কলকাতা, 28 সেপ্টেম্বর: শহরের আরও একটি সরকারি হাসপাতালে হেনস্থার শিকার হতে হল চিকিৎসকদের । ফিমেল ওয়ার্ডে ঢুকে চিকিৎসক ও নার্সদের উপর চড়াও হন রোগী পরিবার । তারপর শুক্রবার রাত থেকে সম্পূর্ণ কর্মবিরতি শুরু করেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। শনিবারও পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়নি। তাঁদের স্পষ্ট দাবি, নিরাপত্তা সুনিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা কাজ করবেন না। পরিস্থিতি সামাল দিতে বৈঠকে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের কাউন্সিল। বৈঠকে যোগ দিয়েছেন পিজিটিরা। পাশাপাশি তাঁদের তরফে দশদফা দাবিও জানানো হয়েছে। কিন্তু সেই মিটিং-এর সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, নিরাপত্তা সুনিশ্চিত না হলে কাজে যোগদান নয় বলে স্পষ্ট জানান জুনিয়র চিকিৎসকরা ৷
তবে শুধুমাত্র জুনিয়ার চিকিৎসকরা নন, শনিবার অধ্যক্ষকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান নার্সরাও। তাঁদের অভিযোগ, রোগীর পরিবারের সদস্যরা তাঁদের রেস্টরুমেও ঢুকে গিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, তাঁদের উপর হামলাও চালানো হয় বলে অভিযোগ। নার্সদের দাবি, সেই সময় ঘটনাস্থলে পুলিশকে দেখা যায়নি। তাঁদের আরও অভিযোগ, রোগীর পরিবারের তরফে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়, এখানকার পরিস্থিতিও আরজি করের মতো করে দেওয়া হবে। ফলে নিজেদেরকে সুরক্ষিত মনে করছেন না জুনিয়র চিকিৎসক ও নার্স কেউই ।
অন্যদিকে, রাজ্যের বাকি সমস্ত সরকারি হাসপাতালগুলিতেও এদিন বৈঠকে বসেছেন। এরপরই জুনিয়র চিকিৎসক ফ্রন্টের পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে জানা যাবে ৷ ফের রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকরা সম্পূর্ণ কর্মবিরতি শুরু করবেন কি না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে এদিনই ৷
প্রসঙ্গত, শুক্রবার এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল ৷ রোগীর পরিবারের অভিযোগ, প্রয়োজনীয় চিকিৎসার অভাবেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে ৷ এরপর তাঁরা চিকিৎসক ও নার্সদের মারধর করেন বলে অভিযোগ ৷ ইতিমধ্যেই, সেই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজও সামনে এসেছে ৷
জুনিয়র চিকিৎসকদের অভিযোগ, তাঁদের নিরাপত্তার সু-ব্যবস্থা নেই ৷ ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার রাত থেকেই কর্মবিরতি শুরু করেন তাঁরা ৷ শনিবার সকালেও কর্মবিরতি চলতে থাকে তাঁদের ৷ বন্ধ থাকে হাসপাতালের জরুরি পরিষেবা ৷
অন্যদিকে, সাগর দত্ত হাসপাতালের ঘটনায় রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেছেন ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ ও বিজেপি নেতা অর্জুন সিং । তিনি বলেন, "এই রাজ্যে কোথাও আইনের শাসন নেই । নিরাপত্তা তো দূরের কথা । সাগর দত্ত, নীলরতন হাসপাতালে কোনও অনুশাসন নেই । সেখানে ভারতের আইনের বদলে পাকিস্তানের আইন চলে । যাঁরা ক্ষমতায় রয়েছে ওখানে তাঁরাই মাতব্বরি করেন ৷ পুলিশ প্রশাসন তো দাঁড়িয়ে দেখবেই । এটা নতুন কিছু নয় ।"