কলকাতা ও বীরভূম, 3 জানুয়ারি: প্রশাসনিক বৈঠকে বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়কে ধমক দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ দেউচা-পাচামি খোলামুখ কয়লাখনি প্রকল্পের কাজের গতি নিয়েও ক্ষুব্ধ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বীরভূম থেকে 'বিজেপির ফান্ডে টাকা যায়', নবান্নের সভা ঘরে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে বিস্ফোরক অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর।
কোনও নেতার কথা না-শুনে সব বিষয় জেলাশাসককে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ পাশাপাশি সরকারি কোষাগারে শুল্কের বিষয়ে কোনও রকম আপোস নয় বলেও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি ৷ এদিন, নবান্নের সভাঘরে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়কে রীতিমতো ধমক দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, "তুমি বীরভূমে যে গতিতে কাজ শুরু করেছিলে হঠাৎ ওখানে কী এমন হল যে, সব থেকে বেশি বালি পাচার হচ্ছে ?" বীরভূম জেলার অজয়, দ্বারকা, ময়ূরাক্ষী, কোপাই, শাল, হিংলো, বক্রেশ্বর, ব্রাহ্মণী প্রভৃতি নদ-নদী থেকে দেদার বেআইনিভাবে বালি তোলার অভিযোগ দীর্ঘদিনের ৷ বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে প্রায়ই অশান্ত হয়ে ওঠে বীরভূম।
দেউচা-পাচামি খোলামুখ কয়লাখনি প্রকল্পে কাজের গতি নিয়েও ক্ষোভপ্রকাশ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "দেউচা-পাচামিতে কেউ কেউ কী করছে সব জানি ! কার ইঙ্গিতে এসব হচ্ছে ? বীরভূম নিয়ে আগে যতটা খুশি ছিলাম, এখন ততটা নই। সাতদিন সময় দিচ্ছি এগুলো সব সমাধান কর ৷ যখন দেউচা-পাচামির জন্য জমি নিলে খাপছাড়া করে কেন নিয়েছো ? উৎপাদনের আগে যারা বঞ্চিত হয়েছে দেখে নাও ৷ মুখ্যসচিব যেভাবে বলবে সেভাবে কাজ কর ৷"
মুখ্যমন্ত্রীর বিস্ফোরক অভিযোগ করে এও বলেন, "কোনও নেতার কথায় কাজ হবে না ৷ গভরমেন্ট রেভিনিউ কেউ নিয়ে চলে যাবে, আর তোমরা আঙুল গুটিয়ে বসে থাকবে তা আমি সহ্য করব না ৷ বীরভূম কিন্তু আমাদের নেতাদের কথায় এটা হচ্ছে না ৷ আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি, বীরভূম থেকে বিজেপি ফান্ডে টাকা যাচ্ছে ৷ আমি চাই না, কোন পলিটিক্যাল ফান্ডে যাক ৷"
সব কিছু ঠিক করার জন্য বীরভূম জেলা শাসককে সাতদিন সময়সীমা বেঁধে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী, রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে বীরভূমে পাঠাবেন, জানান তিনি ৷ এছাড়া, দুবরাজপুর, মহম্মদবাজারের ওসি ও সিউড়ির আইসি-র বিরুদ্ধেও ক্ষোভপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷