বসিরহাট, 10 মার্চ: শেখ শাহজাহানকে চারদিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিল বসিরহাট মহকুমা আদালত ৷ আগামী 14 মার্চ পরবর্তী শুনানি হবে ৷ রবিবারও শাহজাহানের মামলার শুনানি বন্ধ-দরজার আড়ালে হল ৷ শুধুমাত্র দু’পক্ষের আইনজীবী এবং সিবিআই আধিকারিকরা ছাড়া এজলাসে কোনও ব্যক্তিকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি ৷ আদালতে নিজেদের হেফাজতে চেয়ে সিবিআই জানায়, "শেখ শাহজাহানের মোবাইল ফোন দু’টি এখনও মেলেনি ৷ তাই তদন্তের স্বার্থে প্রমাণ জোগাড় করা প্রয়োজন রয়েছে ৷"
শেখ শাহজাহানের আইনজীবী শুনানি শেষে জানিয়েছেন, শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে 8 ও 9 নম্বর দু’টি মামলাতেই সিবিআই হেফাজতে চেয়েছিল তাঁকে ৷ যেহেতু আজ শুধুমাত্র 9 নম্বর মামলার শুনানি ছিল ৷ তাই সেটিতেই শাহজাহানকে চারদিনের সিবিআই হেফাজত দেওয়া হয়েছে ৷ আগামী 14 মার্চ ফের শাহজাহানকে আদালতে পেশ করা হবে ৷ সেখানে ফের 8 নম্বর মামলায় শেখ শাহজাহানকে নতুন করে হেফাজতে চাইতে পারে সিবিআই ৷
উল্লেখ্য, এদিন আদালতে ঢোকার সময় চালচলনের ভঙ্গিই পুরো বদলে গিয়েছিল ৷ প্রথমদিন রাজ্য পুলিশের সঙ্গে যে দাপটের সঙ্গে আদালতে প্রবেশ করেছিলেন সন্দেশখালির ত্রাস শাহজাহান, তার লেশমাত্র এদিন ছিল না ৷ এমনকি সাংবাদিকদের প্রশ্নে কোনও জবাবও তিনি দেননি ৷ মাথা নিচু করে তাঁকে আদালতে ঢুকতে দেখা যায় ।
শাহজাহানকে সিআইডি-র থেকে হেফাজতে নেওয়ার পরেই সন্দেশখালিকাণ্ডে তদন্তে তৎপর হয় সিবিআই ৷ পরপর দু’দিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকরা সন্দেশখালিতে গিয়েছে ৷ প্রথমদিনে দু’কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে শাহজাহানের সন্দেশখালির বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয় ৷ থ্রি-ডি স্ক্যানার দিয়ে পুরো বাড়ি ও আশপাশে চলে খানা তল্লাশি ৷
এমনকি শেখ শাহজাহানের একাধিক আত্মীয়ের বাড়িতেও তল্লাশি চালায় সিবিআই ৷ দ্বিতীয় দিন শাহজাহানের বাড়ি ও তাঁর নামে থাকা বাজার, অফিসে তল্লাশিও চালানো হয়েছে ৷ ইডির উপর হামলার ঘটনার পুনর্নিমাণ হয়েছে শাহজাহানের বাড়ির সামনে ৷ এই ঘটনার দিন শেখ শাহজাহানের ফোন থেকে তাঁর ঘনিষ্ঠ একাধিক তৃণমূল নেতাকে ফোনও করা হয়েছিল ৷ আর তারপরেই ইডির উপর হামলা চালানো হয় ৷ সিবিআই সূত্রে খবর, পুরো ঘটনা হয়েছিল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার নির্দেশেই ৷
গত 29 ফেব্রুয়ারি শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করেছিল রাজ্যের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি ৷ তারপর তাঁক 10 দিনের হেফাজতে নেয় তারা ৷ কিন্তু, এই সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রক্রিয়া তেমন এগোয়নি বলে অভিযোগ ওঠে ৷ কিন্তু, কয়েকদিনের মধ্যে কলকাতা হাইকোর্ট শেখ শাহজাহানকে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে নির্দেশ দেয় ৷ এমনকি মামলা সংক্রান্ত সব নথি কেন্দ্রীয় সংস্থাকে হস্তান্তর করতে বলা হয় ৷ কিন্তু, সেখানেও বিলম্ব করার অভিযোগ ওঠে রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে ৷
রাজ্যের তরফে এনিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করা হয় হাইকোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে ৷ কিন্তু, শীর্ষ আদালত হাইকোর্টের রায়ে হস্তক্ষেপ করবে না বলে জানিয়ে দেয় ৷ এরপর একপ্রকার বাধ্য হয়েই শেখ শাহজাহানকে সিবিআই আধিকারিদের হাতে তুলে দেয় ভবানী ভবন ৷ আর তারপর থেকেই একের পর এক নয়া তথ্য সিবিআই তদন্তে বেরিয়ে আসে ৷
আরও পড়ুন: