েছিলেন তিনি ৷

সেই চিঠিতে এক দেশ এক নির্বাচন নিয়ে নিজের উদ্বেগের কথা জানিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো । সে সময় তিনি লিখেছিলেন, "এক দেশ এক নির্বাচন নীতি কার্যকর করা হলে দেশে আর কখনও ভোটই হবে না । কেউ ভোট দিয়ে নিজের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন না । তৈরি হবে স্বৈরাচারী সরকার ।"

এক দেশ এক নির্বাচন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন আরও বলেছেন, "এটা সাবধানে বিবেচনার মাধ্যমে করা সংস্কার নয় । এটা করা হয়েছে ভারতের গণতন্ত্র এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে দুর্বল করার লক্ষ্য নিয়ে । কর্তৃত্ববাদী মনোভাব থেকে ।"

এ দিন মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকার সংসদে এই বিল নিয়ে এলে কঠোরভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরা এর বিরোধিতা করবেন । তিনি এটাও স্পষ্ট করেছেন, বাংলা কখনওই দিল্লির স্বৈরাচারী সিদ্ধান্তের কাছে মাথা নোয়াবে না । তিনি বলছেন, এই লড়াই তিনি চালাবেন, ভারতের গণতন্ত্রকে স্বৈরতন্ত্রের হাত থেকে বাঁচানোর জন্যই ।

সোশাল মিডিয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্য থেকেই পরিষ্কার, এক দেশ এক নির্বাচনের নীতিকে এত সহজে মেনে নেবে না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এবং তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেস ।

একা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন, এই নিয়ে সরব হয়েছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও । সরব হয়েছেন বাম, কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারাও । এ দিন এনিয়ে বলতে গিয়ে বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমি আগেই অধ্যক্ষদের সম্মেলনে এর বিরোধিতা করে এসেছিলাম । অতীতে অধ্যক্ষদের সম্মেলনে এ ধরনের একটি এজেন্ডা পাশ করানোর চেষ্টা হয়েছিল । তখন এর বিরোধিতা করেছিলাম । তখনই বুঝেছিলাম দেশের সরকারের এ ধরনের একটা হিডেন এজেন্ডা রয়েছে ।"

এ দিকে, এক দেশ এক ভোটের বিরোধিতা করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারও । তিনি বলেন, "এক দেশ এক ভোট বিষয়টাই গণতান্ত্রিক কি না আগে দেখতে হবে । এমনটা হলে গোটা দেশে একটাই পার্লামেন্ট করতে হয় । সংবিধান প্রণেতা আমাদের দেশে আপার হাউস লোয়ার হাউজের যে কনসেপ্ট রেখে গিয়েছিলেন এই পদ্ধতি চালু হলে তা রাখার কোনও মানে নেই ।"

একইভাবে এর সমালোচনা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ । তিনি বলেন, "এক দেশ এক নির্বাচন নীতি ফেডারেল স্ট্রাকচারের পরিপন্থী । নানা ভাষা, নানা মত, নানা পরিধানের দেশ ভারতবর্ষ । বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য ৷" এক দেশ এক নির্বাচন চালু হলে তা কতটা রক্ষা করা যাবে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তিনি ।

একইভাবে সিপিএম নেতা রবীন দেব বলেন, "এটা আসলে আরএসএস-এর কর্মসূচি কার্যকর করার চেষ্টা হচ্ছে । নরেন্দ্র মোদি'র এই পদক্ষেপ তারই একটা অঙ্গ । এটা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না ।"

যদিও রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি খোলা মনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে । সেক্ষেত্রে বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেছেন, "এটা দীর্ঘদিন ধরেই তাদের ঘোষিত নীতি । এমনটা করা গেলে অর্থ ও সময় দুই বাঁচবে । উন্নয়নকে আরও ত্বরান্বিত করা যাবে ।"

Last Updated : 3 hours ago
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.