ETV Bharat / state

ফের বিদেশি রেক দৌড়ল দমদম-কবি সুভাষ রুটে, আরও কী কী সুবিধা পাবেন যাত্রীরা ? - Kolkata Metro Rail - KOLKATA METRO RAIL

Chinese Rake in Kolkata Metro: চার বছর অপেক্ষার শেষ ৷ নর্থ-সাউথ মেট্রো করিডোরে এবার পরিষেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আরও একটি চিনা রেক। সম্প্রতি, দ্বিতীয় ডালিয়া রেক (মেট্রো রেল) MR-513 চালু করা হয়েছিল। আর আজ থেকে চালু হল তৃতীয় ডালিয়ান রেক MR-514-র পরিষেবা। চিনের ডালিয়ান শহরে তৈরি হয়েছে অত্যাধুনিক মেট্রো রেকগুলি ।

Chinese Rake in Kolkata Metro
তৃতীয় ডালিয়ান রেক MR-514 (নিজস্ব ছবি)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Aug 31, 2024, 5:06 PM IST

কলকাতা, 31 অগস্ট: কলকাতা মেট্রোরেলের নর্থ সাউথ লাইনে শুরু হল তৃতীয় ডালিয়ান রেকের যাত্রী পরিষেবা। দমদম স্টেশন থেকে শুরু হয়ে কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশন পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে দৌড়ল রেক। চলতি মাসের 5 তারিখে এই লাইনেই দ্বিতীয় চিনা রেকটি পরিষেবা দেওয়া চালু করে। এবার এই রুট পরিষেবা দেবে মোট তিনটি চিনের ডালিয়ান শহরের তৈরি অত্যাধুনিক মেট্রো রেক।

ফের বিদেশি রেক দৌড়ল দমদম-কবি সুভাষ রুটে (ইটিভি ভারত)

চিনা রেকটির আজকের যাত্রাপথ- শনিবার বেলা 12.10 মিনিটে রেকটি দমদম স্টেশন থেকে তার প্রথম যাত্রা শুরু করে। এরপর ট্রেনটি দুপুর 1টায় কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশনে পৌঁছয়। পুনরায় দুপুর 1.10 মিনিটে রেকটি কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে দুপুর 2টোয় দমদম পৌঁছয়।

চিনা রেকটির ভারতের যাত্রাপথ- চিনের ডালিয়ান শহর থেকে জাহাজে চেপে ভারতে এসেছিল এই রেকগুলি। তারপর কেটে যায় প্রায় 4 বছর। পাশ করতে হয়েছে অনেক পরীক্ষা। চলেছে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষামূলক দৌড়। নানারকম সংস্কার করা হয়েছে রেকগুলিতে। করোনা অতিমারির জন্য কিছু সময় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল কাজ। তারপর আবার শুরু হয় ট্রায়াল রান এবং সংস্কারের পালা। সেই সব শেষ করে অবশেষে তিনটি ডালিয়ান পরিষেবা দিতে শুরু করল।

চিনা রেকগুলির সুবিধা-

  • সাধারণত নর্থ সাউথ করিডোরে গাড়ির গত প্রতি ঘণ্টায় 55 কিমি হয়ে থাকে। তবে ডালিয়ানের ক্ষেত্রে সেই গতি প্রতি ঘণ্টায় 60 কিমি।
  • পাশাপাশি যাত্রী স্বচ্ছন্দ এবং সুরক্ষার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে।
  • এই রেকের দরজা অন্য রেকগুলির তুলনায় অনেটাই বেশি চওড়া। এই রেকের দরজাগুলো চওড়ায় প্রায় 100 মিলিমিটার। এর ফলে দিনের ব্যস্ত সময় প্রবেশ করা এবং বেরনোর সময় যাত্রীদের সমস্যা হবে অনেক কম।
  • অনন্যা এসি রেকগুলি তুলনায় এই কোচগুলি অনেক বেশি চওড়া, বসার আসনে স্বাচ্ছন্দের বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি কোচের সামনে এবং পিছনে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।
  • অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থাও অনেক বেশি উন্নত। এই রেকগুলি সবক'টিই 8 কোচের।
  • চলার সময় অনেক কম আওয়াজ হবে। এমনটাই দাবি কলকাতা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের।
  • বিশেষভাবে সক্ষম ও বয়স্ক যাত্রীদের জন্য কোচের মধ্যে হুইল চেয়ার রাখারও জায়গা করা রয়েছে।
  • যাত্রীদের বাড়তি সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে এখানে ডিস্ক ব্রেক ব্যবস্থা রয়েছে।
  • যাত্রীরা যাতে কোচে পড়ে না-যান সেই জন্য এন্ট্রি স্কিড ফ্লোরিং ব্যবস্থা করা হয়েছে।
  • যাত্রীদের সুবিধার জন্য ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড রয়েছে যেখানে তিনটি ভাষাতেই স্টেশনের নাম লেখা রয়েছে ৷

পরিবর্তিত মেট্রো- শহর কলকাতায় মেট্রো যখন প্রথম পরিষেবা দেওয়া শুরু করে তখন সবক'টি নন এসি রেখেছিল ৷ তবে ধীরে ধীরে নন এসি রেকগুলিকে বাতিল করে নিয়ে আসা হয় শীততাপ নিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক রেক।

  • বর্তমানে ব্লু লাইনে সীতাতপ নিয়ন্ত্রিত 29টি রেক বিভিন্ন সময় পরিষেবা দেয় ৷
  • অরেঞ্জ লাইনে 3টি রেক ৷
  • পার্পল লাইনে 2টি রেক ৷
  • গ্রিন লাইনে 14টি রেক পরিষেবা দেয় সারা দিনরাতে ৷

চিনা রেকের ইতিহাস-

  • গ্লোবাল টেন্ডারের মাধ্যমে 2019 সালে চিনের ডালিয়ান শহর থেকে জাহাজে করে আসে একটি প্রোটোটাইপ মেট্রো রেক। তবে তারপর কয়েকবার পরীক্ষা হয়েছিল রেকটির। নতুন রেকটিকে যাত্রী পরিষেবার উপযোগী করে তুলতে একগুচ্ছ পরীক্ষা করা হয়। তাই সেইমতোই 2019 সাল থেকে ধাপে ধাপে শুরু হয় পরীক্ষা নিরীক্ষা। পাশাপাশি চলতে থেকে চেক রানও। তবে 2020 সালে পরীক্ষামূলক দৌড় শুরু হলেও লকডাউনের জন্য সেই কাজে ব্যাঘাত ঘটে। সেই সময় রেকটিতে কিছু যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা যায়। তাই পরীক্ষা অসম্পূর্ণ রেখেই চিনা সংস্থার আধিকারিকদের ফিরে যেতে হয়ে দেশে। তারপর কেটে গিয়েছে লম্বা সময়। রেকটি পরীক্ষা বা ট্রায়াল রান করা সম্ভব হয়নি।
  • এরপর করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে রিসোর্ট ডিজাইন অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অর্গানাইজেশন (RDSO) আধিকারিক থেকে শুরু করে মেট্রোরেলের আধিকারিক এবং চিনের সংস্থার আধিকারিকরা শহরে এসে আবার শুরু করেন পরীক্ষা। মেট্রোর যাত্রী পরিষেবা শেষ হওয়ার পরে রাতের দিকে নিয়মিত চলতে থাকে পরীক্ষামূলক দৌড়। ধাপে ধাপে শুরু হবে অসিলিয়েশন পরীক্ষাও। কোচের অসিলিয়েশান পরীক্ষার জন্য শেষ যে পরীক্ষাটি বাকি ছিল তা হল বালির বস্তা নিয়ে চেক রান। সম্প্রতি সেই পরীক্ষাও শেষ হয়েছে। কলকাতা মেট্রো রেলের নন এসি রেকগুলি বাতিল করে তার পরিবর্তে ঝাঁ-চকচকে অত্যাধুনিক রেকের অর্ডার দেওয়া হয় ডালিয়ান রেকের।

কলকাতা, 31 অগস্ট: কলকাতা মেট্রোরেলের নর্থ সাউথ লাইনে শুরু হল তৃতীয় ডালিয়ান রেকের যাত্রী পরিষেবা। দমদম স্টেশন থেকে শুরু হয়ে কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশন পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে দৌড়ল রেক। চলতি মাসের 5 তারিখে এই লাইনেই দ্বিতীয় চিনা রেকটি পরিষেবা দেওয়া চালু করে। এবার এই রুট পরিষেবা দেবে মোট তিনটি চিনের ডালিয়ান শহরের তৈরি অত্যাধুনিক মেট্রো রেক।

ফের বিদেশি রেক দৌড়ল দমদম-কবি সুভাষ রুটে (ইটিভি ভারত)

চিনা রেকটির আজকের যাত্রাপথ- শনিবার বেলা 12.10 মিনিটে রেকটি দমদম স্টেশন থেকে তার প্রথম যাত্রা শুরু করে। এরপর ট্রেনটি দুপুর 1টায় কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশনে পৌঁছয়। পুনরায় দুপুর 1.10 মিনিটে রেকটি কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে দুপুর 2টোয় দমদম পৌঁছয়।

চিনা রেকটির ভারতের যাত্রাপথ- চিনের ডালিয়ান শহর থেকে জাহাজে চেপে ভারতে এসেছিল এই রেকগুলি। তারপর কেটে যায় প্রায় 4 বছর। পাশ করতে হয়েছে অনেক পরীক্ষা। চলেছে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষামূলক দৌড়। নানারকম সংস্কার করা হয়েছে রেকগুলিতে। করোনা অতিমারির জন্য কিছু সময় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল কাজ। তারপর আবার শুরু হয় ট্রায়াল রান এবং সংস্কারের পালা। সেই সব শেষ করে অবশেষে তিনটি ডালিয়ান পরিষেবা দিতে শুরু করল।

চিনা রেকগুলির সুবিধা-

  • সাধারণত নর্থ সাউথ করিডোরে গাড়ির গত প্রতি ঘণ্টায় 55 কিমি হয়ে থাকে। তবে ডালিয়ানের ক্ষেত্রে সেই গতি প্রতি ঘণ্টায় 60 কিমি।
  • পাশাপাশি যাত্রী স্বচ্ছন্দ এবং সুরক্ষার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে।
  • এই রেকের দরজা অন্য রেকগুলির তুলনায় অনেটাই বেশি চওড়া। এই রেকের দরজাগুলো চওড়ায় প্রায় 100 মিলিমিটার। এর ফলে দিনের ব্যস্ত সময় প্রবেশ করা এবং বেরনোর সময় যাত্রীদের সমস্যা হবে অনেক কম।
  • অনন্যা এসি রেকগুলি তুলনায় এই কোচগুলি অনেক বেশি চওড়া, বসার আসনে স্বাচ্ছন্দের বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি কোচের সামনে এবং পিছনে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।
  • অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থাও অনেক বেশি উন্নত। এই রেকগুলি সবক'টিই 8 কোচের।
  • চলার সময় অনেক কম আওয়াজ হবে। এমনটাই দাবি কলকাতা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের।
  • বিশেষভাবে সক্ষম ও বয়স্ক যাত্রীদের জন্য কোচের মধ্যে হুইল চেয়ার রাখারও জায়গা করা রয়েছে।
  • যাত্রীদের বাড়তি সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে এখানে ডিস্ক ব্রেক ব্যবস্থা রয়েছে।
  • যাত্রীরা যাতে কোচে পড়ে না-যান সেই জন্য এন্ট্রি স্কিড ফ্লোরিং ব্যবস্থা করা হয়েছে।
  • যাত্রীদের সুবিধার জন্য ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড রয়েছে যেখানে তিনটি ভাষাতেই স্টেশনের নাম লেখা রয়েছে ৷

পরিবর্তিত মেট্রো- শহর কলকাতায় মেট্রো যখন প্রথম পরিষেবা দেওয়া শুরু করে তখন সবক'টি নন এসি রেখেছিল ৷ তবে ধীরে ধীরে নন এসি রেকগুলিকে বাতিল করে নিয়ে আসা হয় শীততাপ নিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক রেক।

  • বর্তমানে ব্লু লাইনে সীতাতপ নিয়ন্ত্রিত 29টি রেক বিভিন্ন সময় পরিষেবা দেয় ৷
  • অরেঞ্জ লাইনে 3টি রেক ৷
  • পার্পল লাইনে 2টি রেক ৷
  • গ্রিন লাইনে 14টি রেক পরিষেবা দেয় সারা দিনরাতে ৷

চিনা রেকের ইতিহাস-

  • গ্লোবাল টেন্ডারের মাধ্যমে 2019 সালে চিনের ডালিয়ান শহর থেকে জাহাজে করে আসে একটি প্রোটোটাইপ মেট্রো রেক। তবে তারপর কয়েকবার পরীক্ষা হয়েছিল রেকটির। নতুন রেকটিকে যাত্রী পরিষেবার উপযোগী করে তুলতে একগুচ্ছ পরীক্ষা করা হয়। তাই সেইমতোই 2019 সাল থেকে ধাপে ধাপে শুরু হয় পরীক্ষা নিরীক্ষা। পাশাপাশি চলতে থেকে চেক রানও। তবে 2020 সালে পরীক্ষামূলক দৌড় শুরু হলেও লকডাউনের জন্য সেই কাজে ব্যাঘাত ঘটে। সেই সময় রেকটিতে কিছু যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা যায়। তাই পরীক্ষা অসম্পূর্ণ রেখেই চিনা সংস্থার আধিকারিকদের ফিরে যেতে হয়ে দেশে। তারপর কেটে গিয়েছে লম্বা সময়। রেকটি পরীক্ষা বা ট্রায়াল রান করা সম্ভব হয়নি।
  • এরপর করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে রিসোর্ট ডিজাইন অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অর্গানাইজেশন (RDSO) আধিকারিক থেকে শুরু করে মেট্রোরেলের আধিকারিক এবং চিনের সংস্থার আধিকারিকরা শহরে এসে আবার শুরু করেন পরীক্ষা। মেট্রোর যাত্রী পরিষেবা শেষ হওয়ার পরে রাতের দিকে নিয়মিত চলতে থাকে পরীক্ষামূলক দৌড়। ধাপে ধাপে শুরু হবে অসিলিয়েশন পরীক্ষাও। কোচের অসিলিয়েশান পরীক্ষার জন্য শেষ যে পরীক্ষাটি বাকি ছিল তা হল বালির বস্তা নিয়ে চেক রান। সম্প্রতি সেই পরীক্ষাও শেষ হয়েছে। কলকাতা মেট্রো রেলের নন এসি রেকগুলি বাতিল করে তার পরিবর্তে ঝাঁ-চকচকে অত্যাধুনিক রেকের অর্ডার দেওয়া হয় ডালিয়ান রেকের।
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.