কলকাতা, 18 জুলাই: অনির্দিষ্টকালের জন্য রাজ্য জুড়ে বন্ধ মাংস বিক্রি। পুলিশের তোলাবাজি ও মুরগি নিয়ে যাওয়া গাড়ি চালককে মারধরের প্রতিবাদে ধর্মঘটে নামছেন বিক্রেতারা ৷ ধর্মঘটে শামিল হবেন সমস্ত জেলার মুরগি পরিবহণে যুক্ত গাড়িচালক, খালাসিরাও ৷ যদিও অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা এই ধর্মঘট সমর্থন করছে না বলেই জানিয়েছেন পোলট্রি ফেডারেশনের সভাপতি মদন মোহন মাইতি।
শাক-সবজির দাম নাগালের বাইরে, ডিমের দামও আকাশছোঁয়া । মাংসের দামও 200-230 টাকা কেজি । ফলে ধর্মঘট শুরু হলে যেখানে যেটুকু মিলবে, তার দাম আরও চড়বে । সমস্যায় পড়বে সাধারণ মানুষ ৷ অন্যদিকে বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের পাতে পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবে চিকেন স্যুপ দেওয়া হয় । ফলে তারা সমস্যায় পড়বে ৷ বিপর্যস্ত হবে ফাস্টফুডের দোকান থেকে বড়-মাঝারি রেস্তোরাঁও ।
মাংস বন্ধ হলে বাজারে বাড়তে পরে মাছের দামও। ফলে আমজনতার যন্ত্রণা যে বাড়বে তা বলাই বাহুল্য ৷ একাংশ অবশ্য বলছে, চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার থেকে শ্রাবণ মাস শুরু হচ্ছে ৷ এসময় অনেকেই নিরামিষ খান ৷ ফলে বাজারে মাছ-মাংসের চাহিদা খানিক কম থাকে ৷ ফলে যতটা বাজারে যতটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা, ততটা নাও পড়তে পারে ।
কেন ধর্মঘটে মুরগি বিক্রেতারা ?
ঘটনার সূত্রপাত গত বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা থানা এলাকায় । অভিযোগ, মুরগি বোঝাই গাড়ি আটকায় পুলিশ। গাড়ির সমস্ত বৈধ কাগজ থাকা সত্ত্বেও চালকের থেকে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন পুলিশকর্মীরা। টাকা না-থাকায় টর্চের পিছনের অংশ দিয়ে চালকের মাথায় আঘাত করা হয় । এরপর গাড়ি থেকে নামিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনি হাসপাতালে ভর্তি।
এই ঘটনার প্রতিবাদেই মুরগি পরিবহণে যুক্ত ও মাংস ব্যবসায়ীরা সিদ্ধান্ত নেন, পুলিশি তোলাবাজি ও জুলুমের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার থেকে লাগাতার ধর্মঘটে শামিল হবেন। নর্থ অ্যান্ড সাউথ কলকাতা পোলট্রি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে অমল ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা আগামিকাল থেকে লাগাতার ধর্মঘটে যাচ্ছি । এটা আমাদের সংঠনের সিদ্ধান্ত। যেভাবে মুরগি পরিবহণে যুক্ত গাড়িচালক পুলিশের তোলাবাজি ও আক্রমণের শিকার, তার নিন্দা করি। সেই ঘটনার প্রতিবাদেই এই ধর্মঘট। সরকারের পদক্ষেপ বুঝে ফের আলোচনা করে দোকান খোলা হবে ।’’
তবে ওয়েস্ট বেঙ্গল পোলট্রি ফেডারেশনের কর্মকর্তা মদন মোহন মাইতি বলেন, এই ধর্মঘট সমর্থন করছি না । যে ঘটনা ঘটেছে তারপর আমাদের কাছে অভিযোগ রয়েছে । সেটা আমরা রাজ্যের প্রশাসনকে জানাই । অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছে । তেমন হলে ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখানো যেতে পারে কিন্তু ধর্মঘট কোনও পথ নয় ।