কলকাতা, 13 মে: অযোগ্য শিক্ষকদের তালিকা নিয়ে পর্যাপ্ত তথ্য না পেয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশন থেকে চাকরি পাওয়া প্রায় 26 হাজার শিক্ষকের নিয়োগ বাতিলের রায় দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ সেই রায়ে আপাতত স্থগিতাদেশ দিয়ে রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট ৷ এই পরিস্থিতিতে সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের হাতে এসেছে 4327 জন অযোগ্য শিক্ষকের তালিকা ৷ সিবিআই সূত্রে এই খবর পাওয়া গিয়েছে ৷ ওই সূত্র আরও জানিয়েছে যে এই শিক্ষকদের এবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হবে ৷
সিবিআই সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত নেমে সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা বেশ কয়েকজনকে জেরা করে এই সব অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের বিস্তারিত তথ্য পেয়েছেন । এই অযোগ্যদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে আগামী সপ্তাহে নিজাম প্যালেসে তলব করতে চলেছেন তদন্তকারীরা ৷
উল্লেখ্য, এই দুর্নীতির তদন্তে নেমে এসএসসি-র একাধিক উচ্চপদস্থ আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় । পরে তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করে সিবিআই । এছাড়াও তাঁদের মধ্যে একাধিক লোকের বয়ান রেকর্ড করা হয় ৷ সেই রেকর্ড করা বয়ানের ভিত্তিতেই তদন্তে আরও অগ্রগতি আসে ৷ প্রসন্ন রায়ের মতো একাধিক রাজ্যে একাধিক এজেন্টদের রাখা হত । তাঁদের হাত ঘুরেই টাকা আসত প্রভাবশালীদের হাতে । সিবিআই সূত্রের খবর, এই সব এজেন্টরা মূলত কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হয়ে যান ।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী ব্যুরোর আধিকারিকদের দাবি, এই সব এজেন্টরা মূলত রাজ্যের একাধিক চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা তুলত । পরে এই সব প্রার্থীরা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়ে যেতেন ৷ সিবিআই সূত্রের খবর, রাজ্যে ওএমআর যাচাইকারী সংস্থা নাইসার একটি অফিসে হানা দেন গোয়েন্দারা । সেখান থেকে যে হার্ড ডিস্কটি উদ্ধার হয়েছিল, সেখানেই নাকি ছিল সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি প্রার্থীদের নথি । সিবিআই সূত্রের খবর, সেখানে কোন কোন ওএমআরে ম্যানুপুলেশন হয়েছিল, তার বিস্তারিত তথ্যও ছিল বলে জানতে পারা গিয়েছে ।
যদিও যে 26 হাজারের চাকরি গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে অযোগ্য় ক’জন, সেই নিয়ে ধোঁয়াশা এখনও কাটেনি ৷ হাইকোর্টে প্রায় পাঁচ হাজার অযোগ্যর তালিকা জমা পড়েছিল ৷ সুপ্রিম কোর্টে সেই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুন বলে জানায় এসএসসি ৷ এই ধোঁয়াশার মতো সিবিআই অযোগ্যদের যে নাম পেয়েছে, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এই নিয়ে নতুন কোনও তথ্য় উঠে আসে কি না, সেটাই দেখার ৷
আরও পড়ুন: