ETV Bharat / state

ন্যাকের মূল্যায়ণে রাজ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেল চন্দননগর গভর্নমেন্ট কলেজ - chandernagore college

Chandannagar College Gets Special Recognition from NAAC: রাজ্যের মধ্যে সরকারি কলেজ হিসেবে ন্যাকের মূল্যায়ণে A+ গ্রেড পেল চন্দননগর গভর্নমেন্ট কলেজ ৷ সোমবার কলেজের সেমিনার হলে ন্যাকের প্রতিনিধি গৌতম গঙ্গোপাধ্যায়-সহ কয়েকজন শংসাপত্র তুলে দিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষের হাতে।

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jul 3, 2024, 2:54 PM IST

Updated : Jul 3, 2024, 4:15 PM IST

Chandannagar College
চন্দননগর গভর্নমেন্ট কলেজ (নিজস্ব চিত্র)

চন্দননগর, 3 জুলাই: রাজ্যে স্নাতকস্তরে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতির মূল্যায়ণে ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের (ন্যাক) A+ গ্রেড পেল চন্দননগর সরকারি কলেজ। কলেজটি NAAC-এর মূল্যায়নে 3.46 স্কোর করেছে। এই নম্বর এখনও পর্যন্ত রাজ্যের যেকোনও সরকারি কলেজের পাওয়া সর্বোচ্চ গ্রেড।

ন্যাকের মূল্যায়ণে সর্বোচ্চ নম্বর চন্দননগর গভর্নমেন্ট কলেজ (ইটিভি ভারত)

উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের উচ্চশিক্ষার সমীক্ষা রিপোর্ট-এর (এআইএসএইচই) অধীনে নিবন্ধিত 50,000 কলেজের মধ্যে 1 শতাংশেরও কম কলেজ এখনও পর্যন্ত A+ গ্রেড পেয়েছে। চন্দননগর সরকারি কলেজের সামগ্রিক উন্নয়ন থেকে শুরু করে শিক্ষা ব্যবস্থার গুণগত মান-সহ সাতটি পর্যায় বিশ্লেষণের পরই ন্যাকের (NAAC) এই A+ গ্রেড পাওয়াতে কলেজের পড়ুয়াদের পাশাপাশি গর্বিত চন্দননগরবাসী। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত এই কলেজ, ন্যাকের তৃতীয় দফার মূল্যায়ণে পাওয়া এই 3.46 নম্বরের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত একমাত্র A+ পাওয়া কলেজ হিসেবে নিজের স্থান করে নিয়েছে।

এই বছর A+ গ্রেড পেলেও, এর আগে 2007 এবং 2016 ন্যাকের মূল্যায়ণে B++ পেয়েছিল চন্দননগর কলেজ । তখন থেকে শিক্ষক থেকে পড়ুয়া সকলেরই কলেজের মানোন্নয়ের উপর জোর দিয়েছিলেন এবং সেই প্রচেষ্টা যে বিফলে যায়নি, তা প্রমাণ করল এই বছরের A+ গ্রেড প্রাপ্তি ৷

কলেজের এই মানোন্নয়নে আপ্লুত অধ্যক্ষ দেবাশিস সরকার বলেন, "চলতি বছরে ন্যাকের তৃতীয় দফার (NAAC) মূল্যায়ণে 3.46 নম্বর-সহ A+ গ্রেড পেয়েছে চন্দননগর কলেজ । পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত সরকারি কলেজের মধ্যে একমাত্র চন্দননগর কলেজ ন্যাকের মূল্যায়নে সর্বোচ্চ নম্বর (3.46) লাভ করেছে । মাত্র 0.05 কম থাকার জন্য A++ গ্রেড পায়নি । তবে 3.46 নম্বর-সহ A+ গ্রেড পেয়ে সর্বভারতীয় স্তরে জায়গা করে নিয়েছে চন্দননগর কলেজ । চন্দননগর কলেজের ইতিহাসে এই ঘটনা ঐতিহাসিক উত্তরণ ৷"

অধ্যক্ষের কথার রেশ টেনে কলেজের অধ্যাপক মোনালি চক্রবর্তী বলেন, "2017 সাল থেকে এই কলেজের অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে। আমাদের আরও প্রত্যাশা ছিল। আবার 5 বছর বাদে মূল্যায়ণ হবে ৷ আমাদের A++ গ্রেড পাওয়ার লক্ষ্যে এগোতে হবে ৷ কলেজে শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে পড়াশোনার মান উন্নয়নে অনেক কাজ হয়েছে। আমরা সকলে মিলে প্রচুর পরিশ্রম করেছি আর তারই ফল এই A+ গ্রেড ৷"

চন্দননগর কলেজ ন্যাক-এর এই A+ গ্রেড স্বীকৃতি পাওয়াতে শুধু অধ্যক্ষ, অধ্যাপকেরাই খুশি নন, আনন্দিত পড়ুয়ারাও ৷ পড়ুয়া রাহুল কুমার সানি জানান, কলেজের সামগ্রিক উন্নয়ন হয়েছে। সেই উন্নয়নের ভিত্তিতে ন্যাকের তরফে বড় স্বীকৃতি পেয়েছে চন্দননগর সরকারি কলেজ। এই সাফল্যের পর, চন্দননগর কলেজের ছাত্র হিসেবে তিনি গর্বিত ৷

চন্দননগর কলেজের এক টুকরো ইতিহাস: 162 বছরের পুরনো চন্দননগর কলেজের পরতে পরতে রয়েছে ইতিহাস ৷ 1862 সালে প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে প্রথম শিক্ষার মানচিত্রে জায়গা করে নেয় এই কলেজ ৷ তারপর নানা ধাপ অতিক্রম করে 1901 সালে যখন এই কলেজ ডুপ্লে হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় তখন চন্দননগর একটি ফরাসি উপনিবেশ ৷ স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়ে সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে 1908 থেকে 1931 সাল পর্যন্ত দীর্ঘ 23 বছর বন্ধ ছিল এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এরপর 2 অক্টোবর, 1954 থেকে রাজ্য সরকারের উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অধীনে আসা চন্দননগর কলেজে এখন 19টি স্নাতকস্তরের কোর্স এবং তিনটি স্নাতকোত্তর কোর্স পড়ানো হয় ।

চন্দননগর কলেজ, দেশের একমাত্র কলেজ যেখানে ভারতীয় বিপ্লবী আন্দোলন এবং চন্দননগরের ইতিহাস নিয়ে একটি যাদুঘর রয়েছে। কলেজটি রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং করে এবং সৌর শক্তি ব্যবহার করে এবং যাবতীয় প্রশাসনিক কাজকর্ম কাগজবিহীন পদ্ধতিতে চালানোর ওপরে জোর দেওয়া হয়। চন্দননগর কলেজের ঠিক বিপরীতে হুগলি নদীর পাড়ে বেশ খানিকটা জায়গা জুড়ে ছাত্রছাত্রীরা রোপণ করেছেন ম্যানগ্রোভ। এছাড়া কলেজের ছাত্রছাত্রীরা চন্দননগর পুরসভা পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের ভূমিকাও পালন করেন।

চন্দননগর, 3 জুলাই: রাজ্যে স্নাতকস্তরে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতির মূল্যায়ণে ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের (ন্যাক) A+ গ্রেড পেল চন্দননগর সরকারি কলেজ। কলেজটি NAAC-এর মূল্যায়নে 3.46 স্কোর করেছে। এই নম্বর এখনও পর্যন্ত রাজ্যের যেকোনও সরকারি কলেজের পাওয়া সর্বোচ্চ গ্রেড।

ন্যাকের মূল্যায়ণে সর্বোচ্চ নম্বর চন্দননগর গভর্নমেন্ট কলেজ (ইটিভি ভারত)

উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের উচ্চশিক্ষার সমীক্ষা রিপোর্ট-এর (এআইএসএইচই) অধীনে নিবন্ধিত 50,000 কলেজের মধ্যে 1 শতাংশেরও কম কলেজ এখনও পর্যন্ত A+ গ্রেড পেয়েছে। চন্দননগর সরকারি কলেজের সামগ্রিক উন্নয়ন থেকে শুরু করে শিক্ষা ব্যবস্থার গুণগত মান-সহ সাতটি পর্যায় বিশ্লেষণের পরই ন্যাকের (NAAC) এই A+ গ্রেড পাওয়াতে কলেজের পড়ুয়াদের পাশাপাশি গর্বিত চন্দননগরবাসী। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত এই কলেজ, ন্যাকের তৃতীয় দফার মূল্যায়ণে পাওয়া এই 3.46 নম্বরের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত একমাত্র A+ পাওয়া কলেজ হিসেবে নিজের স্থান করে নিয়েছে।

এই বছর A+ গ্রেড পেলেও, এর আগে 2007 এবং 2016 ন্যাকের মূল্যায়ণে B++ পেয়েছিল চন্দননগর কলেজ । তখন থেকে শিক্ষক থেকে পড়ুয়া সকলেরই কলেজের মানোন্নয়ের উপর জোর দিয়েছিলেন এবং সেই প্রচেষ্টা যে বিফলে যায়নি, তা প্রমাণ করল এই বছরের A+ গ্রেড প্রাপ্তি ৷

কলেজের এই মানোন্নয়নে আপ্লুত অধ্যক্ষ দেবাশিস সরকার বলেন, "চলতি বছরে ন্যাকের তৃতীয় দফার (NAAC) মূল্যায়ণে 3.46 নম্বর-সহ A+ গ্রেড পেয়েছে চন্দননগর কলেজ । পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত সরকারি কলেজের মধ্যে একমাত্র চন্দননগর কলেজ ন্যাকের মূল্যায়নে সর্বোচ্চ নম্বর (3.46) লাভ করেছে । মাত্র 0.05 কম থাকার জন্য A++ গ্রেড পায়নি । তবে 3.46 নম্বর-সহ A+ গ্রেড পেয়ে সর্বভারতীয় স্তরে জায়গা করে নিয়েছে চন্দননগর কলেজ । চন্দননগর কলেজের ইতিহাসে এই ঘটনা ঐতিহাসিক উত্তরণ ৷"

অধ্যক্ষের কথার রেশ টেনে কলেজের অধ্যাপক মোনালি চক্রবর্তী বলেন, "2017 সাল থেকে এই কলেজের অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে। আমাদের আরও প্রত্যাশা ছিল। আবার 5 বছর বাদে মূল্যায়ণ হবে ৷ আমাদের A++ গ্রেড পাওয়ার লক্ষ্যে এগোতে হবে ৷ কলেজে শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে পড়াশোনার মান উন্নয়নে অনেক কাজ হয়েছে। আমরা সকলে মিলে প্রচুর পরিশ্রম করেছি আর তারই ফল এই A+ গ্রেড ৷"

চন্দননগর কলেজ ন্যাক-এর এই A+ গ্রেড স্বীকৃতি পাওয়াতে শুধু অধ্যক্ষ, অধ্যাপকেরাই খুশি নন, আনন্দিত পড়ুয়ারাও ৷ পড়ুয়া রাহুল কুমার সানি জানান, কলেজের সামগ্রিক উন্নয়ন হয়েছে। সেই উন্নয়নের ভিত্তিতে ন্যাকের তরফে বড় স্বীকৃতি পেয়েছে চন্দননগর সরকারি কলেজ। এই সাফল্যের পর, চন্দননগর কলেজের ছাত্র হিসেবে তিনি গর্বিত ৷

চন্দননগর কলেজের এক টুকরো ইতিহাস: 162 বছরের পুরনো চন্দননগর কলেজের পরতে পরতে রয়েছে ইতিহাস ৷ 1862 সালে প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে প্রথম শিক্ষার মানচিত্রে জায়গা করে নেয় এই কলেজ ৷ তারপর নানা ধাপ অতিক্রম করে 1901 সালে যখন এই কলেজ ডুপ্লে হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় তখন চন্দননগর একটি ফরাসি উপনিবেশ ৷ স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়ে সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে 1908 থেকে 1931 সাল পর্যন্ত দীর্ঘ 23 বছর বন্ধ ছিল এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এরপর 2 অক্টোবর, 1954 থেকে রাজ্য সরকারের উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অধীনে আসা চন্দননগর কলেজে এখন 19টি স্নাতকস্তরের কোর্স এবং তিনটি স্নাতকোত্তর কোর্স পড়ানো হয় ।

চন্দননগর কলেজ, দেশের একমাত্র কলেজ যেখানে ভারতীয় বিপ্লবী আন্দোলন এবং চন্দননগরের ইতিহাস নিয়ে একটি যাদুঘর রয়েছে। কলেজটি রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং করে এবং সৌর শক্তি ব্যবহার করে এবং যাবতীয় প্রশাসনিক কাজকর্ম কাগজবিহীন পদ্ধতিতে চালানোর ওপরে জোর দেওয়া হয়। চন্দননগর কলেজের ঠিক বিপরীতে হুগলি নদীর পাড়ে বেশ খানিকটা জায়গা জুড়ে ছাত্রছাত্রীরা রোপণ করেছেন ম্যানগ্রোভ। এছাড়া কলেজের ছাত্রছাত্রীরা চন্দননগর পুরসভা পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের ভূমিকাও পালন করেন।

Last Updated : Jul 3, 2024, 4:15 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.