ETV Bharat / state

আরজি করে ধর্ষণ নিয়ে কবিতা পাঠে বাধা! বিতর্ক চন্দননগরে সরকারি গ্রন্থমেলায় - RECITATION ON RG KAR ISSUE

মেলা কমিটির দাবি, অতিরিক্ত সময় নেওয়ায় কবিতা পাঠ শেষ করতে বলা হয় ৷ তবে সরকারি মঞ্চে প্রতিবাদ করা অনুচিত ৷

RECITATION ON RG KAR ISSUE
চন্দননগরে সরকারি গ্রন্থমেলা (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : 11 hours ago

চন্দননগর, 25 ডিসেম্বর: সরকারি গ্রন্থমেলায় আরজি কর নিয়ে লেখা কবিতা পাঠে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ৷ মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটে হুগলির চন্দননগরে ৷ যদিও মেলা কমিটির দাবি, অতিরিক্ত সময় নেওয়ায় ওই শিল্পীদের কবিতা পাঠ শেষ করতে বলা হয় ৷ কিন্তু সরকারি মঞ্চ যে প্রতিবাদের জায়গা নয় এবং এই ধরনের কবিতা পাঠ যে উচিত নয়, সেটাও মনে করে মেলা কমিটি ৷

হুগলির চন্দননগরে 38তম হুগলি জেলা সরকারি গ্রন্থমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে । এবছর চন্দননগর পুরনিগমের মেরীর মাঠে 21 ডিসেম্বর থেকে মেলা শুরু হয়েছে ৷ চলবে 27 ডিসেম্বর পর্যন্ত৷ দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত নাচ, গান ,আবৃত্তি ও নাটক-সহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে সেখানে ৷

সেখানেই মঙ্গলবার রাতে কবিতা বলার সুযোগ পান ‘শেষের কবিতা’ নামে চন্দননগরের একটি দল । অংশ নেন ওই দলের পল্লবী নন্দী, দেবলীনা খান, আরতি দে, জয়শ্রী ও মধুমিতা নামের পাঁচজন সদস্য ৷ তাঁদের আধুনিক কবি নূপুর পোদ্দারের কবিতা 'আমি অভয়া তিলোত্তমা' এবং অনুপম শৌরিক সরকারের কবিতা 'আমি তিলোত্তমা'র কবিতাটি পাঠ করার কথা ছিল ৷ দু’টি কবিতাই আরজি করে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ-খুনের ঘটনার প্রেক্ষাপটে লেখা ৷

ওই সদস্য়দের অভিযোগ, তাঁদের জন্য সাত মিনিট বরাদ্দ করা হয় ৷ কিন্তু পাঁচ মিনিট পর তাঁদের কবিতা পাঠ বন্ধ করে দেওয়া হয় ৷ মাইকও বন্ধ করে দেওয়া হয় ৷ তখন মঞ্চ থেকে ওই শিল্পীরা নেমে আসেন ৷ এই নিয়ে ওই দলের সদস্য আরতি দে জানান, তিলোত্তমা অভয়ার নিয়েই কবিতাগুলি ছিল । সেখানে নারীশক্তি, নারীর অধিকার নিয়ে কথা বলা হয় ৷ কোনও বিরোধিতা ছিল না এর মধ্যে ৷

তিনি বলেন, ‘‘যেহেতু কলকাতা আরজি করের ঘটনা সকলকেই নাড়া দিয়েছিল, সেজন্য সকলেই মন দিয়েই শুনছিলেন ।গ্রন্থমেলার মঞ্চে সকলেই যেমন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করছিলেন, আমরাও তাই নাম দিয়েছিলাম । পুরো কবিতাটা নারীশক্তি নিয়েই ছিল । আমরা কোনও বিরোধিতায় যায়নি । কেন এই ঘটনাটা ঘটল আমাদের সঙ্গে, এটা আমরা বলতে পারব না । তবে আমাদের খুব খারাপ লেগেছে ।’’

যদিও সরকারি গ্রন্থমেলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কমিটির সদস্য তথা চন্দননগর পুরনিগমের মেয়র পারিষদ শুভেন্দু মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সরকারি মেলায় সমস্ত শিল্পীদের সমান ভাবে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল । শেষের কবিতা দলকেও আবৃত্তি পাঠের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল । প্রত্যেকের জন্য পাঁচ মিনিট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল । ওঁরা নিয়ম না-মেনে বেশি সময় নিচ্ছিলেন । সেই কারণে বারণ করা হয় । কবিতা পাঠে কোনও বাধা দেওয়া হয়নি । কোনও মাইকও বন্ধ করা হয়নি ।

কিন্তু এই কাজ করে ওই শিল্পীরা ঠিক করেননি বলেই দাবি করেছেন শুভেন্দু মুখোপাধ্যায় ৷ তিনি মনে করেন, এই ধরনের প্রতিবাদ সরকারি মঞ্চ থেকে করা উচিত হয়নি ৷ আগে জানলে ওই শিল্পীদের অংশ নিতে দিতেন না বলেও জানিয়েছেন শুভেন্দু মুখোপাধ্যায় ৷

স্বাভাবিকভাবেই এই নিয়ে শোরগোল পড়েছে ৷ তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক ৷ সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিজেপি ও সিপিএম ৷ বিজেপি নেতা গোপাল চৌবে এই ঘটনাকে লজ্জাজনক বলে উল্লেখ করেছেন ৷ আরজি করের ঘটনা নিয়ে কি প্রকাশ্যে কথা বলা যাবে না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি ৷ তাঁর বক্তব্য, ‘‘সকলে মিলে এই সরকারকে বদল করার চেষ্টা করলেই বোধহয় ভালো হবে ৷’’

অন্যদিকে সিপিএম নেতা ঐকতান দাশগুপ্ত পুরো ঘটনার দায় শুভেন্দু মুখোপাধ্যায়ের উপর চাপিয়েছেন ৷ তাঁর দাবি, শুভেন্দু মুখোপাধ্যায় বা তৃণমূলের তরফে এই ধরনের কাজ করাই সম্ভব ৷ কারণ, আরজি করের ঘটনাটাই তৃণমূলের মস্তিষ্কপ্রসূত ৷ সেই জন্যই এই কবিতায় শাসক দলের গাত্রদাহ হয়েছে ৷ এর বিচার মানুষ করবেন ৷

আরও পড়ুন

চন্দননগর, 25 ডিসেম্বর: সরকারি গ্রন্থমেলায় আরজি কর নিয়ে লেখা কবিতা পাঠে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ৷ মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটে হুগলির চন্দননগরে ৷ যদিও মেলা কমিটির দাবি, অতিরিক্ত সময় নেওয়ায় ওই শিল্পীদের কবিতা পাঠ শেষ করতে বলা হয় ৷ কিন্তু সরকারি মঞ্চ যে প্রতিবাদের জায়গা নয় এবং এই ধরনের কবিতা পাঠ যে উচিত নয়, সেটাও মনে করে মেলা কমিটি ৷

হুগলির চন্দননগরে 38তম হুগলি জেলা সরকারি গ্রন্থমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে । এবছর চন্দননগর পুরনিগমের মেরীর মাঠে 21 ডিসেম্বর থেকে মেলা শুরু হয়েছে ৷ চলবে 27 ডিসেম্বর পর্যন্ত৷ দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত নাচ, গান ,আবৃত্তি ও নাটক-সহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে সেখানে ৷

সেখানেই মঙ্গলবার রাতে কবিতা বলার সুযোগ পান ‘শেষের কবিতা’ নামে চন্দননগরের একটি দল । অংশ নেন ওই দলের পল্লবী নন্দী, দেবলীনা খান, আরতি দে, জয়শ্রী ও মধুমিতা নামের পাঁচজন সদস্য ৷ তাঁদের আধুনিক কবি নূপুর পোদ্দারের কবিতা 'আমি অভয়া তিলোত্তমা' এবং অনুপম শৌরিক সরকারের কবিতা 'আমি তিলোত্তমা'র কবিতাটি পাঠ করার কথা ছিল ৷ দু’টি কবিতাই আরজি করে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ-খুনের ঘটনার প্রেক্ষাপটে লেখা ৷

ওই সদস্য়দের অভিযোগ, তাঁদের জন্য সাত মিনিট বরাদ্দ করা হয় ৷ কিন্তু পাঁচ মিনিট পর তাঁদের কবিতা পাঠ বন্ধ করে দেওয়া হয় ৷ মাইকও বন্ধ করে দেওয়া হয় ৷ তখন মঞ্চ থেকে ওই শিল্পীরা নেমে আসেন ৷ এই নিয়ে ওই দলের সদস্য আরতি দে জানান, তিলোত্তমা অভয়ার নিয়েই কবিতাগুলি ছিল । সেখানে নারীশক্তি, নারীর অধিকার নিয়ে কথা বলা হয় ৷ কোনও বিরোধিতা ছিল না এর মধ্যে ৷

তিনি বলেন, ‘‘যেহেতু কলকাতা আরজি করের ঘটনা সকলকেই নাড়া দিয়েছিল, সেজন্য সকলেই মন দিয়েই শুনছিলেন ।গ্রন্থমেলার মঞ্চে সকলেই যেমন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করছিলেন, আমরাও তাই নাম দিয়েছিলাম । পুরো কবিতাটা নারীশক্তি নিয়েই ছিল । আমরা কোনও বিরোধিতায় যায়নি । কেন এই ঘটনাটা ঘটল আমাদের সঙ্গে, এটা আমরা বলতে পারব না । তবে আমাদের খুব খারাপ লেগেছে ।’’

যদিও সরকারি গ্রন্থমেলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কমিটির সদস্য তথা চন্দননগর পুরনিগমের মেয়র পারিষদ শুভেন্দু মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সরকারি মেলায় সমস্ত শিল্পীদের সমান ভাবে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল । শেষের কবিতা দলকেও আবৃত্তি পাঠের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল । প্রত্যেকের জন্য পাঁচ মিনিট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল । ওঁরা নিয়ম না-মেনে বেশি সময় নিচ্ছিলেন । সেই কারণে বারণ করা হয় । কবিতা পাঠে কোনও বাধা দেওয়া হয়নি । কোনও মাইকও বন্ধ করা হয়নি ।

কিন্তু এই কাজ করে ওই শিল্পীরা ঠিক করেননি বলেই দাবি করেছেন শুভেন্দু মুখোপাধ্যায় ৷ তিনি মনে করেন, এই ধরনের প্রতিবাদ সরকারি মঞ্চ থেকে করা উচিত হয়নি ৷ আগে জানলে ওই শিল্পীদের অংশ নিতে দিতেন না বলেও জানিয়েছেন শুভেন্দু মুখোপাধ্যায় ৷

স্বাভাবিকভাবেই এই নিয়ে শোরগোল পড়েছে ৷ তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক ৷ সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিজেপি ও সিপিএম ৷ বিজেপি নেতা গোপাল চৌবে এই ঘটনাকে লজ্জাজনক বলে উল্লেখ করেছেন ৷ আরজি করের ঘটনা নিয়ে কি প্রকাশ্যে কথা বলা যাবে না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি ৷ তাঁর বক্তব্য, ‘‘সকলে মিলে এই সরকারকে বদল করার চেষ্টা করলেই বোধহয় ভালো হবে ৷’’

অন্যদিকে সিপিএম নেতা ঐকতান দাশগুপ্ত পুরো ঘটনার দায় শুভেন্দু মুখোপাধ্যায়ের উপর চাপিয়েছেন ৷ তাঁর দাবি, শুভেন্দু মুখোপাধ্যায় বা তৃণমূলের তরফে এই ধরনের কাজ করাই সম্ভব ৷ কারণ, আরজি করের ঘটনাটাই তৃণমূলের মস্তিষ্কপ্রসূত ৷ সেই জন্যই এই কবিতায় শাসক দলের গাত্রদাহ হয়েছে ৷ এর বিচার মানুষ করবেন ৷

আরও পড়ুন

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.