ETV Bharat / state

সন্দেশখালিতে সরকারি পাট্টা দেওয়া জমি বিক্রির অভিযোগের তদন্তে সিবিআই, অভিযুক্ত শাহজাহান ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা - Sandeshkhali CBI Probe - SANDESHKHALI CBI PROBE

Sandeshkhali CBI Probe: সিবিআইয়ের হাতে চঞ্চল্যকর তথ্য ! সন্দেশখালিতে সরকারি পাট্টার জমির চরিত্র বদল করে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ শাহজাহান ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে । তদন্তে সন্দেশখালিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী ব্যুরো।

Sandeshkhali CBI Probe
Sandeshkhali CBI Probe (Reporter)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : May 2, 2024, 7:08 PM IST

সন্দেশখালি, 2 মে: সন্দেশখালিতে জমি দখলের তদন্ত করতে গিয়ে প্রতিদিনই নিত্যনতুন তথ্য উঠে আসছে সিবিআইয়ের হাতে । এবার তাঁদের হাতে উঠে এল আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য । সূত্রের খবর, সরকারি জমির পাট্টার চরিত্র বদল করে, তা বেনামে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাহজাহান ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে । অভিযুক্ত ওই তৃণমূল নেতার নাম মিজানুর রহমান মোল্লা ।

এই নিয়ে প্রশাসনের দরজায় কড়া নেড়েও কোনও সুরাহা মেলেনি বলে অভিযোগ । এমনকি, মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে নালিশ জানানোর পরও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে । শেষমেশ, জমি দখলের সুরাহা পেতে সিবিআইয়ের গড়া পোর্টালে অভিযোগ জানান ডুগরিপাড়ার গ্রামবাসীদের একাংশ ।

সেই অভিযোগের সত‍্যতা যাচাই করতে বৃহস্পতিবার ওই এলাকায় যায় সিবিআইয়ের তদন্তকারী দল । তারা কথা বলে ভুক্তভোগী বেশ কয়েকজন গ্রামবাসীর পরিবারের সঙ্গে । তা লিপিবদ্ধও করা হয় । প্রাথমিকভাবে এই অভিযোগের সত‍্যতা মিলেছে বলেই খবর সিবিআই সূত্রে ।

আদিবাসী অধ‍্যুষিত ডুগরিপাড়ার বাসিন্দাদের একাংশের হাতে জমির পাট্টা তুলে দেওয়া হয়েছিল বাম আমলে । পাট্টা পেলেও সেই সময় জমির দাগ নম্বর হয়নি অধিকাংশ উপভোক্তারই । আবার দাগ নম্বর থাকলেও পাট্টা পাননি অনেকে । এমনই অভিযোগ সেখানকার গ্রামবাসীদের । তা সত্ত্বেও বছরের পর বছর ধরে সরকারের দেওয়া জমিতে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন তাঁরা । কিন্তু, তৃণমূল আমলে সেই সরকারি জমিতেই নজর পড়ে সরবেড়িয়া-আগারহাটি পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য তথা তৃণমূল নেতা মিজানুর রহমান মোল্লার ।

অভিযোগ, সরকারি জমির পাট্টা থেকে আদিবাসীদের উৎখাত করে সেখানে নিজের দখলদারি নেন শাহজাহান ঘনিষ্ঠ এই শাসক নেতা । একের পর এক খাস জমি দখল করে সেখানে প্লট বানিয়ে তা লক্ষ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দেন তিনি । তৃণমূল নেতার নামে সেই সমস্ত অভিযোগই জমা পড়েছিল সিবিআইয়ের গড়া পোর্টালে । অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সিবিআই ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করায় খুশি উপভোক্তাদের একাংশ ।

এই বিষয়ে আনসার মোল্লা নামে এক প্রৌঢ় গ্রামবাসী বলেন, "ফকিরতকিয়া মৌজায় প্রায় 3 একর 9 শতক জমি ছিল আমাদের । এর মধ্যে 66 শতক জমি বাদ দিয়ে বাকিটা পরিবারের । সেই জমিই জলকর করার নামে লিজে নিয়েছিল তৃণমূল নেতা মিজানুর রহমান মোল্লা । কিন্তু, জলকর না করে তিনি সেই জমিতে ছোট ছোট প্লট বানিয়ে বিক্রি করে দেয় । প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অভিযোগ জানালেও আজও ফিরে পায়নি সেই জমি । আশা করছি সিবিআই তদন্ত শুরু করায় এবার জমি ফেরত পাব ।"

একই সুর শোনা গিয়েছে কাবিল মোল্লা নামে আরও এক গ্রামবাসীর গলাতেও । তাঁর কথায়, "বেদখল হয়ে যাওয়া জমিতে একসময় আমার বাবা-দাদুরা চাষবাস করতেন । সেই জমির যাবতীয় রেকর্ড, দলিলপত্র সবকিছুই রয়েছে । তা সত্ত্বেও গায়ের জোরে মানুষের উপর অত‍্যাচার করে একের পর এক জমি কব্জায় নিয়েছেন মিজানুর রহমান । শুধুমাত্র নিজের ক্ষমতাবলে । আমরা চাই, এর একটা সুরাহা হোক । জমির প্রকৃত মালিক তাঁর জমি ফেরত পান । সিবিআইয়ের উপর সেই আস্থা, ভরসা রয়েছে আমাদের ।"

যদিও, নিজের বিরুদ্ধে উঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতা মিজানুর রহমান মোল্লা । তাঁর দাবি, "এর সঙ্গে আমার কোনও যোগ নেই । যে সময় ওঁরা জমির পাট্টা পেয়েছিলেন, সেটা বাম আমল । তখন আমরা ছিলাম না । কী আছে না আছে, সেটা বিএলআরও অফিসই ভালো বলতে পারবে । কেন আমার নাম আসছে বুঝতে পারছি না ।"

আরও পড়ুন:

  1. সন্দেশখালিকাণ্ডে হাইকোর্টে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিল সিবিআই, রাজ্যের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট প্রধান বিচারপতি
  2. কয়েকজনের ব্যক্তিগত স্বার্থরক্ষায় কেন পিটিশন রাজ্যের ? সন্দেশখালি মামলায় বিস্মিত সুপ্রিম কোর্ট
  3. দুর্নীতিতে ডুবে থাকা সন্দেশখালিতে এনএসজি, শাহজাহানের 'কীর্তি'র শেষ কোথায়?

সন্দেশখালি, 2 মে: সন্দেশখালিতে জমি দখলের তদন্ত করতে গিয়ে প্রতিদিনই নিত্যনতুন তথ্য উঠে আসছে সিবিআইয়ের হাতে । এবার তাঁদের হাতে উঠে এল আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য । সূত্রের খবর, সরকারি জমির পাট্টার চরিত্র বদল করে, তা বেনামে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাহজাহান ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে । অভিযুক্ত ওই তৃণমূল নেতার নাম মিজানুর রহমান মোল্লা ।

এই নিয়ে প্রশাসনের দরজায় কড়া নেড়েও কোনও সুরাহা মেলেনি বলে অভিযোগ । এমনকি, মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে নালিশ জানানোর পরও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে । শেষমেশ, জমি দখলের সুরাহা পেতে সিবিআইয়ের গড়া পোর্টালে অভিযোগ জানান ডুগরিপাড়ার গ্রামবাসীদের একাংশ ।

সেই অভিযোগের সত‍্যতা যাচাই করতে বৃহস্পতিবার ওই এলাকায় যায় সিবিআইয়ের তদন্তকারী দল । তারা কথা বলে ভুক্তভোগী বেশ কয়েকজন গ্রামবাসীর পরিবারের সঙ্গে । তা লিপিবদ্ধও করা হয় । প্রাথমিকভাবে এই অভিযোগের সত‍্যতা মিলেছে বলেই খবর সিবিআই সূত্রে ।

আদিবাসী অধ‍্যুষিত ডুগরিপাড়ার বাসিন্দাদের একাংশের হাতে জমির পাট্টা তুলে দেওয়া হয়েছিল বাম আমলে । পাট্টা পেলেও সেই সময় জমির দাগ নম্বর হয়নি অধিকাংশ উপভোক্তারই । আবার দাগ নম্বর থাকলেও পাট্টা পাননি অনেকে । এমনই অভিযোগ সেখানকার গ্রামবাসীদের । তা সত্ত্বেও বছরের পর বছর ধরে সরকারের দেওয়া জমিতে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন তাঁরা । কিন্তু, তৃণমূল আমলে সেই সরকারি জমিতেই নজর পড়ে সরবেড়িয়া-আগারহাটি পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য তথা তৃণমূল নেতা মিজানুর রহমান মোল্লার ।

অভিযোগ, সরকারি জমির পাট্টা থেকে আদিবাসীদের উৎখাত করে সেখানে নিজের দখলদারি নেন শাহজাহান ঘনিষ্ঠ এই শাসক নেতা । একের পর এক খাস জমি দখল করে সেখানে প্লট বানিয়ে তা লক্ষ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দেন তিনি । তৃণমূল নেতার নামে সেই সমস্ত অভিযোগই জমা পড়েছিল সিবিআইয়ের গড়া পোর্টালে । অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সিবিআই ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করায় খুশি উপভোক্তাদের একাংশ ।

এই বিষয়ে আনসার মোল্লা নামে এক প্রৌঢ় গ্রামবাসী বলেন, "ফকিরতকিয়া মৌজায় প্রায় 3 একর 9 শতক জমি ছিল আমাদের । এর মধ্যে 66 শতক জমি বাদ দিয়ে বাকিটা পরিবারের । সেই জমিই জলকর করার নামে লিজে নিয়েছিল তৃণমূল নেতা মিজানুর রহমান মোল্লা । কিন্তু, জলকর না করে তিনি সেই জমিতে ছোট ছোট প্লট বানিয়ে বিক্রি করে দেয় । প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অভিযোগ জানালেও আজও ফিরে পায়নি সেই জমি । আশা করছি সিবিআই তদন্ত শুরু করায় এবার জমি ফেরত পাব ।"

একই সুর শোনা গিয়েছে কাবিল মোল্লা নামে আরও এক গ্রামবাসীর গলাতেও । তাঁর কথায়, "বেদখল হয়ে যাওয়া জমিতে একসময় আমার বাবা-দাদুরা চাষবাস করতেন । সেই জমির যাবতীয় রেকর্ড, দলিলপত্র সবকিছুই রয়েছে । তা সত্ত্বেও গায়ের জোরে মানুষের উপর অত‍্যাচার করে একের পর এক জমি কব্জায় নিয়েছেন মিজানুর রহমান । শুধুমাত্র নিজের ক্ষমতাবলে । আমরা চাই, এর একটা সুরাহা হোক । জমির প্রকৃত মালিক তাঁর জমি ফেরত পান । সিবিআইয়ের উপর সেই আস্থা, ভরসা রয়েছে আমাদের ।"

যদিও, নিজের বিরুদ্ধে উঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতা মিজানুর রহমান মোল্লা । তাঁর দাবি, "এর সঙ্গে আমার কোনও যোগ নেই । যে সময় ওঁরা জমির পাট্টা পেয়েছিলেন, সেটা বাম আমল । তখন আমরা ছিলাম না । কী আছে না আছে, সেটা বিএলআরও অফিসই ভালো বলতে পারবে । কেন আমার নাম আসছে বুঝতে পারছি না ।"

আরও পড়ুন:

  1. সন্দেশখালিকাণ্ডে হাইকোর্টে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিল সিবিআই, রাজ্যের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট প্রধান বিচারপতি
  2. কয়েকজনের ব্যক্তিগত স্বার্থরক্ষায় কেন পিটিশন রাজ্যের ? সন্দেশখালি মামলায় বিস্মিত সুপ্রিম কোর্ট
  3. দুর্নীতিতে ডুবে থাকা সন্দেশখালিতে এনএসজি, শাহজাহানের 'কীর্তি'র শেষ কোথায়?
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.