কলকাতা, 14 ফেব্রুয়ারি: পরাধীন ভারতে তৈরি হয়েছিল কলকাতা কর্পোরেশনের ছাপাখানা। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ও ভালো পরিমাণে কাজ করা হত। এক সময় দু'শো-র বেশি কর্মী ছিল সেখানে। সরকারের অন্যান্য বিভাগের প্রয়োজনীয় কাজও করা হত। তবে যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে না-পেরে পিছিয়ে পড়ে। কর্মীও সংকোচন করা হয়। গিয়ে দাঁড়ায় জনা কুড়িতে। কেন্দ্রীয় ভবনের নীচে বিরাট অংশজুড়ে সেই ছাপাখানা বেশ কয়েক বছর আগে তালা ঝুলিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। এবার সেখান থেকে ছাপাখানা চিহ্নটাও মুছে ফেলা হল। বিরাট জায়গা সংস্কার করে করা হচ্ছে ঠিকা রিজিওনাল অফিস।
এই অফিস এতদিন ছিল ট্যাংরার শিল লেনে। সেই অফিসকেই কলকাতা কর্পোরেশনে তুলে আনা হচ্ছে। মেয়রের ঘোষণা মতো এক ছাদের তলাতেই হবে ঠিকার সমস্ত কাজ। কলকাতা কর্পোরেশন সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি ইতালি ও অপরটি ইংল্যান্ড থেকে সেই আমলের ছাপার যন্ত্র। লেটার প্রেস আনা হয়েছিল। সেগুলো কয়েক বছর আগে সরিয়ে টাউন হলের মিউজিয়াম রাখা হয়েছে যাতে জনগণ দেখতে পারেন। সেই ঐতিহ্যশালী যন্ত্র ছাড়াও পরে একটি অফসেট মেশিন ও কম্পিউটার ছিল।
সেগুলো বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। একশো বছরের প্রাচীন ছাপাখানা আজ বিলীন। শুধুই কর্পোরেশনের নথিতে ইতিহাস হয়ে থাকবে এখন থেকে। এই ঐতিহ্যশালী ছাপাখানা বিলীন হয়ে যাওয়াতে কর্মরতদের মধ্যে আক্ষেপ ও হতাশার সুর। কতই স্মৃতি ছিল। সবটাই অতীত। এই বিষয় কলকাতা কর্পোরেশনের এক আধিকারিক জানান, সত্যি এটা মন খারাপের। ঐতিহ্যের সমাপ্তি বলা চলে। তবে তার চিহ্ন মূল সেই ব্রিটিশদের আনা ছাপার যন্ত্র সংরক্ষণ করা হয়েছে।
বিরাট জায়গাকে এখন কাজে লাগানো হচ্ছে। তাতে বহু মানুষ উপকৃত হবেন। ঐতিহ্যের সমাপ্তি হলেও আধুনিক ছাপাখানা তৈরির পরিকল্পনা আছে। সেখানে আধুনিক যন্ত্র বসবে। কলকাতা কর্পোরেশনের বরাত ছাড়াও অন্য সংস্থার কাজের বরাতও নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: