কলকাতা, 16 এপ্রিল: প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট সিবিআইয়ের । চাকরি দেওয়ার নাম করে বানানো হয়েছিল একাধিক ভুয়ো ওয়েবসাইট । কোটি কোটি টাকা তোলা হয়েছে সেই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে । অযোগ্য, অকৃতকার্য প্রার্থীদের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে তাদের নিয়োগ করা হয়েছে । এমনকী 2014 সালের টেট পরীক্ষায় পাশ করতে পারেননি, পরীক্ষায় সাদা খাতা জমা দিয়ে এসে বেআইনিভাবে চাকরি করছেন, এমন প্রার্থীর কথাও উল্লেখ রয়েছে সিবিআইয়ের রিপোর্টে । প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ নামে অতিরিক্ত প্যানেল তৈরি করেও অযোগ্য প্রার্থীদের জায়গা দিয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে সিবিআই রিপোর্টে ৷
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলার সিবিআই রিপোর্ট:
- টাকার বিনিময়ে অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরি ৷
- কুন্তল ঘোষ ও তাপস মণ্ডল মিলে আঁতাত তৈরি ৷
- 6 বছরে (2016-2022) 141 জন প্রার্থীর কাছ থেকে প্রায় 4 কোটি 13 লক্ষ টাকা সংগ্রহ ৷
- এজেন্টদের মাধ্যমে টাকা তোলা হয় ৷
- কুন্তল ঘোষ 3 কেটি 13 লক্ষ টাকা তুলেছিলেন চাকরি দেওয়ার নাম করে ৷
- প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নামে ভুয়ো ওয়েবসাইট তৈরি ৷
এদিন কলকাতা হাইকোর্টে জমা দেওয়া সিবিআই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় কুন্তল ঘোষ ও তাপস মণ্ডলের নাম ৷ এই দুই তৃণমূল নেতার আঁতাতে মোটা অঙ্কের টাকা তোলা হয়েছিল ৷ রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, 2016 সাল থেকে 2022 সাল পর্যন্ত 141 জন প্রার্থীর কাছ থেকে প্রায় 4 কোটি 13 লক্ষ টাকা তুলেছে ৷ এই কাজের জন্য একাধিক এজেন্টকে যুক্ত করা হয়েছে টাকা তোলার জন্য ৷ এজেন্টদের মাধ্যমে চাকরি প্রার্থীদের থেকে তোলা টাকা পৌঁছয় কুন্তল ঘোষের কাছে ৷ তৎকালীন হুগলির যুব নেতা নিজেও 3 কেটি 13 লক্ষ টাকা তুলেছিলেন চাকরি দেওয়ার নাম করে ৷ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নামে একাধিক ওয়েবসাইট বানিয়েছিলেন তিনি ৷
সিবিবিআই রিপোর্টেই জানা গিয়েছে, যে সমস্ত প্রার্থীরা 2015 সালের টেট (প্রাইমারি টিচার এলিজিবিটি টেস্ট) পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছিলেন তাঁদেরকে কৃতকার্য দেখানো হয়েছে । 42 হাজারের বেশি নিয়োগ হয়েছিল । এই নিয়োগে 752 জন প্রার্থীর ফল প্রকাশ না করে আটকে রাখা হয়েছিল ইছাকৃতভাবে । পরে দেখা যায় এই 752 জনই ভুয়ো প্রার্থী । তাদের মধ্যে থেকে 300 জনের বেশি প্রার্থীকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছিল । পাশপাশি, 2015 সালের ওএমআর প্রস্তুতকারী সংস্থা এস বসুরায় এণ্ড কোম্পানি কোনও নির্দেশ ছাড়াই প্রার্থীদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি এবং ওএময়ার শিট নষ্ট করে দেয় । উল্লেখ্য, 2014 সালের নিয়োগ নিয়ে গত সপ্তাহে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। এমনকী প্রয়োজনে 42 হাজার প্রার্থীর নিয়োগ বাতিল করা হতে পারে বলেও জানান তিনি । তিনি সিবিআইয়ের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, এখন পর্যন্ত তারা কী তদন্ত করেছে তা জানাতে। সেই রিপোর্টই আজ পেশ করল সিবিআই ৷
আরও পড়ুন