কলকাতা 4 সেপ্টেম্বর: পথে নামল বাংলা । ঠিক 9টা বাজতেই অন্ধকার হয়ে গেল কলকাতা থেকে শুরু করে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা । রাজভবনে আলো নিভিয়ে প্রতিবাদে সামিল হলেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান সিভি আনন্দ বোস । আরজি কর হাসপাতালে এলেন নির্যাতিতার বাবা ও মা । আগুনের পরশমণি গানের সুর ধ্বনিত হল নির্যাতিতার জন্য ।
শ্যামবাজারে আলাদা করে প্রতিবাদের ব্যবস্থা হয়েছিল । শহর কলকাতার আইকনিক নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর মূর্তির নীচে মোমবাতি থেকে শুরু করে প্রদীপ হাতে প্রতিবাদে সামিল হলেন বহু মানুষ । সবাই এক সুরে গাইলেন, "আমরা করব জয়..." ।
নির্যাতিতার বাবা বলেন, "আজ 27 দিন বাদে আর জি করে যাঁরা আন্দোলন করছেন, আমি তাঁদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছি। আমার মনের জোর এঁদের থেকে আসছে । আমার শিরদাঁড়া আর মনোবল শক্ত করে এসেছি । মন থেকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি । আমার আশীর্বাদ উপস্থিতি সব সময় রয়েছে ।
মা বলেন, "আজ আমি আরজি করে এসেছি । আরজি কর আমার একটা মেয়ে কেড়ে নিয়েছে, কিন্তু লক্ষ লক্ষ ছেলে মেয়ে দিয়েছে । আজ একটু শান্তি পেয়েছি । আর পারছিলাম না, যাঁরা আমার জন্য পথে নেমেছেন, তাঁরাই আমার শক্তি ।"
প্রতিবাদ কলকাতার জিনে । বিশেষ করে কলেজ স্ট্রিট বা যাদবপুরের মতো জায়গায় । দু'টি জায়গারই দখল নিল জনতা । প্রতিবাদে সামিল হওয়া প্রতিটি মানুষের ঘরের মেয়ে ওই নির্যাতিতা । এ কথা মাথায় রেখেই শুরু হল প্রতিবাদ । সারাদিনই হয়েছে পথনাটিকা থেকে শুরু করে সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ ।
নির্যাতিতার অপরাধীদের শাস্তি ও বিচারের দাবিতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে দু'মিনিটের জন্য নীরবতা পালন করা হয়। এদিন জমায়েত হওয়া মানুষের মুখে ছিল না কোনও রাজনৈতিক স্লোগান ৷ ছিল একটাই দাবি, উই ওয়ান্ট জাস্টিস ৷ এদিন শহর থেকে শহরতলির বিভিন্ন প্রান্তে দেখা গিয়েছে হিউমেন চেন ।
আরজি করে পড়ুয়া-চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে জুনিয়র ডাক্তারদের ডাকে কলকাতার পাশাপাশি রাত দখলে সরব কবিগুরুর বোলপুর-শান্তিনিকেতন ৷ রতনপল্লী থেকে শান্তিনিকেতন- রাস্তাজুড়ে গানে গানে, স্লোগানে মিছিল করেন পড়ুয়া, আশ্রমিক, প্রাক্তনী, অধ্যাপক-অধ্যাপিকা, শিক্ষক-শিক্ষিকা, সাধারণ মানুষজন ৷ আরজি কর নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের শুনানি পিছিয়ে যাওয়ায় স্লোগান ওঠে 'রাজ্য-কেন্দ্র আতাঁত ছাড়ো, আরজি করের বিচার করো' ৷
পাশাপাশি মেদিনীপুর শহরের কলেজিয়েট চত্বরেই এই প্রদীপ জ্বালিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় । যেখানে হাজার হাজার মানুষ হাজির হন এবং প্রতিবাদে অংশ নেন । অন্যদিকে, মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ পড়ুয়া ও ডাক্তার-সহ চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে জড়িত মানুষজন অংশগ্রহণ করেন এই কর্মসূচিতে ৷